মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের পূর্বরত্না গ্রামে চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডারের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যান ট্রাস্টের নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যমকে বলেছেন, স্বজনহারা রোকন বড়ুয়া খুব অসহায়ত্ব বোধ করছে। রোকন বড়ুয়া ও তার বৃহত্তর পরিবারকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তাঁরা জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। হত্যাকান্ডের ব্যাপারে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তের আহবান জানিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের নেতৃবৃন্দ বলেন, তদন্তের নামে যাতে নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার না হয় এবং শুধুমাত্র প্রকৃত খুনীদের আইনের আওতায় আনতে হবে। কোন কুচক্রী মহল যাতে এ মর্মান্তিক হত্যাযজ্ঞকে সাম্প্রদায়িক ঘটনা হিসাবে রূপ দিতে না পারে, সেজন্য প্রশাসন ও স্থানীয় জনসাধারণকে এ বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।
বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়ার নেতৃত্বে ৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল শনিবার ২৮ সেপ্টেম্বর বিকেলে উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের পূর্ব রত্নাপালং বড়ুয়া পাড়ায় চাঞ্চল্যকর ফোর মার্ডার ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে গণমাধ্যমকে উক্ত কথা বলেন। এসময় তারা প্রবাসি রোকন বড়ুয়া ও তার স্বজনদের সাথে একান্তে কথাবার্তা বলেন এবং সংগঠিত ঘটনার সম্পর্কে জানতে চাইলে নিহতের স্বজনরা তাদেরকে বিস্তারিত বর্ণনা দেন। তবে কে বা কারা ঘটনা ঘটিয়েছে তা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি বলে জানিয়েছেন স্বজনেরা।
পরিদর্শনকালে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্যরা প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এই নেক্কারজনক ঘটনায় যে বা যারা জড়িত তাদেরকে দ্রুততম সময়ে খোঁজে বের করে গ্রেপ্তার পূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

পরিদর্শনকালে ট্রাস্টি বোর্ডের অন্যান্যের মধ্যে, বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য ও সংসদ সদস্য বাসন্তী চাকমা, ট্রাস্টি এডভোকেট দীপংকর বড়ুয়া পিন্টু, ট্রাস্টি ডালিম কুমার বড়ুয়া, ট্রাস্টি দয়াল কুমার বড়ুয়া। এছাড়া কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য আশরাফ জাহান কাজল, উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো.আবুল মনসুর, রত্নাপালং ইউপি চেয়ারম্যান খাইরুল আলম চৌধুরী সহ স্থানীয় বৌদ্ধ ধর্মীয় নেতারা তাঁদের সাথে ছিলেন। একইদিন দুপুর সাড়ে ১২ টায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম এর সাথে তাঁর কার্যালয়ে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যান ট্রাস্টের নেতৃবৃন্দ সাক্ষাত করেন। এসময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন তাদেরকে হত্যাকান্ডের বিভিন্ন দিক নিয়ে ব্রিফ করেন। একইদিন সন্ধ্যা ৭ টায় ট্রাস্টের নেতৃবৃন্দ জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেনের সাথে একই বিষয়ে বৈঠক করেন। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব-উপসচিব) আশরাফুল আফসার, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোহা. শাজাহান আলি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা ও (আইসিটি) মোহাম্মদ আল আমিন পারভেজ এবং ট্রাস্টিদের সাথে কক্সবাজার জেলা পরিষদের সদস্য আশরাফ জাহান কাজল উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বুধবার দিবাগত রাতে যে কোন সময় রত্নাপালং ইউনিয়নের পূর্বরত্না গ্রামে কূয়েত প্রবাসি রোকন বড়ুয়ার বাড়িতে ঢুকে তার বয়োবৃদ্ধ মা সখি বালা বড়ুয়া, স্ত্রী মিলা বড়ুয়া, তাদের শিশু সন্তান রবিন বড়ুয়া ও ভাতিজি সনি বড়ুয়াকে জবাই করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।