ছবি সংগৃহীত

জানি

আকাশ হতে পড়বে না কোনো রাণী,

রাজ্য বা তোমায় পাবার মূলধন।

তবু শূন্যের সাথে পরিণয়,

শৈর্যে বীর্যে বেঁচে থাকার অভিনয়।

রোজ কিছু পরিবর্তন-

এই যেমন, আরো একটা কবিতা বা গদ্য রচনা,

মুহুর্মুহু আনমনা, মনে মস্তিষ্কে সত্যের আনাগোনা।

কী মানে এসবের?

শুধু শুধু গড়মিল হয় ছোট্ট এ জীবনের।

এর চেয়ে ভালো খাদ্য ভালো,

এই যেমন, বলি পাঠার মাংস ভালো,

এর চেয়ে কলরব আর কোলাহল ভালো,

এর চেয়ে আগন্তুকের সাথে একটু প্রেম ভালো।

এভাবে রোজ কিছু পরিবর্তন-

এই যেমন, পাতায়া সী বিচ বা লুভর মিউজিয়াম দর্শন,

বলতে পারো এক জীবনে মানুষের হয় কতবার বিবর্তন?

রাজনীতিক বা ব্যবসায়ী, কাকে তোমরা বলবা কবি,

জানো কি কে কবে বদলে ফেলেছে তার জীবনের ছবি?

বলি না এসব-

বিচারক তুমি ধূর্ত, ঘুষখোর, একরোখা, গোয়ার,

রাজনীতিক তুমি চোর বাটপাড়,

শিক্ষক তুমি এদেশে ভিন্ন আরেক প্রকার।

মোল্লা, মৌলবি পুরোহিত তোমরা জানি

ওদেরই উচ্ছিষ্টের ভাগিদার।

বলি না কেন জানেন?

লেখক, এরাও ঠিক অংশিদার।

আশ্রিত-অনুনয়-বিনয়, কারণ,

এসব লেখকেরা পেতে চায় কিছু পুরস্কার।

বলি না, কারণ, কেউ নেই কোথাও এমন

ঠিক যেমন এখন প্রয়োজন।

একা একা হেঁটে যাই

কেবল হাঁটতে শেখা ক্লান্ত শিশুর মতো,

কিছুক্ষণ পরে ধপাস!

মানুষেরা কেউ দেখেনি, দেখবেও না,

এ পথে কোনো মানুষের নেই আর চলাচল,

একটা দুবৃত্ত ছুটে আসে মানুষের মতো ঠিক অবিকল।

অট্টহাসি হেসে টেনে তোলে ও আমায়,

ফোঁস ফোঁস না কওে এখন ফিসফিস করে,

দেখে শত্রুর এমন দিগ্বিদিক পরাজয়।

আবার ধপাস! ধপাস! ধপাস!

কেউ না কেউ ওরা আসে প্রতিবার,

টেনে তোলে মুহুর্মুহু অহমিকায় বারবার।

কখনো আসে মজা পেতে স্বামী-স্ত্রী যুগলে,

ওরাই নাকি এভাবে আমাদের রাখে আগলে!

তবু এদেশ আমার,

কেউ কি তবু নেই কোথাও

যারা আমার মতো এমন পড়ছে ধপাস?

নাকি এ দেশে হয় এখন শুধু অমানুষের চাষবাস।

অশান্তিরা

চাপা পড়ে থাকে প্রতিজ্ঞায়,

প্রতিশ্রুতিগুলো নিজেকে আড়াল করে

অক্ষমতায়।

এ নষ্ট দিনে আমারও কিছু বিলাপ আছে-

বিপন্ন হয় নদীর ধারে,

পুরনো কড়ই গাছে

বাসা বাঁধা মৌমাছীদের সাথে।

পথ বেয়ে চলে যাই ঘুমহীন চোখে

মুয়াজ্জিনের পিছে পিছে-

আমারও কিছু ধর্ম আছে,

চিল আর ডাহুকের মতো,

আমারও কিছু ধর্ম আছে-

যেমন, জোর পায়ে হেঁটে যাচ্ছে মা কাজে,

পিছে ঘ্যান ঘ্যান করছে

নাগাল না পেয়ে ক্ষুধার্ত শিশু,

ফিরে এসে খেলে, হাসে খিলখিল করে,

মা-ও হাসে মনিবের শিশু কোলে কৃত্রিম ফুর্তিতে।

আমার কিছু ধর্ম আছে এমন, এর চেয়ে ভীষণ।

উড়িয়ে দিয়ে দেখো

জীবন কতটা সুন্দর!

এক অপার্থিব অনুভূতি-

অন্য এক শৌর্যের পৃথিবী।

মদে নেই এত বেশি মাদকতা,

নেই তোমাতে,

যতটা উদাসীন এ অনুভূতিতে!

যখন তুমি জেনে যাবে

কতটা মূল্যহীন মূল্যবান এসব,

এ জীবন যেন এক আজন্ম শৈশব।

হাসতে পারো,

অহেতুক কিছু কাঁদতেও পারো।

সবই সুখের, দুঃখগুলোও বোকা বোকা

মাঝে মাঝে ওরাও হাসতে জানে,

সবই একই-

কখনো আমি রাজপ্রাসাদে, কখনো বনে।

 

দিব্যেন্দু দ্বীপ

০১৮৪ ৬৯ ৭৩২৩২