মুহাম্মদ আবু বকর ছিদ্দিক,রামু :
রামু বৌদ্ধ মন্দিরে হামলার ঘটনার ৭ বছর পরেও উত্তম বড়ুয়া’র খোঁজ নেই । পবিত্র কোরান শরিফ অবমাননা’র অভিযোগ তুলে বৌদ্ধ মন্দিরে ২০১২ সালে’র ২৯ সেপ্টেম্বর হামলা চালানো হয়। রামুসহ বিভিন্ন বৌদ্ধ মন্দিরে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে কক্সবাজার, রামু ও উখিয়ায় বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা চালানো হয়, সেই উত্তম বড়ুয়া’র  কোনো খোঁজ খবর মেলেনি ৭ বছর ধরে ৷
সেই দিন রাতে বৌদ্ধ মন্দিরে হামলাকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়৷ পরে বাংলাদেশ সরকার সুন্দর করে বৌদ্ধ মন্দির পুর্ননির্মাণ করে দিয়েছে। তবে স্থানীয়রা বলছেন, ঘটনা তদন্ত করে প্রকৃত আসামীদের ধরার বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো তৎপরতা নেই৷ বিশেষ করে ‘নিখোঁজ’ উত্তমের বিষয়ে প্রশাসনের যেন কোনো মাথাব্যথা নেই৷ শুধু প্রশাসন নয়, উত্তমের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে তাদের নিজের সম্প্রদায়ের মানুষরাও নাড়াচাড়া করতে চায় না৷
স্থানীয় বৌদ্ধরা জানান, চিহ্নিত দুষ্কৃতিকারীদের মধ্যে বেশিরভাগেরই নাম নেই। গত ৭বছরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে। তার আরও জানান বিশেষ করে চিহ্নিত দুষ্কৃতিকারীদের মধ্যে বেশিরভাগেরই নাম নেই মামলাগুলোর চার্জশিটে। এই সময়টাতে উত্তম বড়ুয়া ফিরে এলে পরিস্থিতি আবার ঘোলাটে হতে পারে।
৭ বছর আগে কক্সবাজার, রামু ও উখিয়ার ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে ১৮টি মামলা হয়। তার মধ্যে একটি মামলায় উত্তম বড়ুয়া প্রধান আসামী৷ গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে তার বিরুদ্ধে৷ তবে রামু থানা থেকে জানানো হয়, তার সম্পর্কে কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি৷
তবে বাংলাদেশের অল প্রশাসনসহ পুলিশের দায়িত্ব ছিল উত্তম বড়ুয়াকে খুঁজে বের করা, তবে তারা সেটা করতে পারেননি প্রশাসন!।স্থানীয় বৌদ্ধরা আরও জানান
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে ব্যবহার করে সংখ্যালঘু নির্যাতনের অন্যতম উদাহরণ রামুর বৌদ্ধ পল্লীতে হামলা৷ উত্তম বড়ুয়ার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে পবিত্র কোরান শরিফ অবমাননা করা কেন্দ্র করে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর হামলা চালানো হয় বৌদ্ধপল্লিতে৷ ধ্বংস করা হয় বৌদ্ধ পুরাকীর্তি৷ সেই রাত থেকেই উত্তম নিখোঁজ।
এই বিষয়ে রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবুল খায়ে’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বরে’র সেই রাত থাকে উওম বড়ুয়া ‘র কোন ধরনের খোঁজ খবরনেই সে বাংলাদেশের নেটওয়ার্কের বাইরে। তিনি আরও জানান উত্তম বড়ুয়া প্রধান আসামী করে যে মামলা করা হয়েছিল সে মামলা চলমান আছে।
উত্তম বড়ুয়া’র স্ত্রী রিতা বড়ুয়া জানান উত্তম বড়ুয়া ফিরে আসবে কিনা জানি না, তবে সে বেঁচে থাকলে নিশ্চয়ই যোগাযোগ করতো এতদিনে। পরিবারের উপার্জন মানুষটির ফিরে আসার সম্ভাবনা আশা ছেড়ে দিয়েছি। ১১ বছরের ছেলে আদিত্যকে নিয়ে চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। রিতা বড়ুয়া আরও জানান আমার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছিল অনেকেই কিন্তু কেউ আমাদের এতটুকু সাহায্য করেনি৷আমরা খেয়ে না খেয়ে খুব কষ্ট করে দিন কাটাচ্ছি৷ছেলেটা কত আশা করে থাকে বাবা আসবে, আদর করবে!। আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র কাছে ১১ বছরে’র ছেলে আদিত্য বড়ুয়া’র লেখা পড়ার জন্য সাহায্যে’র আবেদন জানাছি।