আজাদ মনসুর ॥

পাঠক, একটা কৌতুহলের কথা বলি আজ। শেখার কোন শেষ নেই জানি। অনলাইন ভিত্তিক গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ নিয়ে যখন পড়ালেখা করেছি দু’য়েক বছর, অজানা অনেক কিছু এখন মাথায় এসে জমাট বাঁধছে। কখন যেন বমি করে ফেলি এই নিয়ে চিন্তার কোন শেষ নেই। আপনাদের পূর্ণ সমর্থন, সহযোগিতা ও দোয়া পেলেই সব কিছু অনুকূলে থাকলে সাংবাদিকতা নিয়ে পিএইচডি করবার ইচ্ছা আছে। যদি সম্ভাব্য তালিকায় কম্পিউটারসহ কয়েকটি বিষয় রয়েছে। তবে কম্পিউটার ও সাংবাদিকতা কেন্দ্রিক যখন আমার কাজ তাই এই দু’টো থেকে একটিকেই বেচে নিব পিএইচডি’র জন্য।

প্রিয় পাঠক যা বলছিলাম, গেল পর্বে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে এসেছিল যা হচ্ছে জন সাংবাদিকতা। যেহেতু সংগত কারণেই বিষয়টি পর্বগুলোকে ছুঁতে পেরেছে তাই জন সাংবাদিকতার গোড়াপত্তন নিয়ে কিছু লিখবার দরকার আছে। ৯০’র দশকের শেষের দিকে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এবং ডটকম ধারণার আর্বিভাব মূল ধারার গণমাধ্যমের আধেয় উপস্থাপনের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা করে। জ্য রোসেনস্ এর মতে প্রচলিত মূলধারার গণমাধ্যমে যারা পাঠক, দর্শক ও শ্রোতা তারাই হচ্ছে জন-সাংবাদিকতার নীতি-নির্ধারক তথা সাংবাদিক, মালিক এবং সম্পাদক। এক সময় যারা শুধু গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত তথ্য তথ্য-উপাত্তের ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতো, তথ্য প্রযুক্তির অপার সম্ভাবনার এই সময়ে তারাই সংবাদ তৈরি এবং প্রচার করছে।

জন-সাংবাদিকতার একটি গুরত্বপূর্ণ দিক হলো এটা নির্দিষ্ট ভৌগলিক কোনো সীমারেখার মধ্যে সীমাবদ্ধ বা নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। নির্দিষ্ট ভাষাভাষির সকলেই বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে বসে তার চারপাশের ঘটে যাওয়া ঘটনাসমূহ তুলে ধরতে পারেন, প্রতিবাদ জানাতে পারেন কিংবা একাত্মতা ঘোষণা করতে পারেন। কক্সবাজারের সাংবাদিকতার আজকের বিশ পর্ব।

আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে দেখছি। প্রযুক্তির ক্রমবর্ধমান বিকাশের সাথে সাথে সিটিজেন জার্নালিজমের মাধ্যমে একজন সচেতন নাগরিক তার নিজের জ্ঞান ও সৃজনশীলতা সমাজের প্রয়োজনে নিয়োজিত করতে পেরেছে। আর তাই, সাংবাদিকতার কোনো ধরনের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বা পরিচয় ব্যতিরেকে অনলাইন ভিত্তিক তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহার করে যখন কেউ তার চারপাশের ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনা, বিষয় সম্পর্কে নিজস্ব মতামত কিংবা সঠিক তথ্য-উপাত্ত লেখনী, তথ্যচিত্র, ইনফোগ্রাফিক্স, ক্ষুদেবার্তা, অডিও, ভিডিও বা অন্য কোনো ভাবে জনস্বার্থে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসমূহে প্রচার বা প্রকাশ করে, তাহলে তাকে জন-সাংবাদিকতা বলা যেতে পারে বৈকি। ফলে মিনিটেই ভাইরাল হয়ে সারা বিশ্বময় আলোড়ন তুলছে প্রতিনিয়ত।

নব্বই’র দশকে ইন্টারনেট ভিত্তিক world wide web এর আর্বিভাবকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের উদ্ভব। কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি’র ছাত্র ক্রিস অ্যান্ডারন্স বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সিয়াটলে গৃহীত বিতর্কিত সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ১৯৯৯ সালে ‘ইন্ডিমিডিয়া’ (Indy media) নামে জন-সাংবাদিকতার (সিটিজেন জার্নালিজম) প্রথম স্বীকৃত প্লাটফরম প্রতিষ্ঠা করেন।

