সংবাদদাতা :
কক্সবাজার শহরের টেকপাড়স্থ রবি কাস্টমার কেয়ারের পেছনে অবস্থিত সেমি পাকা বাড়িটি অবশেষে নির্মানে দীর্ঘদিন সন্ত্রাসী কর্তৃক বাধা, হুমকির অবসান হয়ে পুলিশের সাহসী পদক্ষেপের ফলে আদালতের রায় বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাড়িটি নির্মান সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় ৯০ বছর বয়োজেষ্ঠ্য বাড়ির মালিক জামালিদা বেগম বলেন-তাঁর মালিকানাধীন জমিতে এতোদিন সন্ত্রাসীরা রায় অমান্য করে বার বার বাড়ি নির্মানে বাধা সৃষ্টি করে। তারপরেও এলাকাবাসী প্রতিরোধ করার ফলে বাড়ি নির্মানে সন্ত্রাসীরা জমি দখল করতে সাহস পায়নি। তার কনিষ্ট ছেলে কৃষিবীদ এমরান কবির বলেন-বিষয়টি কক্সবাজার জেলা প্রশাসক হতে শুরু করে পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, ওসি, ওসি (তদন্ত)সহ সকলে অবহিত ছিল এবং যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়ার কারনে সন্ত্রাসীদের দীর্ঘদিনের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে বাড়িটি বিনা বাধায় নির্মানকাজ সম্পন্ন হয় এবং আদালতের রায় বাস্তবায়ন হয়। এর মাধ্যমে এলাকায় আদালতের আইন, প্রশাসনের উপর আস্থা আরো বেড়ে গেল। আরেক ছেলে শাহজাহান কবির বলেন-দীর্ঘ ৪০ বছর বসবাস করা একটি বসতভিটায় সন্ত্রাসীদের লুলোপ দৃষ্টি পড়ায় আমাদের বিভিন্ন সময় হুমকি, ধমকিসহ ভাংচুর করে কিন্তু আদালত, পুলিশ ন্যায় বিচার করায় আমরা সন্ত্রাসীদের অত্যাচার থেকে রেহাই পায়। ন্যায় বিচার ও সুশাসনের এটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে আজিবন।
উল্লেখ্য-কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ায় চাঁদা না পেয়ে কৃষিবিদ মোহাম্মদ এমরান কবির নামের এক সরকারী কর্মকর্তার বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাট করেছিল একটি দখলবাজ সন্ত্রাসী চক্র। এ ঘটনায় সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছিল ৫ জন। গত (১৭ আগস্ট-২০১৯) সন্ধ্যায় কক্সবাজার শহরের টেকপাড়া রবি কাস্টমার কেয়ারের পিছনে এই ঘটনা ঘটে।
সুত্র জানায়-কৃষিবিদ (উদ্যানতত্ত্ববিদ) মোহাম্মদ এমরান কবির কক্সবাজার শহরে তার নিজ বাড়ির বসতঘরে কিছু সংস্কার কাজ শুরু করেন। এতে করে পূর্বশত্রুতা ও জমির ওয়ারিশ দাবী করে বইল্যাপাড়ার মৃত গোরা মিয়া সিকদারের ছেলে সজল, টেকপাড়ার আবুল হোছেন মিস্ত্রির ছেলে জিয়াবুল হক, সিটি কলেজ এলাকার মাহবুব আলমের স্ত্রী মাহবুবা আলম সোলতানা, চাউলবাজার এলাকার এবাইদুল হক এর স্ত্রী কফিলাতুল মোস্তফাসহ অজ্ঞাত ১৯/২০ জন মিলে সশস্ত্র সজ্জিত হয়ে এমরান কবিরের কাছ থেকে চাঁদা দাবি করে আসছিল। এ দাবিকৃত টাকা তারা না পেয়ে সন্ধ্যায় এমরান কবিরের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে লুটপাটের ঘটনা ঘটায়। এ সময় তাদের বাধা দিলে শ্রমিক আবছার, শামসু, অলি আহমদ ও রশিদ আহমদকে পিটিয়ে আহত করা হয়।
এ ঘটনায় ইতিপূর্বে জমি মালিক জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও কক্সবাজার সদর মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছিল। এরআগেও ২০১৪ সালে ২ ডিসেম্বর কক্সবাজার সদর মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছিলেন। যার নাম্বার-৯৯/২০১৪। এরপরেও তাদের হুমকি-ধমকি থেমে ছিল না। পরবর্তিতে পুরাতন বাড়ি সংস্কার করতে গেলে উক্ত সন্ত্রাসীরা হয়রানীমূলকভাবে এমআর মামলা নং-১৯৫/২০১৭ ইং ফৌজদারী কার্যবিধি ১৪৪ ধারা দাখিল করে। সেই মামলাটি দীর্ঘ তিন বছর শুনানীসহ সহকারী কমিশনার ভূমি কক্সবাজার সদর উক্ত জমির দলিলাদী ও সকল কাগজপত্র যাচাই বাচাই করে সরেজমিনে তদন্তপূর্বক জমিটি চারিদিকে বাউন্ডারীসহ বসতবাড়ি নিয়ে বহুবছর ধরে প্রকৃত জমি মালিক এমরান কবির গংদের দখলে আছে মর্মে প্রতিবেদন দাখিল করলে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালত আদেশ ক্রমিক নং-১৮ তারিখ ৫/৮/২০১৯ পক্ষে রায় দেন। তারপরেও পক্ষে রায় থাকা সত্ত্বেও উক্ত সন্ত্রাসীরা বিভিন্ন সময় বাড়ি নির্মাণে বাধা সৃষ্টি ও প্রাননাশের হুমকিসহ মহড়া দেয়। যার প্রেক্ষিতে গত ৮/৮/২০১৯ ইং কক্সবাজার জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপারের কাছে জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করলে তা দ্রুত পুলিশ সুপার কক্সবাজার সদর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তদন্তকে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেন। এ নির্দেশের আলোকে পুলিশের সাহসী পদক্ষেপের ফলে এখন বাড়িটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, শহরের টেকপাড়া রবি কাস্টমার কেয়ার সেন্টারের পিছনে ১৯৮৩ সালে ভিন্ন ভিন্ন দলিলে ৬ শতক জমি ক্রয় করেন সরকারী কর্মকর্তা এমরান কবিরের পিতা। পরে সেই জমিটি পাকা বাউন্ডারী দিয়ে বসবাস উপযোগী করে বাড়ি নির্মান করে বসবাস করে আসছে।