ইমাম খাইর, সিবিএন:
ডেঙ্গু পরীক্ষায় সরকারী নির্ধারিত ফির অতিরিক্ত নেয়া হচ্ছে কিনা- তা তদারকি করতে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। সোমবার (২৯ জুলাই) বিকালে কক্সবাজার শহরের বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে এ অভিযান চালানো হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানসমূহ হলো- জেনারেল হাসপাতাল, সিআইসি, শেভরণ, সী-সাইড হসপিটাল ও ফুয়াদ আল খতীব হাসপাতাল।
সরকারীভাবে নির্দেশনা জারির পরের দিনেই অভিযান চালায় কক্সবাজারের প্রশাসন। তবে, কাউকে জরিমানা করা হয় নি।
অভিযানকারীরা ডিজিটাল হসপিটাল, সেন্ট্রাল হাসপাতাল, কক্স-ন্যাশনাল হসপিটাল, মেডিসন ল্যাব, ডক্টরস চেম্বারসহ আরো কয়েকটি বেসরকারী হাসপাতাল ও ক্লিনিকে যাননি।
অভিযানে ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর, জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিধান চন্দ্র রায়সহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর কক্সবাজার নিউজ ডটকম (সিবিএন)-কে জানান, ডেঙ্গু পরীক্ষার ক্ষেত্রে কোন হাসপাতাল যাতে সরকারী নির্ধারিত মূল্যের অতিরিক্ত না রাখে, সে জন্য অভিযান চালানো হয়েছে। অভিযানকালে ডেঙ্গু পরীক্ষা সংক্রান্ত পরীক্ষার মূল্য তালিকা চেক করা হয়েছে। কাউকে জরিমানা করা হয়নি।
প্রথম দিনের এই অভিযানে হাসপাতাল সংশ্লিষ্টদের সতর্ক করা হয়েছে বলে জানান ডা. মহিউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীর।
উল্লেখ্য, দেশের সব বেসরকারি স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠানে ডেঙ্গু টেস্টের ফি ৫০০ টাকার বেশি না নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ২৮ জুলাই স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিক) ডা. মো. আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ডেঙ্গুর NS1 (Antigen) পরীক্ষা করতে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা নেওয়া যাবে। CBC পরীক্ষার জন্য নেওয়া যাবে সর্বোচ্চ ৪০০ টাকা। এছাড়া IgG ও IgM (together) এই দুটি পরীক্ষা করাতে হবে ৫০০ টাকার মধ্যে। পরবর্তী ঘোষণা না আসা পর্যন্ত এই মূল্য তালিকা কার্যকর থাকবে।

এদিকে, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে এ পর্যন্ত ১৪ জন ডেঙ্গু রোগি শনাক্ত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে।
তবে, এই ১৪ জন রোগিই কক্সবাজারের বাইর থেকে ডেঙ্গু জীবানু বহন করে নিয়ে আসে। এখনো পর্যন্ত কক্সবাজারে বসবাসকারিদের মধ্যে কোন ডেঙ্গু রোগি পাওয়া যায়নি। শনাক্ত ১৪ জনের মধ্যে একজন মারা গেছে, ১০ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে ফিরে গেছে, ৩ জন ভর্তি রয়েছে।
ভুল চিকিৎসা হলে এবং সতর্ক না থাকলে মৃত্যুর ঝুঁকির শংকা রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।
২৫০ শয্যার কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডা: মো: মহিউদ্দিন জানান, কক্সবাজারে বসবাস করে এমন কোন ডেঙ্গু রোগি পাওয়া যায়নি। যে ১৪ জন শনাক্ত হয়েছে তারা সবাই ঢাকা থেকে ডেঙ্গু জীবানু নিয়ে কক্সবাজারে এসেছে। আর যে তিন জন ভর্তি রয়েছে তাদের একজন নারায়নগঞ্জ থেকে অন্য দুইজন ঢাকা থেকে ডেঙ্গু জীবানু বহন করে কক্সবাজারে এসে চিকিৎসা নিচ্ছে। গত ৫ দিনে শনাক্ত করা ১৪ জনের মধ্যে ১০ জনকে চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়েছে। একজন চট্টগ্রামে প্রেরণের সময় পথিমধ্যে মারা যান।
ডা: মো: মহিউদ্দিন জানান, হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগিদের চিকিৎসায় বিশেষ টিম গঠন করা হয়েছে। ২৪ ঘন্টা এই টিম কাজ করছে।