কালেরকন্ঠ : একাদশ জাতীয় নির্বাচনের ভোটগ্রহণ নিয়ে মন্তব্য করে ক্ষমতাসীনদের তোপের মুখে পড়েছেন ১৪ দলের শরিক ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠায় আপাতত কয়েক দিন আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কোনো অনুষ্ঠানে না যেতে মেননকে পরামর্শ দিয়েছেন আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতারা। গতকাল সোমবার রাতে ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিমের ধানমণ্ডির বাসভবনে জোটটির শরিক দলগুলোর নেতাদের এক চা চক্র এমন পরামর্শ দেওয়া হয়। ১৪ দলের শরিক একাধিক দলের নেতারা কালের কণ্ঠকে এমনটা জানিয়েছেন।

সূত্রগুলো জানায়, সম্প্রতি ১৪ দলের শরিকদের মধ্যে নানা ইস্যুতে বিরোধ চাঙ্গা হয়ে উঠেছে। শরিকদের নানা কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে এ বিরোধ প্রকাশ্যেও আসছে। গতকাল মোহাম্মদ নাসিমের বাসায় চা চক্রে ১৪ দলের সব শরিককে দাওয়াত দেওয়া হলেও বাংলাদেশ জাসদ ও ন্যাপের নেতারা সেখানে যাননি। চা চক্রে উপস্থিত ছিলেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার, ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া, জাতীয় পার্টি-জেপির মহাসচিব শেখ শহীদুল ইসলাম, তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী, বাসদের আহ্বায়ক রেজাউর রশীদ খান প্রমুখ। অনুপস্থিত ছিলেন রাশেদ খান মেনন।

চা চক্রে দেশের সাম্প্রতিক নানা ইস্যু আলোচনায় আসে। এ সময় নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী সম্প্রতি বরিশালে রাশেদ খান মেননের একাদশ জাতীয় নির্বাচনে কোনো ভোট হয়নি বলে দেওয়া বক্তব্যের তীব্র সমালোচনা করেন। তিনি মেননকে ডেকে তাঁর কাছ থেকে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা চাওয়ার দাবি জানান।

জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘উনি (মেনন) সমস্যা তৈরি করেছেন, এটা উনিই সমাধান করবেন। এটা নিয়ে উনার উপস্থিতিতে আলোচনা হলে ভালো হয়।’

১৪ দলের শরিক একটি দলের শীর্ষ নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, চা চক্রে আজ (মঙ্গলবার) সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের মিলনায়তনে ১৪ দলের আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর প্রসঙ্গে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া গোলটেবিল বৈঠকের বিষয়েও আলোচনা হয়। এরই একপর্যায়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আপাতত কয়েক দিন মেনন ভাইয়ের ওই দিকে যাওয়ার দরকার নেই। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে উনি যাবেন। চা চক্রে উপস্থিত অন্য নেতারাও এ বক্তব্যকে সমর্থন করেন। ফলে ১৪ দলের গোলটেবিল আলোচনায় রাশেদ খান মেনন উপস্থিত থাকছেন না।

চা চক্রে আলোচনায় চলতি সপ্তাহেই ১৪ দলের একটি আনুষ্ঠানিক বৈঠক ডেকে সেখানে রাশেদ খান মেননের একাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে দেওয়া বক্তব্যের ব্যাখ্যা চাওয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।