ইমাম খাইর, কক্সবাজার
আগামী বছরের জানুয়ারী মাসের মধ্যেই কক্সবাজার শহরের অভ্যন্তরীণ সড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কউক)-এর চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমদ।
তিনি বলেন, সড়কের দুই পাশে অবৈধ দখল, অতিরিক্ত যানবাহনের কারণে যানজট লেগেই আছে। সড়ক প্রশস্ত করা হলে মানুষের দুর্ভোগ কমে আসবে। এ জন্য সবার আন্তরিক সহযোগিতা দরকার।
১৮ অক্টোবর কক্সবাজার ফয়ারসার্ভিস জামে মসজিদে পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী জুমার নামাজের পূর্বে মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে কউক চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
কর্ণেল ফোরকান বলেন, উভয়পাশে ৫০ ফিট করে ১০০ ফিট রাস্তা করার নিয়ম। তবু আমরা ৫০ ফিট করব। মানুষের স্বার্থে আঘাত হয় এমন কাজ করব না।
মসজিদ, মন্দির ইত্যাদি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান অক্ষুণ্ন রেখেই সড়কের সংস্কার করা হবে। তবু কেউনা কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাদেরকে জনস্বার্থে আত্মত্যাগের মানসিকতা থাকতে হবে। এই সড়কের কাজ শেষ হলে অন্তত ১০ বছরের মধ্যে আর হাত দিতে হবেনা বলে মন্তব্য করেন কউক চেয়ারম্যান।
তার মতে, রাজনৈতিক বিবেচনা না করলে অনেক উন্নয়ন সম্ভব। আমি কাজ করতে এসেছি। সবাইকে সাথে নিয়ে কাজ করতে চাই।
চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর দেখলাম, কেউ ১ ইঞ্চি জায়গা ছাড়তে চায় না। সবাই স্বার্থের কাছে অন্ধ। পরিবর্তনের জন্য কিছু না কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। ভালো কাজে সবার অংশগ্রহণ চাই।
কক্সবাজার শহরকে ঢেলে সাজানো ততটা সহজতর নয় জানিয়ে অবসরপ্রাপ্ত এই সেনাকর্মকর্তা বলেন, শহরের চারিদিকে যানজট। রাস্তার উপর দোকান বসিয়ে যে যার মতো টাকা কামাই করছে। সঠিকভাবে হাঁটাচলা যায় না। কক্সবাজার শহরের অনেক উন্নয়ন দরকার। উন্নয়নের আগে জনগণের মনমানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।
নিজের কর্মকা-ের চিত্র তুলে ধরে মুসল্লিদের লক্ষ্য করে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান বলেন, আমাদের কাঁধে দায়িত্ব থাকলেও ক্ষমতা নেই। তবু সাধ্যমতো কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। গত ২ বছরে অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প হাতে নিয়েছি। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কাজ দৃশ্যমান হয়েছে। আরো অনেক কাজ বাকি। সে জন্য দলমত নির্বিশেষে সবার পরামর্শ ও সহযোগিতা দরকার।
তিনি বলেন, পার্সেন্টেজ নেয়ার সিস্টেম অন্তত আমি থাকতে চলবে না। কউকের কাজের বেলায় কোন অনিয়ম-দুর্নীতির সুযোগ নাই।
দখলদারদের হুঁশিয়ারি দিয়ে কউক চেয়ারম্যান বলেন, যারা যে পরিমাণ জায়গা দখল করে নিয়েছেন, দোকান বসিয়েছেন, মার্কেট করেছেন, তা ধরার আগেই বের করে দেন। সরকারি জায়গা কারো দখলে থাকতে দেয়া হবেনা। আমরা ধরলে কিন্তু ছাড়িনা।
তিনি এও বলেন, ব্যক্তি মালিকানাধীন জায়গার কাগজপত্র যাচাই করে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে। কারো ক্ষতি করা হবে না। তবে, সরকারী জায়গা ছাড়া ব্যক্তি মালিকানার জায়গা নেয়ার চিন্তা আমাদের নেই।
ইসলামের দিকনির্দেশনার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে কউক চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমেদ বলেন, আমাদের সমাজে ভালো মানুষ বেশি। কিন্তু সবাই ভালো কাজে এগিয়ে আসে না। ভালো মানুষগুলো দুর্বল হয়ে থাকে। সবাইকে নীতিনৈতিকতায় বলিয়ান হতে হবে। তাহলে সমাজে ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠিত করা যাবে।
জুমার নামাজ শেষে মসজিদের ওযুখানা পরিদর্শন করেন কউক চেয়ারম্যান। এ সময় মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ডা. মোহাম্মদ আমিন, খতীব মাওলানা অহিদুল আলম, সাবেক পৌর কমিশনার আবু জাফর ছিদ্দিকী, সাংবাদিক ইমাম খাইর, ব্যবসায়ী হাবিবুল ইসলাম হাবীবসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
শেষে চেয়ারম্যান লে. কর্ণেল (অব.) ফোরকান আহমেদকে শুভেচ্ছা উপহার তুলে দেন মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব ডা. মোহাম্মদ আমিন।