মোঃ জয়নাল আবেদীন টুক্কুঃ
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় শিক্ষায় পিছিয়ে পড়া দূর্গম অবহেলিত দৌছড়ি ইউনিয়নের একমাত্র মাধ্যমিক বিদ্যালয় ১৯৯৮ সালে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গদের নিয়ে চেয়ারম্যান আলহাজ্ব মোঃ হাবিবুল্লাহ এক একর জমি স্কুলের নামে দানপত্র করে লেমু ছড়ি জুনিয়র হাইস্কুল নাম করণে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন ।

বিগত ২০০৪-৫ অর্থ বছরের পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ডের অর্থায়নে দুই তালা বিশিষ্ট একটি একাডেমিক ভবন করা হয়। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে আবার পার্বত্য উন্নয়ন বোর্ড হতে এক তালা বিশিষ্ট আরও একটি ভবন করা হয়। বর্তমানে চারজন শিক্ষক, দুইজন কর্মচারী নিয়ে প্রায় আড়াই শতেরও বেশি শিক্ষার্থী রয়েছে এ বিদ্যালয়ে। কিন্তু বিদ্যালয়টি দীর্ঘ ২১ বছর পেরুলেও ১২ হাজারেরও বেশি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ১৬৫ বর্গ কিলোমিটার আয়তনের দৌছড়ি ইউনিয়নের একমাত্র বিদ্যাপীঠটিতে মেলেনি পাঠদানের অনুমতি।

ফলে ২৪ কিলোমিটার পদ পাড়ি দিয়ে উপজেলার অন্য বিদ্যালয়গুলো থেকে বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশ নিতে হচ্ছে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের। মর্যাদাপূর্ণ বেতন-ভাতা থেকেও বঞ্চিত বিদ্যালয়টির শিক্ষক-কর্মচারীরা । রয়েছে প্রশিক্ষিত শিক্ষকেরও অভাব। পাঠদানের অনুমতি পেতে ২১ বছর ধরে নানাভাবে চেষ্টা চালানো হয়েছে। বর্তমানে বিদ্যালয়টির নাম পরিবর্তন করে দৌছড়ি উচ্চ বিদ্যালয় করা হয়েছে। তবুও মেলেনি কাঙ্ক্ষিত পাঠদানের অনুমতি। তবে স্থানীয়রা কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও অযোগ্যতাকে দায়ী করছেন।

গত কিছু দিন আগে বিদ্যালয়টির মাঠে বিশাল জন সভায় পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রী বীর বাহাদুরর উসৈশিং এমপি বিদ্যালয়টির পাঠদান অনুমতি, এমপিও ভুক্ত করতে সর্বোচ্চ সহযোগিতা করার ঘোষণা দেন।

এলাকাবাসী এ বিদ্যালয়টি পাঠদানের অনুমতি দেওয়ার জন্য
মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের হস্থক্ষেপ কামনা করেন।

এবিষয়ে নাইক্ষ্যংছড়ি ইউএনও সাদিয়া আফরিন কচি বলেন, দৌছড়িতে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় আছে এখনো স্কুলটি পাঠদানের অনুমতি পায়নি। তবে স্কুলটির পাঠদান ও এমপিও সহ উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সবধরণের সহযোগিতা করার আশ্বাস দেওয়া হয় বলে জানান প্রধান শিক্ষক মোঃ সাহাজান।

কমিটির সদস্য পল্লী চিকিৎসক আবদুল মন্নান ও সাবেক মেম্বার আবদুল নবী জানান.এ বিদ্যালয়ে ইউনিয়নের ১০ টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পিএসসি পাস করে শিক্ষার্থীরা ভর্তি হয়। আগে এ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হলেও এখন পাঠ দেওয়া হচ্ছে এসএসসি পর্যন্ত।

দুর্গম দৌছড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নাইক্ষ্যংছড়ির একটি বিদ্যালয়ের অধীনে ২০১৫ সাল থেকে দেওয়া হচ্ছে এসএসসি পরীক্ষা। সে হইতে এ পর্যস্ত জে এসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় সিংহ ভাগ শিক্ষার্থী অংশগ্রহণ করে পাস করেছে।

শিক্ষার্থীদের বেতন স্কুলের সম্পদের আয় ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় চলে এ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ে নবম ও দশম শ্রেণিতে মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখায় পাঠ দেওয়া হয়। চারজন শিক্ষক ও দুজন কর্মচারী দিয়ে কোনোমতে চলছে এ বিদ্যালয়। স্কুলের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান বলেন স্কুলটির ভবন, শিক্ষক,শিক্ষার্থী, সম্পদ ও খেলার মাঠসহ সবে আছে? নাই শুধু পাঠদান অনুমিত ও এমপিও। এ প্রতিষ্ঠানের জন্য অনেক করেছি আগামীতেও যা যা করতে হয় তিনি করে যাবেন বলে জানান।