ফরিদুল আলম দেওয়ান, মহেশখালী:

এক সেকেন্ডের নাই ভরসা বন্ধ হইব রং তামাসা দম ফুরাইলে হাইরে চক্ষু মুদিলে। মরমী শিল্পী ফিরোজ সাঁই যেমন এই গানটি গাইতে গাইতে স্টেজে মৃত্যু হয়েছিল। তেমনি বাড়ীতে যখন বিয়ের সাজ সজ্জার অায়োজন চলছিল ঘর ভরা এসেছে অাত্নীয় স্বজন ঠিক তেমনি সময়ে বিয়ে বাড়ীতে অাকস্মাৎ স্ট্রোক মরে না ফেরার জগতে চলে গেলেন বর। এ হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটেছে ২৬ অাগষ্ট মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের রাজুয়ার ঘোনা গ্রামে। মারা যাওয়া বরের নাম নুরুল ইসলাম (২৪)। সে উক্ত গ্রামের জিন্নাত অালীর ছেলে।  সোমবার তার বিয়ের দিন তারিখ থাকলেও দুদিন পিছিয়ে দিয়ে বিয়ের তারিখ ধার্য ছিল ২৯ অাগষ্ট বৃহস্পতিবার।

মৃত নুরুল ইসলামের বাবা জিন্নাত অালী জানান, ছেলের জন্য বিয়ে ঠিক করে সব অায়োজন শেষে অাত্নীয় স্বজনদের দাওয়াতও করা শেষ করেছি। অাগামী ২৯ অাগষ্ট বিয়ের দিন। একই ইউনিয়নের কালাগাজীর পাড়ার মৃত মঞ্জুর অাহমদের মেয়ে মোসাদ্দেকার সাথে ছেলের বিয়ে ঠিক হয়। এরই মধ্যে গতকাল ২৬ অাগষ্ট সোমবার ছেলে নুরুল ইসলাম বিকাল সাড়ে ৪ টার দিকে বাড়ীর পাশে জমিতে কাজ করতে গিয়ে বুকে ব্যথা অনুভব করে বাড়ীতে ফিরে এসে নিজ রুমে শুয়ে থাকে। কিছুক্ষণ পর অামি এসে তাকে ডাকা ডাকি করে কোন সাড়া শব্দ না পেয়ে কাছে গিয়ে দেখি ততক্ষণে ছেলের দেহ নিথর হয়ে গেছে। ধারণ করছি সে স্ট্রোক করেই মারা গেছে। তবে জন্ম থেকেই তার মৃগী রোগ জাতিয় একটি রোগ ছিল বলে জানান মৃতার বাবা জিন্নাত অালী।

এ দিকে বিয়ে বাড়ীতে অাকস্মাৎ বরের মৃত্যুতে পুরো এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া। সোমবার রাতে ওই বিয়ে বাড়ীতে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গেইটে তোরণ নির্মাণ সহ পুরো বাড়ী সামিয়ানা টাঙাগানোর কাজ চলছে। বিয়ে উপলক্ষে অাসা মেহমানে ভরে গেছে বাড়ী। মোট কথায় বিয়ের সকল অায়োজন শেষ করে বাড়ীতে চলছিল অানন্দ উৎসব। সেই মুহুর্তে অাকস্মাৎ হয়ে গেল হরিষে বিষাদ। বিয়ে মঞ্চে বর বেশে দেখতে অাসা নুরুল ইসলামকে দেখছে মৃত্যু শয্যায়। অবশেষে রাতে সেই কাংখিত হবু কনেও শেষ যাত্রায় দেখতে এলো কাংখিত হবু বরকে। এ পরিবেশ দেখে উপস্থিত সকলের চোখ ভিজে গেলো। অাজ ২৭ অাগষ্ট সকাল ১০টায় রাজুয়ার ঘোনা মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসা মাঠে তার জানাযা শেষে তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হবে।