অনলাইন ডেস্ক : নারী অফিস অফিস সহকারীর সঙ্গে জামালপুরের সাবেক ডিসি আহমেদ কবীরের আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার ঘটনা এখন দেশজুড়ে আলোচিত।ওই ঘটনার রেশ না কাটতেই এবার বরিশালের এক আওয়ামী লীগ নেতার একটি আ পত্তিকর ভিডিও নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় শুরু হয়েছে। যা গত সোমবার (২৬ আগস্ট) রাতে মুহূর্তেই সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

৫ মিনিট ৪৮ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে বরিশালের মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খোরশেদ আলম ভুলুকে এক নারীর সঙ্গে অ ন্তরঙ্গ মুহুর্তে দেখা যায়। যা রুমের এক কোণা থেকে মোবাইল ক্যামেরায় ভিডিওটি ধারণ করা হয়।
তবে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওটি সাবেক স্ত্রী’র বলে জানিয়েছেন ভাইস চেয়ারম্যান ভুলু। গত তিন বছর পূর্বে তালাক হওয়া সাবেক স্ত্রী’র পারিবারিক ওই ভিডিও নিয়ে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ তুলে কান্নায় ভেঙে পড়েন এই আওয়ামী লীগ নেতা।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, খোরশেদ আলম ২০১৬ সালে এক নারীর সাথে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত ছিলেন। পরবর্তীতে ওই নারীকে পাতানো বিয়ের মাধ্যমে অ নৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলে। সে সময় ওই নারীকে খুলনায় রাখেন ভুলু।
পরে ওই নারীর চাপে তিনি তাকে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চানপুর ইউনিয়নে নিয়ে আসেন। কিন্তু ওই নারী যখন বুঝতে পারেন যে খোরশেদ আলম তার সাথে ‘ছলনা’ করছেন তখন তিনি তাকে নানাভাবে চাপ দিতে থাকেন। এতে কাজ না হওয়ায় ওই নারী মোবাইল ফোনে তাদের অ ন্তরঙ্গ মূহুর্তের একটি গোপন ভিডিও ধারণ করেন। পরে ওই ভিডিও’র সাহায্যে খোরশেদ আলম ভুলুকে জিম্মি করে ১০ লাখ টাকায় ঘটনাটি মিটমাট করেন ওই নারী।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান খোরশেদ আলম ভুলু ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি নিজের বলে স্বীকার করেন।তিনি মুঠোফোনে সময়ের কণ্ঠস্বরকে বলেন, এটি তিন বছরের আগের ঘটনা। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা আমার রাজনৈতিক বিচক্ষণতায় ঈর্ষান্বিত হয়ে মানহানির জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।

ভাইস চেয়ারম্যান ভুলু বলেন, রাজনীতি করি এমপি মহোদয়ের সঙ্গে। তার কাছাকাছি থাকার চেষ্টা করি, এতে অনেকেই ঈর্ষান্বিত হোন। আমার দলেরই কিছু প্রতিপক্ষ আছে যারা গভীর ষড়যন্ত্র হিসেবে ভিডিওটি ছড়াচ্ছে। শুধু আমাকেই নয়, এমপি মহোদয়কে নিয়েও ছড়াচ্ছে বলে জানান তিনি।

খোরশেদ আলম ভুলু বলেন, ঘটনাচক্রে খালেদা নামের ওই নারীকে বিয়ে করেছিলাম। পরে জানতে পারি মেয়েটির চরিত্র ভালো না। তাই তাকে তালাক দেয়ার কথা বলি। এ কারনে সেই সময় কেউ হয়তো গো পনে আমাদের অন্তরঙ্গ মুহুর্তের ওই ভিডিওটি মোবাইল ফোনে ধারণ করে। পরে সেই সময় ওই ভিডিওটি প্রথমবার কোন একটি পক্ষ প্রকাশ করে।
তবে ওই সময় মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যানসহ সকলের উপস্থিতিতে খোলা তালাকের মাধ্যমে ওই নারীর সঙ্গে আমার ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। তারপর সে তারমতো চলে গেছে, আমি আমার মতো আছি।

আওয়ামী লীগের এই ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বলেন, আগামী মাসের শুরুতে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হবে, সেই নির্বাচনে আমি চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিয়েছি। এমন সময় ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ভিডিওটি ছড়ানো হয়েছে।
কান্নাজড়িত কন্ঠে তিনি বলেন, আমার বাবা হাজি, আমি নিজেও দুই বছর আগে হজ করে আসছি। আমার পরিবারে এমন লজ্জাজনক ঘটনার রেকর্ড নেই। নিজস্ব ব্যাপারটি নিয়ে আজ আমাকে মানুষের কাছে হেয় করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কোনো মানুষ মানুষকে নিয়ে এমনটি কখনোই করতে পারে না।

আমি বিষয়টি নিয়ে কথা বলার ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। যারা ৩ বছর আগের আমার সাবেক স্ত্রীর সঙ্গে ভিডিওটি এখন ছড়াচ্ছে, তাদের নামে আল্লাহর কাছে বিচান দেন খোরশেদ আলম ভুলু।