বার্তা পরিবেশক :

সদর উপজেলার ঈদগাঁওতে ক্রস ফায়ারের ভয় দেখিয়ে আমজাদ হোসেন ছোটন রাজা নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সাহাব উদ্দিন নামে এক মাদ্রাসা শিক্ষক থেকে ৪ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিভিন্ন মন্ত্রী, বিভাগীয় কমিশনার, সংসদ সদস্য, পুলিশ সুপার, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান পরিচয় দিয়ে ওই প্রতারক মোটা অংকের টাকাগুলো হাতিয়ে নেয়। প্রতারণা বিষয় জানতে পেরে টাকা ফেরত চাইলে উল্টো ওই মাদ্রাসা শিক্ষকের বিরুদ্ধে একটি মিথ্যা মামলা রুজু করা হয়। সেই সাথে বিভিন্ন অসাধু ব্যক্তির মাধ্যমে দেয়া হচ্ছে নানা হুমকী-ধমকী। এ ব্যাপারে তার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার ও সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ঈদগাঁও বাজারের এক দোকানদারের সুবাদে মধ্যম পোকখালী উত্তর পাড়ার মৃত কবির আহমদের পুত্র সাহাব উদ্দিনের সাথে ইসলামাবাদের খোদাইবাড়ির এ.টি.এম রাজা মিয়ার পুত্র আমজাদ হোসেন ছোটন রাজার পরিচয় ঘটে। সাহাব উদ্দিন দীর্ঘদিন ধরে মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে নিজ গ্রামে জমিজমা দেখাশুনা ও চাষাবাদ করেন। বিগত ৮ জুলাই ঈদগাঁওর শ্রমিকলীগ নেতা আমজাদ হোসেন ছোটন রাজা তার ব্যবহৃত মোবাইল নাম্বার ০১৮১৭২৬৩৯৮৬ থেকে সাহাব উদ্দিনের ব্যবহৃত মোবাইলে একাধিকবার কল করে। কিন্তু সাহাব উদ্দিনকে মোবাইলে না পেলে একটি ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ করে সে। ক্ষুদে বার্তায় লেখা ছিল “আপনি বাসা থেকে সরে থাকুন”। এই ক্ষুদে বার্তা পেয়ে সাহাব উদ্দিন ছোটন রাজার সাথে দেখা করতে যায়। ওই সময় ছোটন রাজা সাহাব উদ্দিনকে জানায়, তার নাম ডিবি পুলিশের ক্রস ফায়ারের তালিকায় উঠেছে। সে সাহাব উদ্দিনের নাম ও ছবি নিজ চোখে দেখেছে বলে অবহিত করে। সদর গোয়েন্দা সংস্থার প্রধানের সাথে তার সখ্যতা থাকার সুবাদে বিষয়টি জেনেছে বলে জানানো হয়। পরে ছোটন রাজা সাহাব উদ্দিনের সম্মুখে পুলিশ সুপারকে ফোন দেয়ার কথা বলে নানা কথাবার্তা বলে। সাহাব উদ্দিনকে জানানো হয়, পুলিশ সুপার, ওসি ও ডিবি পুলিশকে টাকা দিলে সব ম্যানেজ হতে পারে। অন্যথায় কোন তদন্ত না করেই মাদ্রাসা শিক্ষক সাহাব উদ্দিনকে তুলে নিয়ে গিয়ে খুন করবে বলে ভয়ভীতি দেখায়। এরপর সহজ সরল সাহাব উদ্দিন ভয় পেয়ে বোনের স্বর্ণালংকার বন্ধক দিয়ে গত ৯ জুলাই রাত ১১টার দিকে সদর থানার পেছনে কোবা টুইন কক্স নামের ভবনে গিয়ে ছোটন রাজাকে ৫০ হাজার টাকা দেয়। এসময় সে তাকে গাড়ি বসিয়ে রেখে পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলার ভান করে ভবনের ভেতর গিয়ে কিছুক্ষণ পর বের হয়ে এসে বলে পুলিশ সুপার ৬ লক্ষ টাকা দাবি করেছে। ছোটন রাজার অনুরোধে ৩ লক্ষ টাকা দিতে হবে, নইলে সাহাব উদ্দিনকে জানে মেওে ফেলবে। এছাড়া পরবর্তীতে ঢাকায় রিপোর্ট পাঠানোর কথা বলে ১ লক্ষ ২৫ হাজার টাকা দাবি করে। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও মন্ত্রীর কাছে সুপারিশ গ্রহণের কথা বলে আরও টাকা দাবি করে। এসব বাহানায় ছোটন রাজা গত ৮ জুলাই থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত সাহাব উদ্দিনের কাছ থেকে বিভিন্ন দফায় মোট ৪ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা আত্মসাৎ করে বলে জানা গেছে।

এদিকে ছোটন রাজার প্রতারণা বিষয় বুঝতে পেরে তাকে ক্রস ফায়ারের ডকুমেন্ট এনে দিতে বললে সে নানা অজুহাত দেখায়। বিষয়টি তার সাহাব উদ্দিন তার আত্মীয় স্বজন ও অভিজ্ঞ পরিচিতজনদের অবহিত করে। পরে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার নিকট যাছাই করে এই ধরণের কোন বিষয়ের সত্যতা পাওয়া যায়নি। প্রতারণা বিষয় জানতে পেরে ছোটন রাজাকে টাকা প্রেরতের চাপ দেয়া হলে এবং তার কথাবার্তার রেকর্ড সংরক্ষিত রয়েছে জানালে সে সাহাব উদ্দিনকে গত ২ সেপ্টেম্বর বিকাল ৩টার দিকে কক্সবাজার জেলা পরিষদের সামনে নিয়ে গিয়ে তার ব্যবহৃত দুটি মোবাইল কেড়ে নিয়ে ফ্ল্যাশ করে দেয়। এবং বিভিন্ন গুন্ডা বাহিনী দিয়ে একাধিক নাম্বার থেকে হুমকী দিয়ে আসছে। এছাড়া উল্টো সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে গত ৪ সেপ্টেম্বর একটি সি.আর মামলা নং-১১০৪/২০১৯ইং দায়ের করে। এ বিষয়ে অসহায় সাহাব উদ্দিন সুবিচার ও আইনানুগ ব্যবস্থা নিয়ে গত ৭ সেপ্টেম্বর তার বিরুদ্ধে পুলিশ সুপার ও সদর মডেল থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। এছাড়া প্রতারক ছোটন রাজার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এর প্রস্তুতি নিচ্ছে।