ফরিদুল আলম দেওয়ান, মহেশখালী:

মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক ইউনিয়নের পূর্ব পূঁইছড়া গ্রামে দুই স্ত্রী ও ৪ সন্তানের জনক এক লম্পট মামাতো ভাই কতৃক ১২ বছরের প্রতিবন্ধী এক কিশোরী স্কুলছাত্রী ফুফাতো বোন ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ২৭ জুলাই শনিবার বিকাল ২টায় এ ঘটনা ঘটে। অাত্নীয় স্বজনের মধ্যে ঘটা এ জঘন্য ঘটনাটি স্থানীয় ভাবে মিমাংসার করে ধামা চাপা দিতে কথিত সমাজ সরদার ও কতিপয় মোড়ল জাতিয় সালিশকার নামক ধান্ধাবাজরা ধর্ষিতার মাকে নানা ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও চাপ প্রয়োগ করে ঘটনার দিন গভীর রা পর্যন্ত দফায় দফায় লবিং করে। তবে শনিবার রাত ১১টায় এলাকাবাসী ধর্ষিতাকে উদ্ধার করে তার মা সহ থানায় পাঠালেও তারা মধ্যস্থতাকারিদের প্রলোভনে থানায় না গিয়ে ফেরৎ অাসে। ধর্ষিতা কিশোরী হোয়ানকের একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী।
ধর্ষিতা কিশোরীর স্বামী পরিত্যক্ত মা অাম্বিয়া খাতুন অভিযোগ করেন, সে স্বামী পরিত্যাক্ত হওয়ার পর থেকে ৩ ছেলে মেয়ে নিয়ে নিজ গ্রামে একটি ঝুপড়ি দোকানে নাস্তা বিক্রি করে জীবিকা নির্বাহ করে। ২৭ জুলাই শনিবার সে তার শারীরিক ও বাক প্রতিবন্ধী মেয়েকে বাড়ীর পার্শ্ববর্তী খালা সিরাজ খাতুনের বাড়ীতে রেখে তারা দুই বোন ককসবাজার শহরে অবস্থানকারি তাদের মায়ের নিকট কাজে যায়। খালার বাড়ীতে দুই ভাগিনা বউ ছিল। তারাও প্রতিবেশীদের বাড়ীতে গেলে কিশোরীকে একা পেয়ে বাড়ীতে দরজা বন্ধ করে অাটকিয়ে তারই অাপন মামাতো ভাই ২ স্ত্রী ৪ সন্তানের জনক মৃত গোলাম কুদ্দুছের পুত্র নুর হোসেন (৩০) বাড়ীতে ঢুকে কিশোরীকে মুখ বেঁধে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে। এ সময় ধর্ষিতা কিশোরীর অার্ত চিৎকারে প্রতিবেশী লোকজন ও তার দুই খালাতো ভাইয়ের বউ ঘটনা দেখে ফেললে ধর্ষক পালিয়ে যায়। সন্ধ্যায় মা ও খালা বাড়ীতে অাসলে কিশোরী তাদেরকে ঘটনার কথা জানান। পরে ধর্ষিতার মা মেয়েকে নিয়ে পার্শ্ববর্তী হোয়ানক টাইম বাজারে অবস্থিত পুলিশ ক্যাম্পে যাওয়ার পথে টাইম বাজার থেকে স্থানীয় সমাজের নেতারা তা সালিশে মিমাংসা করে দেওয়ার অাশ্বাসে তাদেরকে ফিরিয়ে নিয়ে যায়। ইতিমধ্যে রাত ১১টার দিকে ধর্ষিতাকে নিয়ে তার মা পুনরায় টাইম বাজারে এসে স্থানীয় গন্যমান্য লোকজনের পরামর্শে থানায় মামলা করতে সিএনজি যোগে রওয়ানা দিলেও পরক্ষণে জানা যায় তারা গ্রাম্য মোড়লদের হুমকী ও ভয়ভীতিতে থানায় না গিয়ে বাড়ী ফিরে অাসে বলে জানা গেছে। এরই ফাঁকে ধর্ষক নুর হোসেন পালিয়ে অাত্নগোপন করে। এ দিকে গতকাল ২৮ জুলাই বিকাল ৪ টায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ধর্ষক নুর হোসেনের অপর ৩ ভাই জামাল হোছন,অানোয়ার পাশা ও মোঃ হোছন তাদের ভাইয়ের দায়ভার নিজেরা নিয়ে স্থানীয় কথিত সালিশকারদের সহায়তায় ধর্ষিতার মাকে মামলা করলে বিভিন্ন ঝামেলার ভয়ভীতি দেখিয়ে বশে নিয়ে ৬০ হাজার টাকায় অাপোষ মিমাংসার জন্য দফারফা করলেও জরিমানার টাকা পরে দওয়ার শর্তে ঘটনাটি ধামাচাপা দেওয়ার পূর্ণাঙ্গ রুপ দেয় বলে জানা গেছে। খোঁজ নিয়ে অারো জানা যায়, ধর্ষক নুর হোসেনের এক স্ত্রী ঘরে রয়েছে। ধর্ষণের ঘটনার দিন শনিবার রাত ১২ টায় তার স্ত্রী এক পুত্র সন্তানও প্রসব করে। তার অপর স্ত্রী দুই সন্তান সহ বান্দরবান এলাকায় থাকে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মহেশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রভাষ চন্দ্র ধর বলেন, এই ঘটনার ব্যাপারে আমি কোনো অভিযোগ পাইনি এবং অবগতও হয়নি। বিষয়টির ব্যাপারে আমি খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।