সিবিএন ডেস্ক:
সৌদি আরবের একটি তেলক্ষেত্রে শনিবার ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত শিয়াপন্থী হুথি বিদ্রোহীরা। ইয়েমেনে সৌদি-আমিরাতি জোটের সামরিক আগ্রাসনের জবাবে এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি করেছে হুথিরা। সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন তেল কোম্পানি আরামকো-র পক্ষ থেকেও এ হামলার কথা স্বীকার করা হয়েছে। তবে প্রতিষ্ঠানটির দাবি, হামলায় কেউ আহত হয়নি এবং এতে করে তেল সরবরাহ কার্যক্রমেও কোনও বিঘ্ন ঘটেনি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

ড্রোন হামলার ফলে শাইবাহ নামের তেলক্ষেত্রটিতে আগুন ধরে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছে আরামকো। বিশ্বের বৃহত্তম এ তেল কোম্পানির দাবি, হামলায় ‘সীমিত পরিসরে’ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও তারা এটি নিয়ন্ত্রণে সমর্থ হয়েছে।

হুথি বিদ্রোহীদের মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি বলেন, ‘আমরা সৌদি আরবের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলো থেকে বিদেশি প্রতিষ্ঠান ও বেসামরিক লোকজনকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। কারণ দেশটিতে আমাদের হামলার তীব্রতা প্রতিদিনই বাড়ছে। ভবিষ্যতে এসব হামলা শত্রুদের জন্য আরও বেদনাদায়ক পরিণতি ডেকে আনবে।’

তিনি বলেন, আগ্রাসী শক্তির যুদ্ধ বন্ধ করা ছাড়া এখন আর কোনও উপায় নেই। তাদের অবশ্যই ইয়েমেনিদের ওপর থেকে অবরোধ তুলে নিতে হবে।

হুথি বিদ্রোহীদের মুখপাত্র দাবি করেন, সৌদি আরবের শাইবাহ তেলক্ষেত্রকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে ১০টি ড্রোন হামলা চালানো হয়েছে।

২০১৪ সালে রাজধানী সানা দখলের পর সৌদি সমর্থিত ইয়েমেনের প্রেসিডেন্ট আবদু রাব্বু মনসুর আল হাদিকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করে হুথি বিদ্রোহীরা। তারপর থেকেই দেশের বাইরে থাকা হাদিকে ক্ষমতায় ফেরাতে ২০১৫ সালের জুনে ইয়েমেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট।

সৌদি জোটের বিরুদ্ধে প্রতিঘাতের অংশ হিসেবে সৌদি আরবের সীমান্তবর্তী বিভিন্ন প্রদেশে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা শুরু করে হুথি বিদ্রোহীরা। গত মে মাসের শেষদিকে পবিত্র নগরী মক্কা ও জেদ্দায় দুটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করা হলে তা ধ্বংস করার দাবি করে সৌদি প্রতিরক্ষা বাহিনী। প্রায় একই সময় সৌদির নাজরান বিমানবন্দরে তিন দফায় হামলা চালানোর দাবি করে হুথি বিদ্রোহীরা। ইয়েমেনের এই বিদ্রোহী গোষ্ঠী বলছে, তারা সৌদি আরব, ইয়েমেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ৩০০ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে টার্গেট করে হামলা অব্যাহত রাখবে।

হুথি বিদ্রোহীদের মুখপাত্র মুহাম্মাদ আবদুস সালামের দাবি, জাতিসংঘ সৌদি আরবের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে। সানার ওপর অবরোধ তুলে নেওয়ার বিষয়ে তারা কিছুই করতে পারেনি। সানা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ওপর অপরাধমূলক অবরোধ প্রত্যাহারে ব্যর্থ হয়েছে সৌদি সামরিক জোট। অথচ তাদের বিমানবন্দরগুলোও হুথিদের হামলার সক্ষমতার মধ্যে রয়েছে।
সূত্র: আল জাজিরা, পার্স টুডে।