সিবিএন ডেস্ক:
বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে ৭১৫টি পুকুর ও ১০টি দিঘি খননের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। দেশের ৫ জেলার ৪৩টি উপজেলার তিন হাজার ৫৮ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা দিতে এসব পুকুর খনন করা হবে। পুকুরে জমানো বৃষ্টির পানি উন্নয়নের মাধ্যমে জমিতে ক্ষুদ্র সেচ কাজে ব্যবহার করা হবে। একইসঙ্গে এসব পুকুরে মাছ চাষও করা যাবে। কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি একনেকে অনুমোদন করা হয়েছে।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, কৃষি মন্ত্রণালয়ের আওতায় বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) প্রস্তাবিত ‘পুকুর পুনঃখনন ও ভূ-উপরিস্থ পানি উন্নয়নের মাধ্যমে ক্ষুদ্র সেচে ব্যবহার’ শীর্ষক প্রকল্পটি বাস্তবায়নে প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১২৮ কোটি ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। যার পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে জোগান দেওয়া হবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে দেশের উত্তরাঞ্চলের রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নওগাঁ, বগুড়া ও নাটোর জেলার ৪৩টি উপজেলায়।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ) এ প্রকল্পটি ২০২৩ সালের ৩০ জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করবে। প্রকল্পের বিস্তারিত বিবরণে জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় এসব পুকুর বা দিঘি পুনঃখননের মাধ্যমে বৃষ্টির পানি বা ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণ করা হবে। যা দিয়ে এই এলাকার ৩ হাজার ৫৮ হেক্টর জমিতে সেচ সুবিধা সম্প্রসারণ করে প্রতিবছর অতিরিক্ত প্রায় ১৮ হাজার ৩৪৮ মেট্রিক টন ফসল উৎপাদন ও মৎস্য চাষের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া, সেচ কাজে সৌরশক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে বিদ্যুতের সাশ্রয় হবে এবং পুকুরের পাশে পাশে বৃক্ষ রোপণের মাধ্যমে পরিবেশ উন্নয়ন ও প্রান্তিক চাষিদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

সূত্র জানিয়েছে, প্রকল্পটি গত ২০১৮-২০১৯ অর্থ-বছরের সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচিতে (আরএডিপি) কোনও বরাদ্দ না দিয়ে অননুমোদিত নতুন প্রকল্প তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে রাখা হয়েছিল।

জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় পুকুর পুনঃখনন করা হবে৭১৫টি, দিঘি পুনঃখনন করা হবে ১০টি। সৌরশক্তি চালিত লো-লিফ্ট পাম্প (এলএলপি) স্থাপন করা হবে ৮৫টি। ভূ-গর্ভস্থ সেচ নালা নির্মাণ করা হবে ৮০টি। প্রকল্পের জন্য প্রি-পেইড মিটার কেনা হবে ৮৫টি। পুকুর ও দিঘির পাড়ে গাছ লাগানো হবে এক লাখ ৫০ হাজার।

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পটি সরকারের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তাই ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার করে সেচ সুবিধা সম্প্রসারণের মাধ্যমে ফসলের উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রকল্পটি প্রস্তাব করা হয়েছে। যা ৭ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনার (২০১৬-২০২০) সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, ‘প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে প্রকল্প এলাকায় ভূ-উপরিস্থ পানির প্রাপ্যতা বাড়বে, যা সেচকাজে ব্যবহৃত হলে ওই এলাকার ফসলের উৎপাদন বাড়বে।’ একইসঙ্গে খনন করা পুকুর বা দিঘির পাশে রোপণ করা দেড় লাখ গাছ ওই এলাকার বড় একটি জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।