ডেস্ক নিউজ:
নিউইয়র্কে অবস্থানরত তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগানের প্রশংসা করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতারা। রবিবার নিউইয়র্কে এক অনুষ্ঠানে এরদোগানের প্রশংসা করেন তারা। মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন ইস্যুতে সক্রিয় থাকায় তুর্কি প্রেসিডেন্টের প্রশংসা করা হয়েছে।

এ সময় এরদোগানকে মুসলিম বিশ্বের কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবেও উল্লেখ করা হয়। খবর তুর্কি গণমাধ্যম আনাদুলো এজেন্সির। নিউইয়র্কের ব্রুকলিনে আল-তাকওয়া মসজিদের ইমাম সিরাজ ওয়াহাজ বলেন, আমাদের একজন কেন্দ্রীয় নেতা প্রয়োজন।

আমার মনে হয় আমরা সেটা তুরস্ক প্রেসিডেন্ট এরদোগান থেকে পাচ্ছি। আমরা নিউইয়র্কবাসীরা আপনাকে খুব পছন্দ করি। ইউনাইটেড স্টেটস কাউন্সিল ফর মুসলিম অরগানাইজেশন্স-এর সাধারণ সম্পাদক ওসামা জামালও এরদোগানের প্রশংসা করেছেন। তিনি বলেন,

আমরা আপনাকে নিয়ে গর্ব করার সুযোগ পেয়েছি। মুসলিম উম্মাহর জন্য আপনার ভালোবাসা, উদারতা, যত, সহযোগিতা অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। একই অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেন, সারা বিশ্বের মুসলিমদের পাশে দাঁড়াবে তুরস্ক।

আমি দেখতে পাচ্ছি যুক্তরাষ্ট্রের মুসলিম সম্প্রদায় আরও বেশি সুসংগঠিত হচ্ছে। বিশ্বের ১৭০ কোটি মুসলমানদের অংশ আমরা। আমাদের মধ্যকার মতবিরোধ যেন আমাদের পেছনে ঠেলে না দেয়।

জাতিসংঘে ইমরান খানের বক্তব্য মুসলিম বিশ্বের জন্য এক অবিস্মরনিয় জয়!

ভারত অধিকৃত কাশ্মীরে মানবিক সংকট ও সেখানকার নাগরিকদের অবরুদ্ধ জীবনযাপনের বিষয়টি জাতিসংঘে উপস্থাপন করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। ১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ জয়ে নেতৃত্ব দেয়া পাকিস্তানের সাবেক এ অধিনায়কের বক্তব্যকে অনেকেই অবিস্মরণীয় বলছেন।

জাতিসংঘে ইমরান খানের ভাষণকে কেন্দ্র করে পাকিস্তারে জনপ্রিয় সংবাদ মাধ্যম ডন হেডলাইন করেছে ‘জাতিসংঘে ইমরান খানের বক্তব্য ৯২ সালের বিশ্বকাপ জয়ের মতোই স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ সেই সময় পাকিস্তান ক্রিকেট দল ছিল নাজুক পরিস্থিতে।

দলে অভ্যন্তরীণ কোন্দলের পাশাপাশি বিশ্বকাপের মতো বড় টুর্নামেন্টের শুরুতে রীতিমতো হেরে গ্রুপ পর্ব থেকেই বাদ পরার শঙ্কায় ছিল পাকিস্তান। সেই অবস্থা থেকে দলকে যোগ্য নেতৃত্ব দিয়ে বিশ্বকাপ জয়ে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন ইমরান খান। পাকিস্তানকে বিশ্বকাপ উপহার দেয়া কিংবদন্তি এ ক্রিকেটার খেলার মাঠ থেকে বর্তমানে দেশটির প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বে রয়েছেন।

ক্রিকেট মাঠের মতোই প্রধানমন্ত্রীর চেয়ারে বসে বিশ্বকে রীতিমতো চমক দেখাচ্ছেন ইমরান খান। শুক্রবার জাতিসংঘের ৭৪তম সাধারণ অধিবেশনে দেয়া ভাষণে পাক প্রধানমন্ত্রী কাশ্মীর ইস্যুটি বিশ্ব নেতাদের সামনে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন।

অবরুদ্ধ উপত্যকাটিতে ভারত সরকারের নির্মম অত্যাচারের বিষয়টি বিশ্ববাসীর সামনে তুলে ধরে ইমরান খান বলেন, গত ৫২ দিন ধরে ৮০ লাখ কাশ্মীরিকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। ৯ লাখের বেশি সেনা মোতায়েন করে সেখানকার নাগরিকদের সঙ্গে পশুসুলভ আচরণ করছে আরএসএস মতাদর্শী মোদি সরকার।

আরএসএস মতাদর্শী ভারতের বর্তমান সরকার হিটলারের নাৎসি বাহিনীর মানসিকতা নিয়ে মুসলিমনিধন করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, এ সরকারের হাতেই গুজরাটে মুসলিমদের ওপর গণহ’ত্যা পরিচালিত হয়েছে। কাশ্মীরে কারফিউ প্রত্যাহারের পর আমরা আবারও এমন একটি গণহ’ত্যার আশঙ্কা করছি।

মুসলিম নি’র্যাতনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের নীরবতার সমালোচনা করে ইমরান খান বলেন, মুসলমানদের স’ন্ত্রাসী আখ্যায়িত করে তাদের ব্যাপারে সবাই নীরব বসে থাকে। আজকে যদি ইহুদিরা এভাবে অবরুদ্ধ থাকতো, তাহলে কি বিশ্ব সম্প্রদায়ের প্রতিক্রিয়া এমন হতো? রোহিঙ্গাদের ওপর গণহ’ত্যা চালানো হলো, আন্তর্জাতিক শক্তি কি ভূমিকা পালন করেছে?

তিনি বলেন, মুসলিমদের মধ্যে যারা উগ্রবাদে জড়ায়, তারা ইসলামের কারণে নয় ইনসাফের অভাবেই এ পথে পা বাড়ায়। এ জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় দায় এড়াতে পারে না। প্রায় ৫০ মিনিটের দীর্ঘ ভাষণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন,

ভারত শাসিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ করে গত প্রায় দু মাস ধরে ৮০ লাখ কাশ্মীরিকে যেভাবে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে তা যে কোনো সময় বিপজ্জনক পরিণতি বয়ে আনতে পারে। ইমরান খান বলেন, ‘যদি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কোনো যুদ্ধ হয়, তাহলে ছোটো দেশে হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার ছাড়া পাকিস্তানের কোনো বিকল্প থাকবে না।

একবিংশ শতাব্দীতে এসে গণহ’ত্যা, জাতিগত শ্রেষ্ঠত্ব, আমৃত্যু লড়াই এ ধরনের শব্দ ব্যবহার মধ্যযুগীয় মানসকিতার বহিঃপ্রকাশ।’ একবিংশ শতাব্দীতে এসে গণহ’ত্যা, জাতিগত শ্রেষ্ঠত্ব, আমৃত্যু লড়াই এ ধরনের শব্দ ব্যবহার মধ্যযুগীয় মানসকিতার বহিঃপ্রকাশ।’
–ডেইলি মর্নিং: