জিয়াবুল হক, টেকনাফ:
টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় খেলার মাঠে কোরবানি গরু-মহিষ বেশ জমে উঠেছে। কক্সবাজার জেলার ক্রেতাদের সবার নজর ছিল টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়ন শাহপরীরদ্বীপ করিডোরের উপর। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের তৎপরতায় ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে এই উপজেলার সীমান্তবর্তী দেশ মিয়ানমার থেকে গরু-মহিষ আনার উদ্যোগ নেয়। এর সুবাদে মিয়ানমার থেকে আসা গরু, মহিষ , ছাগল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা কিনে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন। ৪ আগস্ট রোববার বিকালে টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, শাহপরীদ্বীপ বাজার পাড়া পরিদর্শন করে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
সরেজমিনে টেকনাফের পশুর হাটগুলো পরিদর্শনে দেখা যায়, ৪ আগস্ট রোববার বিকালে এই হাট থেকে ৯০টি গরু ও মহিষ কিনে ৫ ট্রাকে বোঝাই করেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী মো. মামুন সিকদার। তিনি জানান, চার-পাঁচ মণ ওজনের বড় গরু ও মহিষ এই হাটে বিক্রি হচ্ছে দেড় লাখ টাকা। এই পশু চট্টগ্রাম-ঢাকার বাজারে নিলে এক থেকে প্রায় লাখ টাকা করে দাম পাওয়া যাবে। কক্সবাজার জেলার বৃহত্তম কোরবানির পশুর হাট বসে টেকনাফ পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে। টেকনাফে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ করিডোর দিয়ে আসা মিয়ানমারের হাজার হাজার গরু, মহিষ এই মাঠে কেনাবেচা হয়। এছাড়া স্থানীয় গরু, মহিষতো আছেই।
রোববার টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হাটে দুই থেকে তিন মণ ওজনের গরু বিক্রি হয়েছে ৭০-৮০ হাজার টাকায়, তিন থেকে চার মণ ওজনের গরু ও মহিষ ৮০-৯০ হাজার টাকা এবং তার চেয়ে বড় গরু , মহিষ দেড় লক্ষ টাকা বিক্রি হয়েছে।
টেকনাফ পাইলট মাঠের গরু ব্যবসায়ী সমশু মিয়া জানান, হাটে প্রচুর গরু, মহিষ বিক্রি হচ্ছে। মিয়ানমার থেকে বিপুলসংখ্যক পশু আসায় এবার দামও কিছুটা কমেছে। এতে সাধারণ মানুষ খুশি হলেও স্থানীয় বিক্রেতারা কিছুটা হতাশ।
প্রবাসি সৈওকত চৌধুরী জানান, ৪ আগস্ট রোববার টেকনাফ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের হাট থেকে তিনি সাড়ে তিন মণ ওজনের একটি গরু কিনেছেন ৯০ হাজার টাকা দিয়ে। তবে টেকনাফ সদরে কচুবনিয়াপাড়ার মো. ইসলাম জানান, ঈদুল আজহায় বিক্রির জন্য তিনি ছয় মাস ধরে পাঁচটি গরু লালন পালন করে মোটা তাজা করেন । কিন্তু মিয়ানমার থেকে পশু আসায় এসবের দাম পাওয়া যাচ্ছে না। গত কয়েক বাজারে ৮০-৯৫ হাজার টাকার দর দাম হয়েছিল। এই গরু বিক্রি সম্ভব না হলে গরুগুলো তিনি বাড়িতে ফেরত নিয়ে যাবেন বলে জানান।
টেকনাফ সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, সপ্তাহ আগে মিয়ানমারের বিভিন্ন জেলা থেকে বিপুলসংখ্যক কোরবানির পশু টেকনাফ এসেছে। আরও বিপুল সংখ্যক গরু-মহিষ আসতে পারে তাই পশুর দাম আরও কমতে পারে।
শুল্ক বিভাগ সূত্র জানায়, দক্ষিন চট্রগামে মানুষের মাংসের চাহিদা পূরণ করতে সরকার ২০০৩ সালের ২৫ মে সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ করিডরটি চালু করে। সেই থেকে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করেছে করতে সক্ষম হয়েছে সরকার।
টেকনাফ শুল্ক কর্মকর্তা মো. ময়েজ উদ্দীন জানান, দক্ষিন চট্রগ্রামে একমাত্র টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ করিডর দিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে মিয়ানমার থেকে প্রচুর পরিমাণ পশু এসেছে। এতে দেশের গরুর চাহিদা পূরনের পাশাপাশি সরকারও প্রচুর পরিমাণ রাজস্ব পেয়েছে।