আলমগীর মাহমুদ

আমি এমন কোন তকমাওয়ালা নয় যে, যার কথায় দুধের নহর সুখের সাগরে স্রোতস্বিনী হইবে।বেশী কষ্ট না পাইলে হু.. হা.. শব্দ করা নিজ মর্যাদার আঘাত ভাবিয়া জীবন কাটাইতে কাটাইতে নিজেরে ফেইজবুককেন্দ্রিক বুদ্ধিজীবী বানিয়েছি। কিছু একটা ফেইসবুকে দিলেই ভাবি বিশাল একখান কর্তব্য কাম করলাম ।

সমাজটায় যার যার কাম সে করছে।ঠেলাওয়ালা ঠেলাগাড়ি ঠেলছে,আমলা, কামলা,লেখক, ইয়াবা কারবারি যে যার যার কর্মে।আসলে কাজের কাজ কি হচ্ছে! কেইবা আছে দেখার!

সৎ, বিবেকে নাড়া দেয়া যে মানুষটি সেও আর দেখে না।কারন সে বুঝে গেছে।একজনে বদল সম্ভব নয়।বদলে গেলেই বদলীর ভয়।উপরিওয়ালা নাখোশের আপদ। খুঁটির জোরে কালবৈশাখী। ঝক্কি ঝামেলা এড়াতে তাল মিলানী আর চাকরী তরুতাজায় মহাব্যস্ত। তাদেরও যে ছেলে সন্তান আছে!

জ্বী স্যার, জ্বী স্যার বলে বলে মুখে ফেনা উড়ানো ছাড়া আজ আর কোন শক্তিই যেন অবশিষ্ট নেই আমাদের।রইবেওবা কেমনে, কোন বস কি চায় তার অধঃস্তনের মুখে জ্বী স্যার,জ্বী স্যার ছাড়া নির্মম সত্যটির উচ্চারণ ! ফলে সুখ,শান্তি নির্বাসিত।আমলা কামলার ঐক্যে দিন যাচ্ছে ঠিকই ”লংকা জ্বলছেই”।আমরা কি এই বাংলাদেশ চেয়েছিলাম!

আমি বাংলাদেশের অংশহিসেবে উখিয়া টেকনাফের কথাই বলছি।দেশ আগাচ্ছে, সূচকে এসেছে অগ্রযাত্রা,পদ্মায় সেতু বানানোর মতো অসম্ভবও হচ্ছে সম্ভব,রোয়াইয়াঙাদের সুষ্ঠু সুশৃঙ্খল ফ্রেমে বেঁধে কেন সুখী করা যাচ্ছে না উখিয়া টেকনাফবাসীকে!
কেন বইছে তাঁদের ভূমিয় স্বত্ত্বা বিনাশের হাওয়া!পুরো জাতির দায় কাঁধে রোয়াইঙ্গার ভার বইতে যেয়ে নিজভূমে পরবাসী বনে আছে উখিয়া টেকনাফের জনগন।

বার,তের লাখের মতো রোয়াইঙ্গা। তাদের দেখভালে আরো দুইলাখ। একদিকে রোয়াইঙ্গা অন্যদিকে তাদের দেখতে আসা ভি,আই,পি। সি, আই,পি র প্রটোকলে রাস্তা বন্ধ থাকা।উখিয়া টেকনাফের তিনলাখ মানুষের আরাকান সড়কটি প্রায় আটার লাখ মানুষের রুটি রুজির ভারবাহী।

আরাকান সড়কটি অসহ্যের খাতায় নাম লিখাতে লিখাতে আজ ধানী জমিতে পরিনত। এই লংকায় জ্বলতে জ্বলতে বিক্ষুদ্ধরা রাস্তায় ধানের চারা রোপন করে দিয়ে জানিয়েছে প্রতিবাদ।তারপরও যে লাউ সেই কদু।

N.G.O এর গাড়ী গুলো এখন কালাচান রোডে।কালচান সিকদার ১৮০০সালের মাঝামাঝি সময়েরও কিছু পরে নিজ অর্থায়নে পুরো উখিয়া উপজেলার উপর দিয়ে জনসেবায় গড়েন রামু (ফইরাবাজার)চৌমুহনী পর্যন্ত একটি রোড।

মোঘল সম্রাট শাহজানের পুত্রদের উত্তরাধিকার দ্বন্দ্বের জেরে শা্হসুজা ঈদগাঁও ঈদগড় গর্জনীয়া হয়ে শুকমনিয়া গ্রাম হতে পাথরীকিল্লা যাবার পথে বিশাল বহরসহ রাস্তা গড়ে গড়েই যান। যাহ এখনো সুজা রোড নামে পরিচিত।ভালুকিয়ার কালাচান সিকদারের রোডটিও কালাচান রোড নামে বৃটিশদের জরীপে নথিভুক্ত আছে।

উল্লেখ্য ব্যক্তি উদ্যোগে শা্হসুজার ‘সুজা রোড’,কালাচান সিকদারের ‘কালাচান রোডের’ মতো এককভাবে জনহিতে গড়া। এতবড় অসাধ্য সাধ্যের ভেতরে এনে জনহিতে উৎসর্গ কারার বিরল কর্মটি এ দুজনেই করে যান। যাহ আজ এতদঞ্চলের ঐতিহাসিক নিদর্শনও।

আরাকান রোড রোয়াইঙ্গা রিলেটেড N.G.O রসদবাহীর কবলে পড়ে আজ ধানক্ষেত। এখন তাদের দখলে কালাচান রোড।আমাদের গ্রামের মেঠো পথটিতেও আজ তাদের দৌরাত্ম্য ।এটিও ধানক্ষেত হবার হবার অবস্থায়।

এটিও ধানক্ষেত হলে সুখের আশায় তারা আমাদের পাঁকঘরের রাস্তাটিও মাড়াবে।আমরা নীরব দর্শকেই রইবো চেয়ে! আর ভাববো “এদের কিছু কওন যাইবো না!টেংরায় শুকাতে দেয়া মা” র শাড়িটাও যদি তারা শখের বসে নিয়ে যায় তারপরও না!

লেখক :-বিভাগীয় প্রধান। সসমাজবিজ্ঞান বিভাগ।উখিয়া কলেজ কক্সবাজার।
alamgir83cox@gmail.com