বাংলা ট্রিবিউন

রোহিঙ্গা সমস্যার বিষয়ে সরকার ভবিষ্যতে কীভাবে অগ্রসর হবে, তা জানতে আগ্রহী যুক্তরাষ্ট্র। সোমবার (৯ সেপ্টেম্বর) পররাষ্ট্র সচিব এম শহীদুল হকের সঙ্গে বৈঠকে ঢাকায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত আর্ল রবার্ট মিলার এ আগ্রহের কথা জানান।

বৈঠকে একটি উচ্চপর্যায়ের আসন্ন সফর ও জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনসহ অন্যান্য বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
এ বিষয়ে একজন কর্মকর্তা জানান, রোহিঙ্গাদের সর্বশেষ পরিস্থিতি জানার জন্য যুক্তরাষ্ট্র থেকে বিভিন্ন স্তরের একটি প্রতিনিধি দল ঢাকা সফর করবে এবং এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
এছাড়া রোহিঙ্গা নিয়ে সরকার জাতিসংঘে কীভাবে এগোতে চায় এবং জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ অধিবেশনে বাংলাদেশ কী করবে, সেসব নিয়েও আলোচনা হয় বলে তিনি জানান।
তিনি বলেন, প্রায় দেড় ঘণ্টার এ বৈঠকে কক্সবাজারে এনজিও’র কার্যক্রম এবং সরকারের প্রতিক্রিয়াও জানতে চান রাষ্ট্রদূত।
উল্লেখ্য, গত ২২ আগস্ট রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর কথা ছিল। তবে তা শুরু না হওয়ার পেছনে কিছু এনজিওর ভূমিকা নিয়ে সরকার প্রশ্ন তুলেছে। এরইমধ্যে কয়েকটি এনজিও’র কার্যক্রমও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অ্যাডরা রয়েছে।
এর আগে গতকাল রবিবার (৮ সেপ্টেম্বর) সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মিলার। এ সাক্ষাতের পর ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের বলেন, রোহিঙ্গারা ২৫ আগস্ট যে সমাবেশ করেছে সেখানে কিছু এনজিও মদত দিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদের সম্পর্কে খোঁজ-খবর নিচ্ছে সরকার।
আরেক কর্মকর্তা বলেন, ‘রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে সহায়তা দেবে— এই আশ্বাস দিয়েছেন রাষ্ট্রদূত।’
জাতিসংঘে রোহিঙ্গা নিয়ে একাধিক অনুষ্ঠান হওয়ার কথা আছে এবং তা নিয়েও দুজনের আলাপ হয়েছে বলে তিনি জানান।
নিউ ইয়র্কে কোনও ধরনের বৈঠক হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সম্ভাবনা কম। কারণ, কয়েক মাস আগে আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক হয়েছে।’

তিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠক
জাতিসংঘে বাংলাদেশ, চীন ও মিয়ানমারের পররাষ্ট্র মন্ত্রীদের মধ্যে একটি বৈঠক হওয়ার কথা আছে।
এ বিষয়ে এক কর্মকর্তা বলেন, ‘চীন গত বছরও এই ধরনের উদ্যোগ নিয়েছিল এবং এ বছরও তারা এ উদ্যোগ নিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘চীন যেভাবে দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসছে আর অন্য কোনও দেশ এভাবে আসছে না এবং আমরা বেইজিংয়ের সহযোগিতাকে স্বাগত জানাই।’
উল্লেখ্য, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরুর জন্য নির্ধারিত দিনে গত ২২ আগস্ট কক্সবাজারে চীনের প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিল।
গত মাসে ঢাকায় নতুন চীনা রাষ্ট্রদূত যোগ দিয়েছেন। এরপর তিনি এ বিষয়ে সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেছেন। মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে তার বৈঠক হয়েছে বলে তিনি জানান।
জাতিসংঘে অনুষ্ঠান
সাধারণ পরিষদ চলার সময়ে জাতিসংঘের বাইরে রোহিঙ্গা নিয়ে একটি বড় ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করবে বাংলাদেশ।
আরেকজন কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সাধারণ পরিষদে রোহিঙ্গা বিষয়টি বরাবরের মতো জোরালোভাবে উপস্থাপন করবেন।’
এছাড়া অরগানাইজেশন ফর ইসলামিক কোঅপারেশন (ওআইসি)-এর উদ্যোগে দুটি বৈঠক হবে। সৌদি আরব ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে একটি অনুষ্ঠান করতে পারে বলেও তিনি জানান।
তিনি বলেন, ওআইসি’র রোহিঙ্গা বিষয়ক কনট্যাক্ট গ্রুপের নিয়মিত বৈঠক হবে নিউ ইয়র্কে এবং গাম্বিয়ার নেতৃত্বে গঠিত দায়বদ্ধতা কমিটির বৈঠকও এবার জাতিংঘ সাধারণ পরিষদের বৈঠকের সাইড লাইনে হবে।