মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

এদেশে শতকরা প্রায় ৯০% ভাগ মানুষ ইসলাম ধর্মের অনুসারী। সুতরাং নবী হজরত মোহাম্মদ (স.) আমাদের নবী। পবিত্র কোরআন আমাদের, হাদীস আমাদের। আমরা সবাই একই ধর্মের বিশ্বাসী ও অনুসারী। কেউ এসব নিয়ে প্রকৃতপক্ষে কুৎসা রটনা করে, ব্যঙ্গ করে, তাহলে আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ করবো। সে প্রতিবাদে আমরা নিজেরাও শামিল হবো। কিন্তু কেউ যদি অহেতুক ধর্মীয় বিষয় নিয়ে গুজব ছড়ায়, মিথ্যা রটনা করে, সাম্প্রদায়িক উস্কানী দিয়ে সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করে, তাহলে সেক্ষেত্রে তা কর্ণপাত নাকরার জন্য ওলামা মশায়েখদের অগ্রণী ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ আমাদের দেশের ধর্মপ্রিয় সহজ সরল মানুষেরা ওলামা মশায়েখদের প্রতি দৃঢ় আস্থাশীল ও তাদের অনুসরণ করে।

মঙ্গলবার ২২ অক্টোবর কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন কক্সবাজার জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত বিশিষ্ট উলামা মাশায়েখগণের সাথে এক মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে এ আহবান জানান। জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সিএসপি সম্মেলন কক্ষে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেন বলেন-দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সহিংসতা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড ইসলাম যেমন সমর্থন করেনা, রাষ্ট্রও সেটা সমর্থন করেনা। ইসলাম ও রাষ্ট্রের নীতি অভিন্ন। রাষ্ট্র কোরআন ও ইসলামকে অনুসরণ করে। তিনি বলেন, আগামী বুধবার ও বৃহস্পতিবার, ২৩ ও ২৪ অক্টোবর সকল উপজেলায়, ইউনিয়ন, ওয়ার্ডে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, মেম্বারদের মাধ্যমে গত রোববার ভোলা জেলার বোরহান উদ্দিন উপজেলায় যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সংগঠিত হয়েছে, তার ভিডিও ক্লিপ দেখানো হবে। সেখানে সর্বস্থরের ওলামা মশায়েখদের সহযোগিতা করার জন্য জেলা প্রশাসক ওলামা মশায়েখদের প্রতি অনুরোধ জানান।

সভায় পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গুজব, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার মতো পোস্ট, কমেন্ট, লাইক, শেয়ার থেকে বিরত থাকার জন্য সবার প্রতি অনুরোধ জানান। তিনি বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ইতিবাচক কর্মকান্ডে ব্যবহার করতে হবে।

জেলা কমিউনিটি পুলিশিং এর নব নির্বাচিত সভাপতি, সিনিয়র সাংবাদিক তোফায়েল আহমদ বলেন, কক্সবাজার অন্যান্য জেলার চেয়ে ব্যতিক্রমী একটি জেলা। এখানে প্রায় ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা শরনার্থীর বসবাস। অনেক দেশী বিদেশী সংস্থা কাজ করছে। এখানে বাস্তবায়নাধীন অনেক মেগা উন্নয়ন প্রকল্পে রয়েছে বিদেশিরা। সেখানে ধর্মীয় আস্থাশীলতার প্রতি বিরূপ মনোভাব পোষণ করার মতো লোকজনও থাকতে পারে। তারা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট হওয়ার মতো পরিস্থিতিকে লুপে নেবে। বিদেশীরা মেগা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ছেড়ে হয়ত চলে যাবে। তাই ধর্মীয় ও সামাজিক স্থিতিশীলতা নষ্ট হওয়ার মতো কোন কাজ, কোন অবস্থাতেই করা যাবেনা। এ ব্যাপারে আমরা সকলকে সজাগ থাকতে হবে।

উক্ত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে কক্সবাজার-২ আসনের এমপি আশেক উল্লাহ রফিক, জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি এডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান, এডিএম মোহাঃ শাজাহান আলি, এডিসি (সা.) মোহাম্মদ মাসুদুর রহমান মোল্লা, ইসলামি ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা ফাহমিদা আক্তার, মুক্তিযুদ্ধা মোহাম্মদ শাহজাহান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত ওলামা মশায়েখদের মধ্যে মুফতি মাওলানা কেফায়েত উল্লাহ শফিক, হাফেজ মাওলানা আবদুল হক, মাওলানা আবদুল খালেক, হাফেজ মাওলানা ছালামত উল্লাহ, মাওলানা ইয়াসিন হাবিব প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। মতবিনিময় সভা শেষে কক্সবাজার, দেশ ও জাতির কল্যান কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।