বহুল ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিন গুগলের যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৮ সালে, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে ফেজবুক ২০০৪ সালে, টুইটার ২০০৬ সালে এবং অ্যাপলে-আই ফোন ২০০৭ সালে। এদের আর্বিভাব এবং উদ্ভাবন জন-সাংবাদিকতার ধারণা বিস্তারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। একইসাথে সহজ প্রযুক্তি নির্ভর স্মার্টফোনের আর্বিভাব জন-সাংবাদিকতা অগ্রযাত্রাকে আরো ত্বরান্বিত করছে। মোবাইল ফোনের মাধ্যমে ক্ষুদে বার্তা প্রেরণ, ছবি, ভিডিও ধারণ ও আপলোড করার সুবিধা জন-সাংবাদিকতা আরও সহজতর করেছে। তবে স্বীকৃত না হলেও জন-সাংবাদিকতার ধারণা একেবারেই নতুন কিছু নয়। আব্রাহাম জ্যাপ্রুডার জন এফ কেনেডি’র হত্যাকান্ডের ভিডিওচিত্রটি ধারণ করেছিলেন একটি সাধারণ ক্যামেরা দিয়ে। অনেকেই তাকে জন-সাংবাদিকতার জনক বলে মনে করেন।

এখন সিএনএন, বিবিসি এবং আল জাজিরার মতো মূল ধারার গণমাধ্যম অনেক ক্ষেত্রেই জন-সাংবাদিকতার ওপর নির্ভর করছে। সংবাদ সূত্র হিসেবে জন-সাংবাদিকদের ব্যবহারের পাশাপাশি অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিটি প্রতিবেদনের শেষাংশে ঘটনাস্থলের আশেপাশের পাঠকদের তাঁদের মতামত বা মন্তব্য তুলে ধরতে অনুরোধ করছে। আর সাম্প্রতিক এই ধারা থেকে বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। ইতিমধ্যে আমরা দেখেছি যে মূল ধারার গণমাধ্যমে প্রচারিত ও প্রকাশিত অনেক সংবাদই প্রথম ছড়িয়ে পড়েছিলো বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।

আরও যদি বলি, জন-সাংবাদিকতার বিভিন্ন নামে আখ্যা রয়েছে এর মধ্যে প্রান্তীক সাংবাদিকতা (Grassroots Journalism), নেটওয়ার্ক সাংবাদিকতা (Network Journalism), ওপেন সোর্স সাংবাদিকতা (Open Source Journalism), জন-মাধ্যম (Citizen Journalism), অংশগ্রহণমূলক সাংবাদিকতা (Participatory Journalism), হাইপার লোকাল সাংবাদিকতা (Hyper local Journalism), বটম-আপ সাংবাদিকতা (Bottom-up Journalism), স্ট্যান্ড অ্যালন সাংবাদিকতা (Stand alone Journalism), ডিস্ট্রিবিউটেড সাংবাদিকতা (Distributed Journalism) ইত্যাদি।

জন-সাংবাদিকতার বৈশিষ্ট্য নিয়ে যদি বলি প্রত্যেকেরই সাংবাদিক হিসেবে ভূমিকা পালনের সুযোগ রয়েছে। স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে পরিচালিত হওয়ার প্রবণতা লক্ষ্যণীয়। প্রকাশিত অডিও, ভিডিও এবং প্রতিবেদন সম্পর্কে আগ্রহী যে কারো মতামত প্রদানের সুযোগ থাকে। যে কেউ মন্তব্য, বিতর্ক বা আলোচনায় অংশগ্রহণ করতে পারে। সামাজিক দায়বদ্ধতা প্রবল থাকে। বিবেকপ্রষূত শুভবুদ্ধি জন-সাংবাদিকতার নৈতিকতার একমাত্র মাপকাঠি Slashdot-Ohm news মডেলের জন-সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে নিবন্ধিত ব্যবহারকারিদের মতামতের ভিত্তিতে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। Indy media মডেলের জন-সাংবাদিকতায় যে কেউ মন্তব্য এবং প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারে।

এক্ষেত্রে পাঠকের ওপর সিদ্ধান্ত গ্রহণের ভার ছেড়ে দেওয়া হয় যে, সে কোনটা গ্রহণ বা বর্জন করবে। Wiki based মডেলের জন-সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে আপলোড করা যে কোনো প্রতিবেদন চাইলে যে কেউ সম্পাদনা বা তথ্য-উপাত্ত যোগ করতে পারে, এতে করে কোনো একটা প্রতিবেদন বিশেষ কোনো ব্যক্তির একার নয়, বরং অনেকের অবদান থাকে তাতে।

