বার্তা পরিবেশক:
ঐহিত্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রামুর চাকমারকুল মাদ্রাসার নতুন মুহতামিম হয়েছেন আন্জুমানে ইত্তেহাদুল মদারিস বাংলাদেশ মহাসচিব আবদুল হালিম বোখারী। মাওলানা সিরাজুল ইসলামকে সমঝোতার ভিত্তিতে মুহতামিম পদ থেকে সরিয়ে আবদুল হালিম বোখারীকে মুহতামিম করা হয়েছে। সিরাজুল ইসলামকে নির্বাহী মুহতামিম করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় মাদ্রাসার এক জরুরী সভায় সমঝোতার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। সংসদ সদস্য সাইমুম কমলের সভাপতিত্বে এই জরুরী সভায় অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত মতে, মাওলানা আবদুর রাজ্জাককে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে স্বপদে বহাল রাখা হয়েছে। একই সাথে নতুনভাবে তাকে শিক্ষা বিষয়ক কমিটিতে সদস্য মনোনিত করা হয়েছে।
জানা গেছে, চাকমারকুল মাদ্রাসায় দীর্ঘদিন ধরে সদ্য সাবেক মুহতামিম সিরাজুল ইসলাম ও দাতা সদস্যদের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। পক্ষে-বিপক্ষে এই বিরোধ নিয়ে মামলা, সালিশ ও বৈঠক হয়েছে। সর্বশেষ বিরোধ নিপষ্পত্তি ও অভিযোগে বিষয়ে তদন্ত কমিটি গঠন করতে নির্দেশ দেন সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল। তদন্ত কমিটি দীর্ঘ তদন্ত শেষে বৃহস্পতিবার মাদ্রাসার প্রাঙ্গণে আয়োজিত জরুরী সভার মাধ্যমে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন।
সভা সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে অতীতের সব কিছু বাদ দিয়ে নতুন করে দায়িত্ব বন্টনের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়। সে মোতাবেক সমঝোতার ভিত্তিতে মাওলানা সিরাজুল ইসলামকে সরিয়ে মাওলানা আবদুল হালিম বোখারীকে মুহতামিম পদে পদায়ন করা হয়েছে। সিরাজুল ইসলামকে নির্বাহী মুহতামিম হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে। একই মাওলানা আবদুর রাজ্জাককে সিনিয়র শিক্ষক হিসেবে স্বপদে বহাল এবং নতুনভাবে শিক্ষা বিষয়ক কমিটিতে সদস্য মনোনিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে মাওলানা হাফেজ আব্দুল হক ও মুপ্তি মোর্শেদুল আলম, মজলিশে শুরার সদস্য মনোনিত করেন। পরে সাংসদ সাইমুম সরওয়ার কমল উভয় পক্ষকে কাছে টেনে বুকের সাথে বুক মিলিয়ে দেন। এবং সৌহার্দ পূর্ণ পরিবেশে সকল ধরনের ভূল বুঝা বুঝি অবসান ঘটে। সময়োপযোগী ও দুরদর্শী সিদ্ধান্তে অনাকাঙ্খি ভুল বুঝাবুঝির অবসান হল।
সভায় সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল বলেন, চাকমারকুল মাদ্রাসাটি দক্ষিণ চট্টগ্রামের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ও ঐতিহ্যবাহী দ্বীনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এই প্রতিষ্ঠান থেকে বের হয়ে হাজারো আলোকিত মানুষ; যারা বিভিন্ন সময় দ্বীনের আলো ছড়িয়েছে। মাদ্রাসা পরিচালনা নিয়ে যে দ্ব›দ্ব সৃষ্টি হয়েছে তা যদি চলমান থাকে তাহলে ঐতিহ্যবাহী এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই সকল দ্ব›দ্ব বাদ দিয়ে যেকোনো মূল্যে এই প্রতিষ্ঠানের সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে হবে। এই জন্য যাকে যেভাবে ত্যাগ স্বীকার করতে হয় তা করতে হবে। সকল মান-অভিমান ভুলে সকলকে আবারো এক কাতারে শামিল হয়ে মাদ্রাসাটি পরিচালনা করতে হবে।
উক্ত বৈঠকে অন্যান্যদের মধ্য উপস্থিত ছিলেন, বসন্ধুরা ইসলামিক রিচার্জ সেন্টার ঢাকার পরিচালক মাওলানা আরশাদ রহমানী, পোকখালী মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক মাওলানা মোখতার আহমদ, ধাওনখালী মাদ্রাসার পরিচালক মাও মোসলিম, চট্টগ্রাম দারুল মারিফ আল ইসলামিয়ার সহকারি পরিচালক মাওলানা ফোরকানুল্লাহ খলিল, টেকনাফ জামেয়ার পরিচালক মাওলানা মুপ্তি কেফায়েত উল্লাহ, তাবলীগ জামাতের মুরব্বি মাওলানা মুপ্তি মোর্শেদুল আলমচৌধুরী, রামু জোয়ারিয়ানালা মাদ্রাসার সহকারি পরিচালক মাওলানা হাফেজ আব্দুল হক, সিনিয়র শিক্ষক মাওলানা আব্দুল্লাহ তাজ রাজারকুল আজিজুল উলুম মাদ্রাসার পরিচালক মোহাম্মদ মোহছেন শরীফ, রামু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবুল খায়ের, দৈনিক হিমছড়ি’র প্রধান সম্পাদক আলহাজ্ব আলী হাচ্ছান চৌধুরী, রফিক আহামদ সিকদার, চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম সিকদার, কক্সবাজার চেম্বার অব কমার্সের পরিচালক এইচএম নূরুল আলম, হাজী জালাল আহমদসহ কক্সবাজার ও রামুর বিভিন্ন মাদ্রাসার পরিচালক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।