ফাইল ছবি।

মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের বিষয়টি তদন্তের জন্য গঠিত ইন্ডিপেনডেন্ট কমিশন অব ইনকোয়ারির সদস্যরা সোমবার ১৯ আগস্ট সকালে কক্সবাজারের উখিয়াতে রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনে আসছেন। জাপানের সাবেক রাষ্ট্রদূত কেনজো ওশিমা এই প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। প্রতিনিধদলের অন্য সদস্যরা হচ্ছেন-প্রফেসর অং টুন থেট, প্রফেসর ইউশিহিরো নাকানিশি, লিনা ঘোষ এবং খিন মিউ মিয়াট সো। শরনার্থী ত্রান ও প্রত্যাবাসন কার্যালয়ের দায়িত্বশীল একটি সুত্র এ তথ্য সিবিএন-কে নিশ্চিত করেছেন। উচ্চ পর্যায়ের এই প্রতিনিধিদলটি সকালে বিমান যোগে কক্সবাজার পৌঁছে রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন ও সেখানে রোহিঙ্গা শরনার্থীদের সাথে মতবিনিময় এবং কক্সবাজারে উর্ধ্বতন কর্মকতাদের সাথে বৈঠকে মিলিত হবেন। প্রতিনিধিদলটি একইদিন বিকেলে বিমান যোগে কক্সবাজার ত্যাগ করার কথা রয়েছে।
এদিকে, ইন্ডিপেনডেন্ট কমিশন অব ইনকোয়ারির প্রতিনিধিদলটি রোববার ১৮ আগস্ট ঢাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন, পররাষ্ট্র সচিব এম. শহীদুল হক, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতিসংঘ অনুবিভাগ ও রোহিঙ্গা সেল, স্বরাষ্ট্র এবং দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ৬টি পৃথক বৈঠক করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছেন, এসব বৈঠকে তদন্ত কমিটির সদস্যদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, যেসব রোহিঙ্গা তাদের সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘনের তথ্য দেবে তাদের সুরক্ষার নিশ্চয়তা কী। পাশাপাশি কমিটি মিয়ানমারের প্রেসিডেন্টের কাছে রিপোর্ট জমা দেওয়ার পর এর ভবিষ্যৎ কী হবে, সেটিও জানতে চাওয়া হয়েছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে কক্সবাজারের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা সিবিএন-কে বলেন, রোববার ‘তাদের অধিকাংশ প্রশ্নের সদুত্তর বাংলাদেশ দিতে পারেনি।’ এ ধরনের ঘটনায় সাক্ষীর সুরক্ষা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ, যে রোহিঙ্গা মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিয়োগ করবেন, তিনি যখন রাখাইনে ফেরত যাবেন, তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে বলে এই কর্মকর্তা জানান। এছাড়া সাক্ষীদের বিষয়ে গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়ে তারা কী পদক্ষেপ নেবেন সেটিও জানতে চাওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের অনুরোধ করেছি, মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনার জন্য, যাতে করে জাতিসংঘ ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনসহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক তদন্ত দলকে যেন রাখাইনে কাজ করতে দেওয়া হয়।’ এছাড়া তাদের রিপোর্ট বাংলাদেশের সঙ্গেও শেয়ার করার অনুরোধ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
প্রসঙ্গত, ইন্ডিপেনডেন্ট কমিশন অব ইনকোয়ারির কাজ হচ্ছে-রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যেসব অভিযোগ আছে, সেগুলোর বহুমুখী তদন্ত করা এবং দোষী ব্যক্তিদের সাজা নিশ্চিত করা।