সিবিএন ডেস্ক:
একেবারে শেষ মুহূর্তে ‘চন্দ্রযান-২’ এর সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো)। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ভারতের ল্যান্ডার বিক্রমের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারেননি মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।
ভারতের কয়েকটি গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী ভারতীয় সময় গতকাল শনিবার দিবাগত রাত ১টা ৩৮ মিনিটে শুরু হয় বিক্রমের অবতরণ প্রক্রিয়া। সেকেন্ডে ১ দশমিক ৮ কিলোমিটার থেকে মহাকাশযানের গতিবেগ কমিয়ে আনা শুরু হয় শূন্যে। সে জন্য হার্ড ব্রেকিং শুরু হয় । এরপর ফাইন ব্রেকিং পর্ব শুরু হতেই দেখা দেয় বিপর্যয়। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই ইসরোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষের সঙ্গে যাবতীয় সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় চন্দ্রযানের।
স্থানীয় সময় গতকাল রাত ২টা ২০ মিনিটে ইসরোর চেয়ারম্যান কে শিবন জানান, চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে ২ দশমিক ১ কিলোমিটার পর্যন্ত স্বাভাবিকভাবে চলছিল ল্যান্ডার বিক্রমের অবতরণ প্রক্রিয়া। তারপর আর কোনো সংকেত পাঠায়নি ল্যান্ডার বিক্রম।
ইসরোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষে চন্দ্রযান-২-এর অবতরণ সরাসরি দেখতে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। চন্দ্রযানের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর নিয়ন্ত্রণকক্ষে বিজ্ঞানী ও সংশ্লিষ্ট কর্মীদের হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দেন মোদি। তিনি বলেন, আপনারা যা করেছেন সেটা কম নয়। হাল ছাড়বেন না।
ভারতের এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বেঙ্গালুরুর সদর দপ্তরে ইসরো প্রধান কে শিবম বিজ্ঞানীদের বলেন, ‘২.১ কিলোমিটার অবস্থান পর্যন্ত বিক্রম ল্যান্ডারের অবস্থান স্বাভাবিক ছিল। পরে ভূপৃষ্ঠের সঙ্গে ল্যান্ডারের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পুরো ঘটনা নিয়ে বিশ্লেষণ চলছে। চন্দ্রযান ভূপৃষ্ঠে নামার সময় ১৫ মিনিটের আতঙ্কের একটি সময় থাকে। সে আতঙ্ক পর্যায় পার হতে পারেনি বিক্রম। চন্দ্রযান-২ কে ইসরোর করা সমস্ত অভিযানের থেকে সবচেয়ে জটিল বলে মন্তব্য করেছেন কে শিবান।
সবকিছু ঠিকমতো হলে আজ রোববার ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে সাড়ে ছয়টার মধ্যে ল্যান্ডার বিক্রম থেকে আলাদা হতো চন্দ্রযান-২-এর রোভার ‘প্রজ্ঞান’। রোভারটির কাজ হতো পৃথিবীতে বিশ্লেষণের জন্য চাঁদের ছবি ও তথ্য পাঠানো।
এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও রাশিয়া চন্দ্রবিজয় করেছে। তবে তা চাঁদের অন্য অঞ্চলে। ভারতের নভোযান চাঁদে অবতরণ করলে তারা চন্দ্রবিজয়ী চতুর্থ দেশ হিসেবে তালিকায় উঠে আসত। এটিই হতো চাঁদের দক্ষিণ প্রান্তের সবচেয়ে কাছাকাছি যাওয়া প্রথম নভোযান।
এ অভিযান পরিচালনা করতে ভারতের ব্যয় হয়েছে এক হাজার কোটি রুপি। এ অর্থ এর আগে পরিচালিত যেকোনো দেশের চন্দ্রাভিযানের খরচের তুলনায় বহুগুণ কম। ইসরো বলছে, একই ধরনের অভিযানে মার্কিন সংস্থা নাসার ২০ গুণ অর্থ খরচ হয়ে থাকে।
গত ২৩ জুলাই, অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটা থেকে উৎক্ষেপণ করা হয় চন্দ্রযান-২। দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় এক মিনিটের মধ্যে সেটিকে উৎক্ষেপণ করা হয়। তার এক সপ্তাহ আগে প্রথমবারের উৎক্ষেপণ বাতিল হয়। তথ্যসূত্র: বিবিসি, এনডিটিভি, জিনিউজ, নিউজ১৮।
আমরা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।