ডেস্ক নিউজ:
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) নিহত শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘এ ঘটনায় কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। দোষী যে দলেরই হোক তার সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে।’ সোমবার (১৪ অক্টোবর) আবরারের বাবা-মা ও ছোট ভাই গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে গেলে এসব কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর প্রেস উইং সূত্রে এ তথ্য জানা যায়।
সূত্র জানায়, বিকাল পাঁচটার একটু পরে আবরার ফাহাদের বাবা বরকত উল্লাহ, মা রোকেয়া বেগম ও ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ গণভবনে যান। এ সময় তাদের সান্ত্বনা দেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী আবরারের পরিবারের উদ্দেশে বলেন, ‘অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় যাই হোক না কেন, সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। কোনও সান্ত্বনাই আপনাদের যন্ত্রণা প্রশমন করতে পারবে না। কিন্তু সরকার এজন্য ত্বরিত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। খুনিদের গ্রেফতার করেছে। দ্রুত তাদের বিচার শুরু হবে।’

প্রধানমন্ত্রী আবরারের পরিবারকে জানান, এ হত্যার বিচার দ্রুত শেষ করতে ইতোমধ্যে আইনমন্ত্রীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ সময় আবরারের মা রোকেয়া খাতুন প্রধানমন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনি মায়ের আসনে থেকে ঘটনার পর হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে যে কঠোর ভূমিকা নিয়েছেন সেজন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার নেই।’ পরে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
সাক্ষাতের শুরুতে আবরারের মাকে জড়িয়ে ধরেন প্রধানমন্ত্রী

গণভবনে সাক্ষাতের শুরুতে আবরারের মাকে জড়িয়ে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। আমি দেখতে চাইনি কে কার লোক। অপরাধী কে বা কোন দল করে সেটা বিবেচনা করিনি।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘ওই সময় কিছু শিক্ষার্থী ভিডিও ফুটেজ আটকানোর চেষ্টা করেছে। সেটা তারা কেন করেছে তা এখনও আমার বোধগম্য নয়। তা না হলে হয়তো সব অপরাধী আরও আগেই গ্রেফতার হতো।’
তিনি আবরারের মায়ের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনাকে সান্ত্বনা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই। শুধু বলবো আমাকে দেখেন। স্বজন হারানোর বেদনা আমি বুঝি। আমিও এক রাতে সব হারিয়েছিলাম। আমি তখন বিচারও পাইনি।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউর রহমান।

উল্লেখ্য, গত ৬ অক্টোবর রাতে শেরেবাংলা হলের ১০১১ নম্বর কক্ষ থেকে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বুয়েটের ১৭তম ব্যাচের ইলেকট্রিক অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বীকে। রাত তিনটার দিকে হলের দ্বিতীয় তলা থেকে আবরারের মরদেহ উদ্ধার করে কর্তৃপক্ষ। পুলিশ জানিয়েছে, তাকে পিটিয়ে হত্যার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় একাধিক ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যায়। আবরারকে হত্যার ঘটনায় তার বাবা বরকত উল্লাহ বাদী হয়ে মামলা করেন। মামলায় ১৯ জনকে আসামি করা হয়েছে। পরে হত্যায় সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে বুয়েট ছাত্রলীগের ১৩ নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।