২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ভিডিও চিত্র ধারণ করেছিলেন যারা তারা কেউই কিন্তু পেশাদার সাংবাদিক ছিলেন না। তখন আমি সাংবাদিকতায় আসিনি। তখন থেকেই কমবেশি কম্পিউটারের সাথে যুক্ত ছিলাম। পরে কম্পিউটার নিয়ে একাধিক পড়ালেখা শুরু হয়। যখন জেনেছিলাম অনলাইনে এই ধরনের খবর। ২০০৪ সালের শুরুর দিকে যখন আমার সাংবাদিকতার খাতে খড়ি তার ঠিক প্রায় এক বছর পর ২০০৫ সালের ৭ জুলাই লন্ডনের ভয়াবহ বোমা হামলার ঘটনাটি একজন সাধারণ নাগরিক মোবাইল ফোনে ধারণ করেছিলেন, যা পরবর্তী সময়ে বিবিসি, সিএনএন ও এমএসএনবিসিসহ অন্যান্য মূল ধারার গণমাধ্যমসমূহ প্রচার করেছে।

২০০৫ সালে আমেরিকার হ্যারিকেন ক্যাটরিনা ও রিতা আঘাত হানলে সাধারণ জনগণই স্বপ্রনোদিতভাবে স্থানীয় খবরাখবর সামাজিক যোগাযোগের বিভিন্ন মাধ্যম ব্যবহার করে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব হয়েছিলো। পাকিস্তানের আবোটাবাদে বিন লাদেনের গোপন আস্তানায় মার্কিন বিশেষ বাহিনীর সিক্রেট মিশন চলাকালীন সময়ে ঘটনাস্থলের ২ থেকে ৩ কিলোমিটারের মধ্য থেকে সোয়াইব আতাহার নামে একজন জন-সাংবাদিক লাইভ টুইট করেছিলেন। যা সত্যিকার অর্থে ঐদিন কী ঘটেছিল তার সঠিক বিবরণ বলে মনে করা হয়।

২০০৬ সালে বিষাক্ত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং আইসল্যান্ডের ব্যাঙ্কিং খাতের অব্যবস্থাপনার নানা দিক নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে উইকিলিকস এর জন্ম। কিন্তু ২০১০ সালে বাগদাদে মার্কিন বিমান হামলার ঘটনায় বেশ কয়েকজন বেসামরিক ইরাকিসহ রয়টার্সের দু’জন সাংবাদিক নিহত।

মূল ধারার অনেক গণমাধ্যমই প্রকৃত সত্য ঘটনাকে এড়িয়ে যায় এবং উইকিলিকস Collateral Murder শিরোনামের ভিডিও ফুটেজ প্রচারের মাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে চলে আসে। পরবর্তী সময়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থার দু’লাখ পঞ্চাশ হাজার গোপন নথি ফাঁস করে দিয়েছে।

সম্প্রতি পানামা পেপারস নামে পরিচিত মোজেস ফনসেকার মানি লন্ডারিং সংক্রান্ত গোপন নথি প্রকাশ হওয়াতে অনেক দেশের সরকার প্রধান থেকে শুরু করে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের পদত্যাগ পর্যন্ত করতে হয়েছে। ২০১০ সালের আরব বসন্ত এবং ২০১১ সালের লন্ডনের দাঙ্গার ঘটনায় জন-সাংবাদিকতার প্রতি মানুষের আস্থা আরো বৃদ্ধি পেয়েছে।

শুধু কি তাই, বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে জন-সাংবাদিকতা বাংলাদেশেও চর্চা হয়েছে এবং এখন হচ্ছে। যদি বলি ২০০৫ সালে ‘সামহোয়ারইনব্লগ’ বাঁধ ভাঙার আওয়াজ শিরোনামে বাংলাদেশে জন-সাংবাদিকতার সূচনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় ‘মুক্তমনা’সহ আরো অনেক জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত ব্লগ এর আর্বিভাব হয়েছে। এছাড়া মূল ধারার গণমাধ্যম ‘বিডিনিউজ২৪.কম’সহ অনেকেই এখন পাঠকের মতামতকে গুরুত্বের সাথে তুলে ধরার লক্ষ্যে সিটিজেন জার্নালিজম কর্নার চালু করেছে। এটা বাংলাদেশের জন্য ও সাধারণ মানুষদের জন্য ইতিবাচক দিক।

