নির্দেশনা মতো কাজ শুরু করেছি : মামুন

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের পূর্ব রত্নাপালং বড়ুয়াপাড়া গত ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে সংগঠিত হওয়া চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডার হত্যাকান্ডের মামলা পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন) কে হস্তান্তর করার পর ইন্সপেক্টর (পরিদর্শক) পুলক বড়ুয়াকে আই নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পুলক বড়ুয়া হচ্ছেন এ চাঞ্চল্যকর মামলার ৩ নম্বর তদন্তকারী কর্মকর্তা (আইও)। মামলাটি কক্সবাজার জেলা পুলিশে তত্বাবধানে থাকাবস্থায় প্রথমে উখিয়া থানার এসআই কে, পরে একই থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম মজুমদারকে আইও নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।

এই ফোর মার্ডার মামলার অগ্রগতি বিষয়ে কক্সবাজার পিবিআই এর অফিস প্রধান অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মামুন সিবিএন-কে জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মতো মামলাটির প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে কাজ শুরু করেছি। পেশাদারিত্বের সাথে দায়িত্বপ্রাপ্তরা কাজ শুরু করেছেন। আশা করছি দ্রুততম সময়ে মামলাটির বিষয়ে একটা ইতিবাচক ফলাফল দিতে পারবো ইনশাল্লাহ।

মামলাটির নতুন আইও পিবিআই এর ইন্সপেক্টর পুলক বড়ুয়া সিবিএন-কে জানান, অফিসিয়ালি ফাইলপত্র, সকল ডকুমেন্টস যাচাই বাছাই করছি। খুন সংগঠিত হওয়ার পর থেকে আমরা সেখানে কাজ করছি। পিআইবি নিবিড় তদন্ত শুরু করেছে। তিনি বলেন, এ মামলায় অযথা কাউকে হয়রানি করা হবেনা। রক্তের চাপ, ফিঙ্গারপ্রিন্ট, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট, সুরতহাল রিপোর্ট, ক্রাইম ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) হতে ফরেনসিক প্রসেস ও ডিএনএ প্রোফাইলিং রিপোর্ট পর্যালোচনা করে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। আইও পুলক বড়ুয়া এ বিষয়ে সকলকে একটু ধৈর্য ধরার জন্য অনুরোধ করেন।
প্রসংগত, উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের পূর্ব রত্নাপালং বড়ুয়া পাড়ায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ৪ জনকে জবাই করে হত্যার ঘটনায় ২ জনকে কক্সবাজার জেলা পুলিশ গ্রেফতার করে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলো-শিপু বড়ুয়ার স্ত্রী রিপু বড়ুয়া (২৮) ও অপরজন হলো রোমেল বড়ুয়ার পুত্র উজ্জ্বল বড়ুয়া (২৪)।
গ্রেপ্তারকৃত ২ জনই রোকেন বড়ুয়ার নিকটাত্মীয়। তারমধ্যে, রিপু বড়ুয়া হচ্ছে-প্রবাসী স্বজনহারা রোকেন বড়ুয়ার সেজ ভাই শিপু বড়ুয়ার স্ত্রী এবং ফোর মার্ডারে নিহত সনী বড়ুয়ার (৬) মা। অপর আসামি হলো রোকেন বড়ুয়ার ভাগ্নি জামাই উজ্জ্বল বড়ুয়া। উজ্জ্বল বড়ুয়ার বাড়ি রামু উপজেলার রাজারকুল ইউনিয়নের রামকোট এলাকায় অবস্থিত। উজ্জ্বল বড়ুয়াকে গত মঙ্গলবার ৮ অক্টোবর দিবাগত রাত সাড়ে ১০ টার দিকে তার শ্বশুরবাড়ি উখিয়া উপজেলার কুতুপালং থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। একই সময়ে রিপু বড়ুয়াকে তার স্বামীর বাড়ি পূর্ব রত্নাপালং এর বড়ুয়া পাড়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের পূর্ব রত্নাপালং বড়ুয়া পাড়ায় প্রবাসী রোকেন বড়ুয়ার বাড়ীতে গত ২৫ সেপ্টেম্বর বুধবার দিবাগত রাত্রে রোকন বড়ুয়ার মা সুখী বালা বড়ুয়া (৬৫), সহধর্মিণী মিলা বড়ুয়া (২৫), একমাত্র পুত্র রবিন বড়ুয়া (৫) ও ভাইজি সনি বড়ুয়া (৬)কে কে বা কারা জবাই করে হত্যা করে। এরমধ্যে, নিহত রবিন বড়ুয়া রুমখা সয়েরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাক প্রাথমিক শ্রেণির ছাত্র এবং সনি বড়ুয়া একই স্কুলের প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিলো।

এবিষয়ে ২৬ সেপ্টেম্বর উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নম্বর ৪৭/২০১৯, যার জিআর মামলা নম্বর : ৪৭৮/২০১৯ (উখিয়া) ধারা : ফৌজদারি দন্ড বিধি : ৩০২ ও ৩৪। মামলায় নিহত মিলা বড়ুয়ার পিতা ও রোকেন বড়ুয়ার শ্বশুর শশাংক বড়ুয়া বাদী হয়েছেন। মামলার এজাহারে সুনির্দিষ্ট কাউকে আসামী করা হয়নি, আসামী অজ্ঞাত হিসাবে এজাহারে উল্লেখ রয়েছে।