লোহাগাড়া প্রতিনিধি:
চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার উত্তর পদুয়া এলাকায় হাঙ্গর খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে একটি সিন্ডিকেট। দিনদিন বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে বালু উত্তোলনকারীরা। যার ফলে খালে বিলীন হচ্ছে অনেক পরিবারের বসতঘর ও চলাচলের রাস্তা। সরকারও হারাচ্ছে রাজস্ব।
জানা যায়, উপজেলার জঙ্গল পদুয়া হাঙ্গর খালে ৮৪৯ নং দাগে একটি পয়েন্টে সারকার ইজারা দিয়েছে রাজস্ব আয় করেছে সরকার। কিন্তু একটি সিন্ডিকেট নিজেদের রাজনৈতিক নেতাকর্মী পরিচয় দিয়ে হাঙ্গর খালের বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজার মিশিন বসিয়ে খালের গভীর থেকে বালু উত্তোলন করছে। তোয়াক্কা করছে না প্রশাসনকে। যার ফলে অনেক বসতবাড়ি খালে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। সাথে সাথে খালে বিলীন হয়েছে চলাচলের রাস্তা।
অপরদিকে সাতকানিয়া উপজেলা ছদাহা গ্রামের সাথে লোহাগাড়ার সংযোগ রক্ষাকারী ব্রীজটিও হুমকির মুখে রয়েছে। ব্রীজের ৫০০ মিটারের মধ্যে খাল থেকে প্রতিদিন বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। পরিবেশ সংরক্ষণ আইন (১৯৯৫ সনের ১নম্বর আইন) অনুযায়ী সেতু, কালভার্ট, ড্যাম, বাঁধ, রেললাইন, ব্যারেজ ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সরকারি ও বেসরকারি স্থাপনা থাকলে অথবা আবাসিক এলাকা থেকে সর্বনি¤œ এক কিলোমিটারের মধ্যে বালু উত্তোলন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
সরেজমিন পরদির্শনে গিয়ে দেখা যায়, আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে উপজেলার উত্তর পদুয়া হাঙ্গর খাল থেকে অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলনের ফলে উত্তর পদুয়া এলাকায় আকাম উদ্দিন সওদাগর পাড়া, ঘোনা পাড়া ও মনির আহমদ পাড়ায় অন্তত ১০/১৫ পরিবারের বসতঘর ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। এছাড়া জঙ্গল পদুয়া এলাকাতেও অবৈধ ভাবে বালু উত্তোলন করছে বালু ব্যবসায়ীরা। বর্ষাকালে পানির ঢলে যেকোন মুহুর্তে বিলীন হতে পারে তাদের বসতঘর ও চলাচলের রাস্তা।
স্থানীয়রা জানান, বর্তমানে বালু উত্তোলনকারীরা প্রবাভশালী হওয়ায় তারা মুখ খুলতে পারছে না। তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জৈনক এক ব্যক্তি বলেন, যারা বালু উত্তোলন করছে তারা রাজনৈতিক প্রশ্রয়ে সেন্ডিকেট করে হাঙ্গর খালের বালু গ্রাস করছে। আইনকেও মানছে না তারা। প্রসাশনও নিরেব ভূমিকায়।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মো: শহিদুল ইসলাম বলেন, উত্তর পদুয়া ও জঙ্গল পদুয়া এলাকায় হাঙ্গর খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে খাল পাড়ের বসবাসরত ক্ষতিগ্রস্থরা প্রশাসনকে অভিযোগ দিয়ে কোন কার্যকর ভূমিকা না দেখে কয়েকবার ঝাড়ু মিছিলও করেছিল। তাতেও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ হয়নি।
পদুয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো: জহির উদ্দিন বলেন, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধের জন্য প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানিয়েছি। তবে বালু উত্তোলনকারীরা বেপরোয়া।
ভাঙনের ঝুঁকিতে বসবাসরতরা জানান, অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে উপজেলা প্রশাসন লোক দেখানো অভিযান চালালেও কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহন না হওয়ায় বালু উত্তোলনকারীরা আরো বেপরোয়া হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে ক্ষতির সম্মূখীন হয়ে পড়বে খাল পাড়ের ঝুঁকিতে বসবাসরত লোকজন।
লোহাগাড়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পদ্মাসন সিংহ বলেন, ইজারা ছাড়া অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা যাবে না। হাঙ্গর খাল থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে থাকলে অভিযান পরিচালনা করে বালু উত্তোলন কারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলেও জানান তিনি।
লোহাগাড়ায় হাঙ্গর খাল থেকে বালু উত্তোলন : বিলীন হচ্ছে ঘরবাড়ি ও চলাচলের রাস্তা
পড়া যাবে: [rt_reading_time] মিনিটে
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।