ডেস্ক নিউজ:
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদেরকে বিরোধীদলীয় নেতা হওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন দলের বেশ কয়েকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য।

রাজধানীর বনানীতে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে শনিবার (১৭ আগস্ট) দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্যদের যৌথসভায় এ দাবি জানানো হয়। সভায় উপস্থিত একাধিক নেতা জাগো নিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

বেলা ১১টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টাব্যাপী চলা যৌথসভায় প্রেসিডিয়াম সদস্যরা জাতীয় পার্টির গঠনতন্ত্র মোতাবেক পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকে বিরোধী দলের নেতা হওয়ার প্রস্তাব দেন।

সভায় এরশাদের চেহলাম পালনের জন্য পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও এমপিদের এক লাখ টাকা করে দলীয় ফান্ডে জমা দেয়ার নির্দেশনা দেয়া হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। সভায় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গাসহ ৩৫ জন প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য উপস্থিত ছিলেন।

বৈঠক সূত্র জানায়, সভায় মূল আলোচনা হয়েছে এরশাদের চল্লিশা পালন ও বিরোধী দলের নেতা নির্বাচন প্রসঙ্গে। এরশাদের শূন্য আসন রংপুর-৩ এর উপ-নির্বাচন নিয়েও আলোচনা হয়েছে।

সভায় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য সাহিদুর রহমান টেপা বলেন, ‘এরশাদের চেহলাম কেন্দ্রীয়ভাবে রংপুরে করা উচিত। যেহেতু তাকে সেখানে সমাহিত করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘পার্টির গঠনতন্ত্র মোতাবেক পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরকেই বিরোধী দলের নেতা বানানো প্রয়োজন।’

পার্টির অপর প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘পার্টির সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। পার্টির গঠনতন্ত্র মোতাবেক পার্টির চেয়ারম্যান যেকোনো বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। সেক্ষেত্রে চেয়ারম্যান চাইলে বিরোধী দলের নেতা হতে পারেন।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন বলেন, ‘জিএম কাদেরকে বিরোধী দলের নেতা বানানো উচিত। কারণ, তার সঙ্গে পার্টির তৃণমূলের সম্পর্ক রয়েছে। আর পার্টির চেয়ারম্যান বিরোধী দলের নেতা হবেন-এটাই স্বাভাবিক।’

প্রেসিডিয়াম সদস্য এটিইউ তাজ রহমান বলেন, ‘পার্টির গঠনতন্ত্র মোতাবেক দল পরিচালনা করতে হবে। গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সর্বসম্মতিক্রমে বিরোধী দলের নেতা নির্বাচন করতে হবে।’

দলের আরেক প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী মামুনুর রশিদ বলেন, ‘পার্টির গতিধারা অব্যাহত রাখতে জিএম কাদেরকে সংসদের বিরোধী দলের নেতা বানানো দরকার। উনি এ দায়িত্ব গ্রহণ করুক-এটা নেতাকর্মী ও দেশবাসীর প্রত্যাশা।’

পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের তার বক্তব্যে বলেন, ‘জাতীয় পার্টি ঐক্যবদ্ধ আছে। জনগণের কল্যাণে যে ধরনের কর্মসূচি নেয়া দরকার তা ইতোমধ্যে করা হচ্ছে। বন্যা মোকাবিলা, ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও চামড়া ইস্যুতে আমরা রাজপথে সরব ছিলাম। আগামী ৩১ আগস্ট সারাদেশে একযোগে এরশাদের জন্য দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হবে।’

তিনি বলেন, ‘বিরোধী দলের নেতা কে হবেন সে বিষয়ে সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সিদ্ধান্তু নেয়া হবে। যাতে পার্টিতে কোনো বিভেদ সৃষ্টি না হয়।’

রংপুরের উপনির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘উপনির্বাচনে রংপুরের স্থানীয় নেতাদের কাছ থেকে প্রার্থী হিসেবে চারজনের নাম চাওয়া হবে। তার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।’

এ সময় পার্টির মহাসচিব মসিউর রহমান রাঙ্গা বলেন, ‘গঠনতন্ত্র মোতাবেক পার্টির চেয়ারম্যানকে সুপ্রিম পাওয়ার দেয়া আছে। আমাদের দলের মাঝে কোনো বিরোধ নেই। সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে বিরোধী দলের নেতা ও রংপুর-৩ আসনে মনোনয়ন দেয়া হবে।’