আবদুল্লাহ নয়ন:

অগ্নিকান্ডের ২৩ দিন পার হয়েছে। তারপরও কেউ এগিয়ে আসেনি ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্যার্থে। ঘর নেই, নেই খাবার। সব কিছু পুড়ে ছাই হওয়া পরিবার গুলো এখনো বুঝে উঠতে পারছেনা ‘কি হবে তাদের? জনপ্রতিনিধিরা আশার বাণী শুনিয়ে সেই যে গিয়েছিল-ভালবাসা নিয়ে তারা আর ফিরেনি। ফলে হতাশা আর দুশ্চিন্তায় নিমজ্জিত পরিবার গুলো। তবে এরই মাঝে আশা-ভালবাসা ছড়িয়ে দিয়েছে কক্সবাজারের কয়েকজন যুবক।

ইংরেজি ভাষা শিখার অনন্য প্রতিষ্ঠান ইংলিশ কর্ণারের ব্যানারে তারা মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) গৃহস্থালির সরঞ্জাম নিয়ে পাশে দাঁড়ায় ওই সব ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের।

জানা যায়, গত ১৫ সেপ্টেম্বর সকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টা। সবাই যখন নিজেদের কাজে ব্যস্ত ঠিক তখনই পুড়ে ছাই হয়ে যায় একটি কলোনীর ৯টি পরিবারের স্বপ্ন। কক্সবাজার শহরের ৭নং ওয়ার্ডস্থ তারাবনিয়াছড়ার কবরস্থান রোড সংলগ্ন এলাকায় আকস্মিক এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছিল। কেউ কিছু বুঝে উঠার আগেই ৯পরিবারেই সব কিছু পুড়ে যায়। ঘর থেকে কেউ কিছুই বের করতে পারেনি। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে ততক্ষণে সব শেষ।

ক্ষতিগ্রস্থ অভিযোগ করেন, অগ্নিকান্ডের ২৩ দিন পার হলেও প্রশাসন কিংবা জনপ্রতিনিধিদের কেউ তাদের পাশে দাঁড়ায়নি। তবে স্থানীয়রা দেড় হাজার করে টাকা ও একদিন খাবার প্রদান করেছিলেন।

ক্ষতিগ্রস্থ কাজল মলি­ক (৪৮) জানান, দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে গড়া সংসার-স্বপ্ন সব পুড়ে ছাই। ঘটনার দিন গায়ে যে পোশাকটি ছিল-সেটি ছাড়া আর কিছুই নেই। অনেকে পরিদর্শন করে গেছেন। আশার বাণী শুনেছি। তবে কেউ এগিয়ে আসেনি। ঘর পোড়া কয়লাসহ ভিটাটি এখনো শুন্যই পড়ে আছে।

এদিকে মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) ইংলিশ কর্ণারের ব্যানারে একদল যুবকে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার গুলো পাশে দাঁড়ায়। ক্ষতিগ্রস্থ ৭ পরিবারের প্রত্যেককে গ্যাসসহ সিলিন্ডার, গ্যাস স্টোভ, কলসি, বালতি, জগ, মগ, বদনা, গøাস, শার্ট, টি-শার্ট ও গৃহস্থালির অন্যান্য সামগ্রী প্রদান করা হয়।

অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থ ৯ পরিবারের মধ্যে কাজল মলি­ক (৪৮), আমীর হোসেন (২৮), সুমন কান্তি দে (৩২), আরেফা খাতুন (৩০), রূপনা কান্তি দে (২২), আতাউল­াহ (৪৬) ও শাহজাহান (২৩) সহ মোট ৭টি পরিবারকে এ সহযোগিতা প্রদান করা হয়।

এসব পেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ আরেফা খাতুন (৩০) খুশি হয়ে বলেন, এতদিন রান্না করে খাওয়া কিছুই ছিলনা। সব পুড়ে ছাই। আজ থেকে দু’মুটো চাল হলেও রান্না করা যাবে।

ক্ষতিগ্রস্থদের হাতে সরঞ্জাম গুলো তুলে দেন ইংলিশ কর্ণারের পরিচালক মোঃ রাশেদুল ইসলাম। কর্ণারের সদস্য যথাক্রমে আজিজ, ইকবাল, মোর্শেদ, নাবিল ও জুনায়েদ।

ইংলিশ কর্ণারের পরিচালক মোঃ রাশেদুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার ২৩ দিন পার হলেও ক্ষতিগ্রস্থরা কিছুই না পাওয়া খুবই বেদনাদায়ক। আমরা নিজেদের ব্যবস্থাপনার তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। সমাজের বিত্তবানদের উচিত অসহায় এসব পরিবারের পাশে দাঁড়ানো।