মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

ঈদে আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব, পাড়া প্রতিবেশী, স্বজনদের সাথে কুশল বিনিময়, পরস্পর খোঁজখবর নেয়া, আনন্দ উপভোগ করা একটা রেওয়াজ। শত শত বছর ধরে এ রেওয়াজ, ঐতিহ্য ও সভ্যতা চর্চা চলে আসছে এদেশে। এজন্য যেকোন ঈদ-পার্বনের আগে ও পরে মিলিয়ে কমপক্ষে ৩ দিন সরকারি ছুটি ঘোঘনা করা হয়। ঈদ, জাতীয় দিবস, সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা সরকার ঘোষিত অন্যান্য ছুটি গুলোতে আনন্দ, বিনোদন, কুশল বিনিময় তো দূরের কথা, অনেকে এই ছুটিই ভোগ করতে পারেনা। তাদের মধ্যে পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, হাসপাতালের জরুরি বিভাগ, আবহাওয়া দপ্তর, বিজিবি কর্তৃক সীমান্ত পাহারা ও হাসপাতালের ভর্তি থাকা রোগীর দায়িত্বশীল ডাক্তার, নার্স সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্যদের ছুটি কোনভাবেই হয়না। এটাই স্বাভাবিকভাবে এদেশে চলে আসছে নিয়মিত। এ বছর ঈদুল আযাহার ছুটিতে এ প্রক্রিয়াটির ব্যাপকতা ও পরিসর বৃদ্ধি পেয়েছে। তার অন্যতম কারণ হলো, দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়া ডেঙ্গু রোগের ভয়াবহতা। এ ভয়াবহতায় ঈদুল আযাহার ছুটি বাতিল করা হয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ, স্থানীয় সরকার বিভাগ ও দেশের সকল পৌরসভার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর সকল প্রকার সরকারি ছুটি। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি ছাড়া কর্মস্থল ত্যাগে কঠোরভাবে নিষেধ করা হয়েছে। ডেঙ্গুরোগ মাটি করে দিয়েছে, এদের ঈদুল আযাহার সব ধরনের প্রিয়জনদের সাথে সময় কাটানো, বিনোদন ও আনন্দ উপভোগ। লোকবল সংকটের কারণে দেশের সরকারি হাসপাতাল গুলোর চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৈনিক ২/৩ দফায়ও ডিউটি করতে হচ্ছে। সংসার ও পরিবারকে সময় দেয়া তো দূরের কথা, শ্রম দিতে দিতে ঘুম, খাওয়া-দাওয়াও নিয়মিত করতে পারছেননা তারা। রীতিমতো হাঁপিয়ে উঠছেন, হাসপাতালে দায়িত্বপালনরত সকলে। সামলাতে হচ্ছে, ডেঙ্গুজ্বর ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত সকল রোগীদের। অনবরত সেবা ও চিকিৎসা দিয়ে যাচ্ছেন তারা। কক্সবাজার স্বাস্থ্য বিভাগও এর ব্যতিক্রম নয়। কক্সবাজার স্বাস্থ্য বিভাগের কর্ণধার সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আবদুল মতিন সোমবার ১২ আগস্ট কোনরকমে ঈদুল আযাহার নামাজ আদায় করেছেন কক্সবাজার কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে। এর পরপরই নেমে পড়েছেন, যথারীতি কক্সবাজার স্বাস্থ্য বিভাগের বিভিন্ন গুরুদায়িত্ব পালনে। কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আবদুল মতিন কক্সবাজার জেলা সদর থেকে প্রায় ৭০ কিঃ মিঃ দূরে পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পরদিন মঙ্গলবার ১৩ আগস্ট সকাল সাড়ে ৮ টার দিকে হাজির হন (পরিদর্শনরত উপরের ছবি)। হাসপাতাল পরিদর্শন, হাসপাতালের সার্বিক ব্যবস্থাপনার খোঁজ খবর নেন এবং সেখানকার দায়িত্বশীলদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেন। পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আবদুল মতিন ছুটে যান, চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এ ভাবেই কেটেছে সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আবদুল মতিনের সরকারি ছুটির দু’দিন সোমবার ও মঙ্গলবার। স্যালুট, আপনাদের, যাঁরা প্রিয়জনদের সাথে ঈদুল আজহা উদযাপন নাকরে, দেশের রোগাক্রান্ত মানুষের হাসি ফুটানোর জন্য কাজ করে যাচ্ছেন অবিরাম। (তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন-রফিকুল ইসলাম, প্রধান সহকারী, কক্সবাজার সিভিল সার্জন অফিস)।

ছবি : পেকুয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮ টায় সিভিল সার্জন ডাঃ মোঃ আবদুল মতিন পরিদর্শন করছেন।