মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

রোহিঙ্গারা যখন তাদের নিজ দেশ মিয়ানমারে ২০১৭ সালে নির্যাতিত হচ্ছিল, তখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী উদারতা দেখিয়ে সেসময়ে প্রায় ৭ লক্ষ রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়েছেন। তার মানে এই নয় যে, রোহিঙ্গা শরনার্থীরা এদেশের আইনের উর্ধ্বে। তারা মিয়ানমারে ফিরে না যাওয়া পর্যন্ত এ দেশেরই প্রচলিত সকল আইন অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এনজিও এবং আইএনজিও গুলো প্রত্যাবাসন ও দেশের স্বার্থ বিরোধী কোন কাজ করলে বা রোহিঙ্গা শরনার্থীদের পরোক্ষভাবেও প্রত্যাবাসনে উৎসাহিত করলে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনের প্রয়োগ করা হবে। যত্রতত্র রোহিঙ্গা বাজার, নগদ অর্থের ব্যবস্থা বন্ধ করা হবে। উখিয়া টেকনাফে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ীদের নিবৃত্ত করা গেলেও রোহিঙ্গা শরনার্থীরা এখনো মাদকের সাথে জড়িত রয়েছে। রোহিঙ্গা শরনার্থীদের মাদক কারবার ও অন্যান্য অপরাধ কর্মে স্থানীয়রা তাদের সহযোগিতা করছে। ক্ষেত্র বিশেষে স্থানীয়দের অনেকে রোহিঙ্গা অপরাধীদের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে। এসব রোহিঙ্গা শরনার্থী ও স্থানীয়দের চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের শিঘ্রী আইনের পরিধির মধ্যে নিয়ে আসা হবে। এক্ষেত্রে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অপরাধীদের স্বপক্ষে কোন তদবির ও সুপারিশ করা চলবেনা। অপরাধী যেই হোক, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তাদের কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবেনা।
বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভূমিকা নিয়ে বৃহস্পতিবার ১২ সেপ্টেম্বর সকালে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মোঃ কামাল হোসেনের সভাপতিত্বে তাঁর কার্যালয়ের শহীদ এটিএম জাফর আলম সিএসপি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক বিশেষ সভায় কক্সবাজারের পুলিশ সুপার এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম একথা বলেন।
তিনি জনপ্রতিনিধিদের উদ্দেশ্য বলেন-আপনারা অপরাধীদের সুনির্দিষ্ট তথ্য দিন, জেলা পুলিশ এ্যাকশানে যাবে। রোহিঙ্গা শরনার্থীরা অনলাইনে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মোবাইলে রাষ্ট্রের স্বার্থ বিরোধী তৎপরতা ও অহেতুক গুজব ছড়িয়ে থাকে, জনপ্রতিনিধিদের এ ব্যাপারে সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে এসপি এ.বি.এম মাসুদ হোসেন বিপিএম বলেন, এ বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। এ বিষয়ে কোন গোষ্ঠী, রাজনৈতিক দল, সামাজিক প্রতিষ্ঠান বা এনজিও’রা উস্কানী দিলে তা কোন অবস্থাতেই সহ্য করা হবেনা।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে ডিডিএলজি শ্রাবস্তী রায়, অতিরিক্ত আরআরআরসি মোঃ শামশুদ্দোহা (উপসচিব), অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মোহাঃ শাজাহান আলি, ডিজিএফআইয়ের লেঃ কর্নেল রুবাইয়াত, এনএসআই অতিরিক্ত পরিচালক, কক্সবাজার পৌরসভার মেয়র মুজিবুর রহমান, উখিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ হামিদুল হক চৌধুরী, টেকনাফ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নুরুল আলম, উখিয়ার ইউএনও মোঃ নিকারুজ্জামান, টেকনাফের ইউএনও মোহাম্মদ রবিউল হাসান, কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের চৌধুরী, টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ বিপিএম-বার, উখিয়া থানার ওসি মোঃ আবুল মনসুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।