প্রেস বিজ্ঞপ্তি :
হোপ ফাউন্ডেশনের ফর উইমেন এন্ড চিলড্রেন অব বাংলাদেশ এর উদ্যোগে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ পান সপ্তাহ-২০১৯ উৎযাপিত হয়েছে। এই বছরের প্রতিপাদ্য বিষয় হলো ‘’ শিশুকে মাতৃদুগ্ধ পান করাতে পিতা-মাতাকে উৎসাহিত করুন’।

বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহকে সফল করতেই হোপ ফাউন্ডেশনের ‘ডেভলপিং মিডওয়াইভস্ প্রোজেক্ট’ এই উদ্যোগটি গ্রহণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটির চেইন্দা, দক্ষিণ মিঠাছড়িস্থ অফিসে বুধবার (৭ আগস্ট) এক আলোচনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। হোপ ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডাইরেক্টর কে. এম. জাহিদুজ্জামানের সভাপতিত্ব উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন কক্সবাজার জেলার সিভিল সার্জন ডা. এম এ মতিন।

উপস্থিত ছিলেন- হোপ হাসপাতালের চীফ মেডিকেল অফিসার ডা. ইসমাইল ইদ্রিস, সার্জন ডা. নির্ন্ময় বিশ্বাস, কো-অর্ডিনেটর (হোপ ফাউন্ডেশন) মো রাকিবুল হক, এডমিন ও ফাইন্যান্স অফিসার শামীম রেজা, ডেভলপিং মিডওয়াইভস্ প্রোজেক্টের রিসোর্স ফ্যাকাল্টি ডা. মোঃ শরিফুল কবির শাহীন, ডা. তারিকুল ইসলাম, ফ্যাকাল্টি-সুলতানা আফরিন, তানিয়া, জান্নাতুল আরাফা, মিনজু আরা, আয়েশা পারভিন সহ প্রমুখ। এছাড়া অনুষ্ঠানটি সম্পূর্ণ সঞ্চালনা করেন হোপ ফাউ-েশন-এর ডেভলপিং মিডওয়াইভস্ প্রোজেক্টের কোর্স কোঅর্ডিনেটর শারমিন নেসা।

সভায় জানানো হয়, মায়ের দুধের বিকল্প নেই। প্রতিটি শিশুর জন্মের পরপরই বুকের দুধ খাওয়াতে হবে এবং শিশুকে ২ বছর পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়ানোর বিষয়টি নিশ্চিত করতেই হোপ ফাউন্ডেশন কাজ করে যাচ্ছে। হোপ ফাউন্ডেশনের মিডওয়াইফরা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য কর্মীরাও আশেপাশের কমিউনিটির মায়েদেরকে এই বিষয়ে সচেতন করে যাচ্ছে। প্রসঙ্গত, হোপ হসপিটালে আগত মায়েরা যাতে বাচ্চাদেরকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে হসপিটালের অভ্যন্তরে একটি সু-সজ্জিত ব্রেষ্ট ফিডিং কর্নার ও অভিজ্ঞ কাউন্সিলর রয়েছে।

সিভিল সার্জন ডা. এম এ মতিন তাঁর বক্তব্যে বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে ৬৪% মায়েরা তার শিশুকে বুকের দুধ পান করান, বাকি ৩৬% মায়েরা বুকের দুধ পান করানো থেকে দূরে থাকেন যা আমাদের শিশু স্বাস্থ্যের জন্য বিপদজনক। এছাড়া তিনি বলেন জন্মের সাথে সাথেই মায়ের উচিত শিশুকে বুকের দুধপান করানো, এতে শিশুর স্বাস্থ্য ঝুকি কমে এবং সন্তানকে বুকের দুধ পান করানোর মাধ্যমে মায়ের স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি কমানো যায় ।

হোপ ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি ডাইরেক্টর কে. এম. জাহিদুজ্জামান বলেন, ‘মায়ের দুধের বিকল্প আর কোন কিছু নেই’। হোপ ফাউন্ডেশন এই বার্তাটি ডাক্তার, মিডওয়াইফ/নার্স ও মাঠ কর্মীদের মাধ্যমে কমিউনিটিতে সার্বক্ষনিক প্রচার-প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে।

চীফ মেডিকেল অফিসার ডা. ইসমাইল ইদ্রিস মায়ের বুকের দুধ পানের ভাল দিক সমূহ তুলে ধরতে গিয়ে বলেন, অনেক মায়েরাই ছয় মাসের আগেই শিশুকে কৃত্রিম দুধ বা বাজার চলতি বিভিন্ন খাবার খাওয়াতে শুর” করেন। কিন্তু, এতে তেমন কোনও সুফল পাওয়া যায় না, যা মায়ের বুকের দুধ থেকে পাওয়া সম্ভব। বরং অনেক সময় বাইরের খাবার খেলে পরবর্তিতে শিশুর শরীরে নানারকম সমস্যা দেখা দেয়।

সার্জন ডা. নির্ন্ময় বিশ্বাস বলেন, কক্সবাজারের মায়েরা অন্যান্য জেলার মায়েদের তুলনায় শিশুকে বেশি বুকের দুধ পান করায় যা শিশুর মানসিক বিকাশে অন্তত্য কার্যকরি। তবে এক্ষেত্রে মায়েদেরও পুষ্টিজাতীয় খাবার গ্রহণের দিকে নজর দিতে বলেন।
এছাড়া মায়ের বুকের দুধ পান করানোর উপর জোর দিয়ে কোঅর্ডিনেটর (হোপ ফাউন্ডেশন) মো রাকিবুল হক বলেন, শাল দুধ বাচ্চার জন্য প্রাকৃতিক টিকা, শাঁলদুধে ৯৭% পুষ্টির কথাও তিনি উল্লেখ করেন এবং বলেন, এতে বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
কক্সবাজারের কৃতি সন্তান ডা. ইফতেখার মাহমুদ (মিনার), এম.ডি তাঁর অক্লান্ত পরিশ্রমে মাতৃসেবা ও মাতৃমৃত্যু রোধে ১৯৯৯ সালে হোপ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। আর এই হোপ ফাউন্ডেশনই চট্রগ্রাম বিভাগের একমাত্র বেসরকারী প্রতিষ্ঠান যেখানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কাউন্সিল কর্তৃক অনুমোদিত তিন বছর মেয়াদী ডিপ্লোমা ইন মিডওয়াইফারি শিক্ষা কার্যক্রম চালু রয়েছে। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতায় ডিপ্লোমা কোর্সটি ২০১২ সাল থেকে পরিচালিত হচ্ছে, যার অর্থায়ন করছে যুক্তরাজ্য সরকার।