ফাইল ছবি

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

মিয়ানমারের প্রদত্ত তালিকায় নাম থাকা আরো ৩৩ রোহিঙ্গা শরনার্থী পরিবার সাক্ষাৎকার দিয়েছে। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) এবং বাংলাদেশের শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের (আরআরআরসি) প্রতিনিধিদের কাছে এই ৩৩ রোহিঙ্গা শরনার্থী পরিবার ৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার তাদের মতামত জানিয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছে। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে রোহিঙ্গাদের এই সাক্ষাৎকার নেয়া হয়। এরআগে, সর্বশেষ গত ২২ আগস্ট প্রত্যাবাসন তালিকায় নাম থাকা রোহিঙ্গা শরনার্থী পরিবার থেকে তাদের মতামত নেয়া হয়েছিল। দীর্ঘ ১৩ দিন সাক্ষাৎকার নেয়া বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার ৫ সেপ্টেম্বর সকাল ৯টা থেকে প্রত্যাবাসনের তালিকায় নাম থাকা রোহিঙ্গাদের পূণরায় সাক্ষাৎকার নেওয়া শুরু হয়। আরআরআরসি’র প্রতিনিধি, জাদিমুরা ও শালবাগান রোহিঙ্গা ক্যাম্পের ইনচার্জ মোহাম্মদ খালিদ হোসেন (উপ সচিব) সিবিএন-কে বলেন, প্রত্যাবাসনের তালিকাভুক্ত রোহিঙ্গা শরনার্থীদের আবার মতামত নেয়া শুরু হয়েছে। তাদের মতামত নির্ধারিত একটি ফরমে লিপিবদ্ধ করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে। মিয়ানমারের প্রদত্ত প্রত্যাবাসন তালিকায় নাম থাকা সব রোহিঙ্গাদের এভাবে পর্যায়ক্রমে প্রত্যেকের সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। দ্বিতীয় দফায় সাক্ষাৎকার দেয়া রোহিঙ্গা শরনার্থীরা কি মতামত দিয়েছে-এমন প্রশ্নের জবাবে ইউএনএইচসিআর-এর নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কর্মকর্তা সিবিএন-কে বলেন-আগের সাক্ষাৎকারের মতোই সকলে তোতা পাখির মতো তাদের নাগরিকত্ব ও পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত নাহলে, তারা মিয়ানমারে ফেরত যাবেনা বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে। এর আগে গত ২০ আগস্ট থেকে ২২ আগস্ট পর্যন্ত প্রত্যাবাসনের তালিকাভুক্ত ৩৩৯ টি রোহিঙ্গা শরনার্থী পরিবার অনুরূপ সাক্ষাৎকার দিয়েছিলো। পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী মিয়ানমারের প্রদত্ত ৩ হাজার ৫৪০টি পরিবারের প্রত্যাবাসন হওয়ার কথা থাকলেও গত ২২ আগস্ট নির্ধারিত তারিখে রোহিঙ্গা শরনার্থীরা স্বদেশে যেতে অনীহা প্রকাশের কারণে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্বিতীয় বারের মতো স্থগিত হয়ে যায়। প্রত্যাবাসনের তালিকাভুক্তদের মধ্যে শুধু শালবাগান রোহিঙ্গা শিবিরে ৯৩৩ পরিবারের ৩ হাজার ৪৫০ জনের নাম রয়েছে। প্রথম দফার সাক্ষাৎকারে রোহিঙ্গা শরনার্থীরা নাগরিকত্ব, নিরাপত্তা এবং গণহত্যাকারীদের আইসিসি কোর্টে বিচার, মিয়ানমারের সর্বত্র অবাধে চলা ফেরার স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার, ফেলে আসা ভিটেমাটি, সহায় সম্পদ ফেরত চেয়েছে। এবারের সাক্ষাৎকারেও রোহিঙ্গাদের একই মতামত পাওয়া গেছে। রোহিঙ্গা প্রশাসনের একজন সরকারি কর্মকর্তা সিবিএন-কে বলেন, শালবন রোহিঙ্গা ক্যাম্প ছাড়াও নতুন করে আগামী সপ্তাহে টেকনাফের লেদার ২৪ ও ২৫ নম্বার রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পের মিয়ানমারের প্রদত্ত প্রত্যাবসান তালিকায় নাম থাকা রোহিঙ্গা পরিবার গুলোর সাক্ষাৎকার নেওয়া হবে। তিনি সিবিএন-কে আরো জানান, তালিকায় নাম থাকা সকল রোহিঙ্গা শরনার্থীর ক্রমান্বয়ে সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে মতামত নেয়া হবে।