মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

কক্সবাজার জেলায় ডেঙ্গু পরিস্থিতি ক্রমাগত অবনতির দিকে। থামানো যাচ্ছেনা এডিশ মশার ভয়ানক আক্রমণ। রোহিঙ্গা শরনার্থী ক্যাম্পেও ডেঙ্গু আঘাত হেনেছে। চিন্তিত হয়ে পড়েছেন শরনার্থী ক্যাম্প ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তাগণ। ক্যাম্পের একজন শরনার্থী ইতিমধ্যে ডেঙ্গুতো আক্রান্ত হওয়ার কারণে তারা আরো বেশী শংকিত হয়ে পড়েছেন।

রোববার ৪ জুলাই রাত ৯ টা পর্যন্ত সমগ্র কক্সবাজার জেলায় ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত করা হয়েছে মোট ৫০ জন। তারমধ্যে, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে ৪২ জন, উপজেলা হাসপাতাল গুলোতে ২ জন সহ মোট ৪৪ জন। এদের মধ্যে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ২২ জন। চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন ২০ জন। এতথ্য কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ আবদুল মতিন ও ডেঙ্গু রোগ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইসএস) কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ কক্ষ সিবিএন-কে নিশ্চিত করেছেন।

কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ মোহাম্মদ মহিউদ্দিন সিবিএন-কে জানান, তাদের ডেঙ্গু রোগ পরীক্ষার কীট সহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতির কোন অভাব নেই। ভর্তি থাকা ডেঙ্গু রোগীদের মধ্যে কোন রোগী আশংকাজনক অবস্থায়ও নেই। তবে ডেঙ্গু রোগী সনাক্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত করা সংখ্যার মধ্যে কক্সবাজার সদর উপজেলার বাসিন্দা ২৩ জন, উখিয়া উপজেলার বাসিন্দা ৬ জন, তারমধ্যে ১ জন রোহিঙ্গা শরনার্থী, মহেশখালী উপজেলার বাসিন্দা ৩ জন, চকরিয়া উপজেলার বাসিন্দা ২ জন, রামু উপজেলার বাসিন্দা ২ জন, টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দা ২ জন, ঢাকা, নেত্রকোনা, লক্ষীপুর, নোয়াখালী, বান্দরবান, রাজশাহী’র বাসিন্দা রয়েছে ১ জন করে ডেঙ্গু রোগী রয়েছে। কুতুবদিয়া ও পেকুয়া উপজেলার কোন নাগরিকের এখনো ডেঙ্গু রোগ সনাক্ত করা হয়নি। এছাড়া চকরিয়া উপজেলার সবচেয়ে বড় প্রাইভেট স্বাস্থ্যসেবা দানকারী প্রতিষ্ঠান জমজম হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত করা হয়েছে এ পর্যন্ত ৬ জন। তারমধ্যে ২ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তারা হলো-চকরিয়া পৌরসভার আম্বিয়া খাতুন ও সাহারবিলের রহমতুল্লাহ। জমজম হাসপাতালে সনাক্তকৃত অন্যান্য ডেঙ্গু রোগীরা হলো-মোহাম্মদ মাহি- তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম প্রেরণ করা হয়েছে। পংকজ ভৌমিক, মোহাম্মদ উজ্জ্বল ও সানাউল্লাহ। এ তথ্য চকরিয়া জমজম হাসপাতালের ব্যাবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কবির সিবিএন-কে নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বিশিষ্ট মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডাঃ হুমায়ুন কবিরকে প্রধান করে চকরিয়া জমজম হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা টিম গঠন করা হয়েছে। জমজম হাসপাতালের এমডি গোলাম কবির আরো জানান, ঢাকা থেকে স্বাভাবিক মূল্যের চেয়ে অধিক মূল্য দিয়ে ডেঙ্গু জীবানু পরীক্ষার কীট আনা হয়েছে। যাতে ক্রাইসিস মুহুর্তে ডেঙ্গু জীবানু পরীক্ষার জন্য কীট সংকটে পড়তে নাহয়। অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে ২৪ রাতদিন ডেঙ্গু জীবানু পরীক্ষা ও ডেঙ্গু রোগীদের সেবা হচ্ছে বলে তিনি সিবিএন-কে জানান।

এদিকে, সারা বাংলাদেশের সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল (সিএমএইচ) গুলোতে ডেঙ্গু জীবানু পরীক্ষা ও ডেঙ্গু রোগীদের বিনামূল্যে সেবা দেয়ার কথা সেনাবাহিনী প্রধান শনিবার ৩ আগষ্ট ঘোষনা দিলেও কক্সবাজারের রামু সেনানিবাসে এখনো ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীদের সেবা দেয়ার কার্যক্রম শুরু হয়নি। রামু সেনানিবাসের ১০ম পদাদিক ডিভিশনের বিশ্বস্ত একটি সুত্র সিবিএন-কে এ তথ্য জানিয়েছেন। পরিপূর্ণ অবকাঠামো ও অন্যান্য সুবিধাদি রামু সিএমএইচ-এ এখনো গড়ে না উঠায় আপাতত ডেঙ্গু রোগীদের সেবা দেয়া যাচ্ছে না। আগামী ৪/৫ দিনের মধ্যে হয়ত ডেঙ্গু রোগী সনাক্ত ও চিকিৎসা দেয়া সম্ভব হতে পারে বলে সুত্রটি সিবিএন-কে জানিয়েছেন।

এদিকে, কক্সবাজারের সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ আবদুল মতিন ডেঙ্গু সংক্রান্ত যেকোনো তথ্য জানতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের (ডিজিএইসএস) কেন্দ্রীয় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রন কক্ষের সাথে সকাল ৯ টার পর যোগাযোগ করার জন্য গণমাধ্যম সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে পরামর্শ দিয়েছেন। এবিষয়ে সিভিল সার্জন ডাঃ মোহাম্মদ আবদুল মতিনের নিজস্ব ফেসবুকে প্রদত্ত স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
“কক্সবাজার জেলার ডেঙ্গু সংক্রান্ত সকল প্রকার তথ্য প্রতিদিন সকাল ৯.০০ ঘটিকার মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এর (DGHS) এর কন্ট্রোল রুম এ আপডেট আকারে নিয়মিতভাবে প্রেরন করা হয়। সংশ্লিষ্ট সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

DGHS কন্ট্রোল রুম- 01759-11 44 88
email: controlroomdghs@yahoo.com
Dr.Mohammed Abdul Matin
Civil Surgeon, Cox’s Bazar.”