পাশাপাশি ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেজবুক তরুণ প্রজন্মের পছন্দের শীর্ষে অবস্থান করায় জন-সাংবাদিকতা বিস্তারের অবারিত সুযোগ রয়েছে। আগ্রহ, সচেতনতা ও জনকল্যাণমূলক বিবেককে পাথেয় করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একজন জন-সাংবাদিক হিসেবে যাত্রা শুরু করা এখন সময়ের দাবি। তবে এরই মধ্যে আমাদের সামনে জন-সাংবাদিকতার কিছু দৃষ্টান্তও রয়েছে। বিডিয়ার বিদ্রোহের ঘটনা, রাজন হত্যাকা-, গণজাগরণ মঞ্চ, মেহেরজান বিতর্ক, তেল-গ্যাস চুক্তি, ভিকারুনন্নেসা নুন স্কুলের ছাত্রী নির্যাতন, রিফাত হত্যাসহ শত শত সংবাদ এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে দেশ নয় শুধু সারা বিশ্বময় ছড়িয়ে যায়।

পাঠক, এতে করে সম্পূর্ণ বিকল্প একটি মাধ্যম যা বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের মতামত প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। প্রাকৃতিক বা মানব সৃষ্ট যে কোনো দৃর্যোগ-দুর্বিপাকে প্রত্যক্ষদর্শীর মতামত ও বর্ণনা প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টিও করে। শুধু তাই নয় সমাজের এলিট বা প্রভাবশালীদের প্রভাব থেকে মুক্ত সমাজের প্রান্তীক জনগোষ্ঠীর মূখপাত্র হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ তৈরি হয়। মূলধারার গণমাধ্যমে অপ্রকাশিত বা গুরুত্বহীন বলে বিবেচিত বিষয় এখানে তুলে ধরার সুযোগ রয়েছে।

বহুজাতিক কোম্পানি ও সরকারের প্রভাবমুক্ত রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে স্বাধীন মত প্রকাশের সুযোগ নির্দিষ্ট কোনো ভৌগলিক সীমানার মধ্যে আটকে না থেকে একজন বিশ্ব নাগরিক হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়সহ সার্বজনীন কল্যাণে ভূমিকা রাখার সুযোগ সৃষ্টি করে। তাছাড়া এটি নিয়ে অনেকে নেতিবাচক চিন্তাও করে থাকেন। আসলে ক্ষেত্রে বিশেষে এটিও আলোচনায় আসতে পারে। ধর্মান্ধ, উগ্রপন্থী বা সন্ত্রাসীদেও কার্যকলাপ প্রচারের হাতিয়ার হিসেবে জন-সাংবাদিকতায় চর্চা হতে পারে। মূলধারার গণমাধ্যমের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম বিশ্বাসযোগ্য বলেও মনে হওয়া সম্ভাবনাসহ অনেক কারণ রয়েছে।

যদি জন-সাংবাদিকতার মৌলিকত্ব নিয়ে এগোতে পারে তাতে করে দেশ ও জাতির জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। তবে এটির ও একটি নীতি থাকা বাঞ্চনীয়। নীতি ও নৈতিকতার বাইরে গেলে দেশ ও দশের ক্ষতি হবে নিশ্চিত। তাহলে কোন নীতি নিয়ে চলবে জন-সাংবাদিকতা? মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন কোনো তথ্য-উপাত্তের প্রচার ও প্রকাশ থেকে বিরত থাকতে হবে। জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও শ্রেণি নির্বিশেষে প্রত্যেকের নিজস্ব বিশ্বাস, সংস্কৃতি ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, ইচ্ছাকৃত বা উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে জন-গুরুত্বপূর্ণ নয় এবং ব্যক্তির মর্যাদাহানীকর কোনো বিষয়ের প্রকাশ ও প্রচার থেকে বিরত থাকা, নিজের বিবেকের প্রতি দায়িত্বশীল আচরণ করা।

ভালো বা খারাপ ঘটনা ঘটাতে মাধ্যমের নিজস্ব কোনো ভূমিকা থাকে না, বরং যে বা যারা যে উদ্দেশ্যে এটা ব্যবহার করেন, তার মাধ্যমেই খারাপ বা ভালো নির্ধারিত হয়। তথ্য-প্রযুক্তির অপার সম্ভাবনার এই যুগে সামাজিক যোগাযোগোর মাধ্যমসমূহ ব্যবহার করে অনেক অসাধ্য সাধন করা সম্ভব। এক্ষেত্রে মাধ্যমসমূহের একটু সচেতন ব্যবহারই আমাদের সমাজের কাঙ্খিত পরিবর্তন ঘটাতে পারে। চলবে…

লেখকঃ আজাদ মনসুর (এম.এ, এলএল.বি) শেষবর্ষ

আইটি স্পেশালিষ্ট, প্রণেতা-কক্সবাজার সাংবাদিক কোষ, সভাপতি-কক্সবাজার সাংবাদিক সংসদ (সিএসএস)

azadcox90@gmail.com ০১৮৪৫-৬৯ ৫৯ ১৬