মো. নুরুল করিম আরমান, লামা:

বান্দরবানের লামা উপজেলায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত ১৩ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আক্রান্ত রোগীরা হলেন, ফয়সাল হোসেন (১৯), কমরু সওদাগর (২৬), মো. ফারুক (৩৮), শাহ আলম (২৬), মো. ইসমাইল (৩২), মো. সাকিল (২১), চম্পা কর্মকার (২২), জায়েদ হোসেন (১১), মো. সোহেল (১২), কপিল উদ্দিন (৩৫), মহিউদ্দিন (১৮), আবুল কালাম (৫০) ও আমেনা বেগম (৩০)। এর মধ্যে ৫ জন চিকিৎসায় সুস্থ হয়েছেন। বাকীরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পদুয়া সরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেসহ বিভিন্ন বেসরকারি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। আক্রান্ত ১৩ জনই উপজেলার সরই ইউনিয়নের ক্যায়াজুপাড়া বাজার ও কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের বাসিন্দা বলে জানা গেছে। এদিকে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের মাঝে ১৫টি মশারি বিতরণ করেছে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল। এ সময় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাথোয়াইচিং মার্মা, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ফরিদ উল আলম, স্বাস্থ্য পরিদর্শক দিদারুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জানা যায়, সর্বপ্রথম কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনে কর্মরত মো. ইসমাইল নামে এক ব্যক্তির শরীরে ডেঙ্গু রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। এরপর পাশের ক্যয়াজুপাড়া বাজার এলাকায়ও এ রোগ ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি মেডিকেল টিম এলাকায় সম্ভাব্য রোগীদের রক্ত পরীক্ষা করলে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়। এদিকে পৌরসভা ও উপজেলা পরিষদের যৌথ উদ্যোগে সরই বাজার ও আশপাশের এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে ফগার মেশিন দিয়ে এডিস মশার ধ্বংসে অভিযান পরিচালনা ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে সভা করা হয়।

ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত সরই বাজার পাড়ার বাসিন্দা ফয়সাল হোসেন বলেন, মশা কামড় দেওয়ার পর হাতে বেশ বড় আকারের গুটি সৃষ্টি হয় ও যন্ত্রণা করে।

ইউনিয়নের দায়িত্বরত স্বাস্থ্য পরিদর্শক দিদারুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে মঙ্গলবার দিনব্যাপী ভ্রাম্যমান মেডিকেল টিম পরিচালনার মাধ্যমে সম্ভাব্য জ্বরে আক্রান্ত এমন অনেক রোগীকে পরীক্ষা করা হয়। তার মধ্যে ১৩ জনের শরীরে ডেঙ্গু জ্বর শনাক্ত হয়।

ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের সত্যতা নিশ্চিত করে লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মোহামুদুল হক বলেন, বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সাথে নিয়েছি। সম্ভবত ঈদের ছুটিতে অনেকে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে বাড়িতে আসায় তাদের মধ্য দিয়ে ডেঙ্গু বিস্তার লাভ করে। সরই পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়মিত ডেঙ্গু রোগ নির্ণয়ের জন্য ১টি মেডিকেল টিম কাজ করবে।

এ বিষয়ে লামা উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল বলেন, প্রথম বারের মত সরই ইউনিয়নে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত করা হয়েছে। এতে জনমনে আতংক বিরাজ করছে। তিনি বলেন, এডিস মশার বংশ-বিস্তার ঠেকাতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেহেতু সর্বপ্রথম কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের এক সদস্য ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে, সেহেতু আপাতত কোয়ান্টাম পল্লীতে দেশী-বিদেশী পর্যটক ও মেহমানদের আগমন বন্ধ রাখতে কর্তৃপক্ষ বলা হয়েছে।