শাহিদ মোস্তফা শাহিদ :

বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ভারতীয় লবনসহ আরো ৬ টি ট্রাক জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন ও বিসিক কর্মকর্তারা। এ নিয়ে জব্দের সংখ্যা দাড়ালো ১১ টি। ২২ জুলাই রাত আনুমানিক ১০ টার দিকে ইসলামাবাদ ইউনিয়নের খোদাইবাড়ীস্থ রাশেদ ফিলিং স্টেশন থেকে এ গাড়ী গুলো জব্দ করা হয়। লবনের পরিমান আনুমানিক ৭০ টন হবে বলে লবন মিল মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে। ইসলামপুর লবন মিল মালিক সমিতির সভাপতি শামশুল আলম আজাদ জানান, লবন মিল মালিক তৈয়বুর রহমান অধিক লাভের আশায় ভারতীয় নিষিদ্ধ লবন অবৈধ ভাবে কক্সবাজারে এনে মজুদ করে রাখছিল। গত ২০ জুলাই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশের সহযোগিতায় আনুমানিক ৬০ টন লবনসহ ৫ টি ট্রাক জব্দ করেন।তারা জানতে পেরেছেন গত ২০ জুলাই চট্টগ্রামের মাঝির ঘাট থেকে ২২ টি লবন বোঝাই ট্রাক ইসলামপুরের উদ্দেশ্যে ছেড়েছে। ঐ দিন গ্রামীন সল্ট নামের একটি লবন মিলে মজুদ করার সময় স্থানীয় ব্যবসায়ী ও লবন মিল মালিকরা জব্দ করে ৫ টি ট্রাক। খবর পেয়ে অপরাপর ট্রাক গুলো কৌশলে অন্যত্রে লুকিয়ে রাখে। এমন কি ২২ জুলাই ভোরে এক ট্রাক ভারতীয় লবন গ্রামীন সল্টে আনলোড করে বলে জানা যায়। জব্দকৃত লবন গুলোর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গাড়ী গুলো ছাড়িয়ে নিতে তৈয়বুর রহমান বিভিন্ন দপ্তরে ধর্ণা দিয়ে ব্যর্থ হন। লবন মিল মালিক সমিতির নেতাকর্মী ও স্থানীয় লবন ব্যবসায়ীরা আমদানিকৃত লবন গুলো অবৈধ পথে আনা এবং নিষিদ্ধ বলে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে মৌখিক অভিযোগ করেন।বিষয়টি আমলে নিয়ে এবং অন্যন্যা ট্রাক গুলোর অবস্থান নিশ্চিত হন প্রশাসন। এর আগে আসরের দিকে আরো একটি ট্রাক লবন আনলোড করার সময় জব্দ করেন স্থানীয়রা। পরে সেটিও প্রশাসনের কাছে তুলে দেন। পরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে ইউএনও এইচ, এ. মাহফুজুর রহমান, বিসিক কক্সবাজারের এজিএম ছৈয়দ আহমদ,ঈদগাঁও তদন্ত কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত ইনচার্জ আবু বকর ছিদ্দিক,এএসআই মহি উদ্দীনসহ একদল পুলিশ রাশেদ ফিলিং স্টেশনে পার্কিং করে রাখা আরো ৫ টি ট্রাক জব্দ করে ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালামের জিম্মায় রাখেন। মিল মালিক সমিতির সভাপতি শামশুল আলম আজাদ  জানান, সরকারের ঘোষণা বিদেশী লবন আমদানি নিষিদ্ধ থাকা সত্বেও অবৈধ ভাবে ইসলামপুর লবন শিল্প এলাকায় এনে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও মিল মালিকদের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলার কারনে আমদানি কারক তৈয়বুর রহমানের বিরুদ্ধে লবন মিল মালিক সমিতির পক্ষ থেকে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। আজকালের মধ্যেই মামলা দায়ের করা হবে। অপর দিকে তৈয়বুর রহমান বলেন, সরকারকারের নিয়মনীতি মেনে বৈধ ভাবে লবন গুলো তিনি আমদানি করেছেন। ইসলামপুরের কিছু মিল মালিকের সহ্য হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। সোনালী সল্টের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ শরীফ কোম্পানি বলেন,বিদেশ থেকে লবন আমদানি বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে বার বার হুঁশিয়ার দেওয়ার পরও দেশীয় লবনকে বৃদ্ধ আঙ্গুলী দেখিয়ে গ্রামীন সল্টের স্বত্বাধিকারী তৈয়বুর রহমান ক্ষমতার জোরে অবৈধভাবে লবন আমদানি করে প্রান্তীক লবন চাষা ও মিল মালিকদের পথে বসিয়ে দেওয়ার চিন্তা করেছিল। ইসলামপুরের আপমর জনসাধারণ তা প্রতিরোধ করে দিয়েছে। ইসলামপুর ইউনিয়ন আঃলীগ সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান চৌধুরী জানান, দেশে পর্যাপ্ত পরিমান লবন উৎপাদন হয়েছে এ মৌসুমে। চাষারা দেশীয় লবন বিক্রি করলে লাভবান হত। অল্প দামে ভারতীয় লবন এনে স্থানীয় মিল মালিক ও চাষাদের প্রতি অন্যায় করা হয়েছে। জানতে চাইলে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এইচ এম মাহফুজুর রহমান এবং বিসিকের এজিএম ছৈয়দ আহমদ বলেন, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে লবন ভর্তি ট্রাক গুলো জব্দ করা হয়েছে। মামলা হলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।