ফাইল ছবি

মোহাম্মদ হোসেন,হাটহাজারী :

চট্টগ্রামের হাটহাজারীতে হাত বাড়ালেই মিলছে ইয়াবাসহ নানান ধরনের মরণনেশা মাদকদ্রব্য। যে কোন সময়ের চেয়ে বর্তমানে মাদক ব্যবসায়ীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে গড়ে তুলছে মাদকের মজুদ। ঈদপূর্ব হতে শুরু করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে হাত বাড়ালেই মরণনেশা ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, গাঁজা, মদসহ নানান ধরনের মরণনেশা মাদকদ্রব্য পাওয়া যাচ্ছে। ইয়াবা নামক মরণনেশাই বেশি বিক্রি হচ্ছে বলে বিভিন্ন গোপন সূত্রে খবর পাওয়া যায়। এই সব মাদকদ্রব্য বেচা কেনার সাথে এক শ্রেণির প্রভাবশালীরা জড়িত রয়েছে বলে ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদকদ্রব্য বিস্তার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিভাবকগণের অভিমত।এতে করে উপজেলায় মাদকাসক্তের সংখ্যা আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। যার ফলে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ইভটিজিং, ছিনতাই, চুরি ও বখাটেপনা বাড়ছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় জনসাধারণ।এ তালিকায় রয়েছে উঠতি বয়সী যুবসমাজ, স্কুল ও কলেজের ছাত্র, সরকারি কর্মকর্তা, শিক্ষক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ।

হাটহাজারী উপজেলার শতাধিক অর্ধশত পয়েন্টে এই ভয়াল মাদকদ্রব্য বিকিকিনি হচ্ছে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে সচেতন মহলের দাবী বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নাম ব্যবহার করে বেশ কয়েকজন মাদক ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হাটহাজারীতে মাদক ব্যবসা করছে। এসব মাদক বিক্রির তালিকায় প্রভাবশালী পরিবারের সন্তানেরাও জড়িত। আর প্রভাবশালীদের কারণে প্রশাসনও রয়েছে ‘নীরব’। দিনের পর দিন প্রকাশ্যে মাদক ব্যবসা চলে আসার কারণেই পুরো উপজেলা জুড়ে এখন মাদকে সয়লাব হয়ে আছে। পুলিশ রাজনৈতিক দলের কর্মীকে মাদকসহ গ্রেফতার করলে সঙ্গে সঙ্গে তদবির শুরু করে দেয় প্রভাবশালী রাজনৈতিক দলের নেতারা। মাদকদ্রব্যের মামলায় মাদক ব্যবসায়ীদেরকে আদালতে চালান দেওয়ার কিছু দিন পরে জামিনে এসে পুনরায় মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ে।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, যারা কিছুটা বিত্তশালী তারাই ফেনসিডিলের দিকে ঝুঁকে রয়েছে। আর ‘ইয়াবা’ ‘গাঁজা’র দাম তুলনামূলক কম হওয়ায় এ দুটি মাদকের দিকে নজর ও আকর্ষণ প্রায় সব মাদকসেবীদের। উপজেলার বাসস্ট্যান্ড এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ১ নং রেল গেইট, ইছাপুর বাজার, হাটহাজারী সদর এলাকার মুন্সির মসজিদ, মিরের হাট, মাটিয়া মসজিদ, আব্বাছিয়ার পুল, রেলস্টেশন, রঙ্গিপাড়া, আদর্শগ্রাম, এগার মাইল, কলেজ গেইটসহ উপজেলার উদালিয়া, নাজিরহাট বাসস্ট্যান্ড, মুনিয়া পুকুর পাড়, সরকারহাট, মুহুরী হাট, চারিয়া নয়াহাট, চৌধুরীহাট বাদল পালের ঘাটা, ফতেয়াবাদ রেলস্টেশন, সন্দ্বীপ কলোনী, বড় দীঘিরপাড়, বুড়িশ্চর, মেখল ইউনিয়নের হাবিরের দোকান, মুন্নার দোকান, লেঙ্গার দোকান, বড় পীরের আস্তানা শরীফের পুর্ব পাশে নামার বাজার ও পশ্চিম মেখল ফকিরহাট এলাকার আনাচে-কানাচে, উত্তর মেখলের বেড়ি বাঁধের উপর, সত্তারঘাটসহ বিভিন্ন চায়ের দোকান, মেখলের ছিদ্দিকিয়া মসজিদ সংলগ্ন, মেখল কাজি পাড়ার (প্রকাশ হরাইল্লা পাড়া) প্রায় প্রতিটি চায়ের দোকানের আশপাশে, কাছিমার বটতল বাজার, গড়দুয়ারা কান্তর আলী হাট বাজার এবং আশপাশের খোলা জায়গা পুকুরপাড়, গড়দুয়ারা হালদা নদীর পাড় সহ উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন এবং পৌরসভার গুরুত্বপুর্ণ স্থানের একাধিক স্পটে অনেকটা প্রকাশ্যেই মাদকের বেচা-কেনা হচ্ছে। এ উপজেলায় ইয়াবা ট্যাবলেট, ভারতীয় বিভিন্ন মদ, ফেনসিডিল, গাঁজা, বাংলা চোলাই মদ থেকে শুরু করে সবধরনের মাদক পাওয়া যায় এবং, রাঙ্গামাটি থেকে বালুর ট্রাক ও মৌসুমী বিভিন্ন ফলের ট্রাকে করে নানা ধরনের মাদক ও মিয়ানমার থেকে টেকনাফ, কক্সবাজার হয়ে সড়ক পথে ইয়াবা ট্যাবলেটসহ বার্মার নানা ধরনের মদ আসে হাটহাজারীতে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সু-দৃষ্টি কামনা করেন সচেতন মহল।