বিশেষ প্রতিবেদক, চকরিয়া:
চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদের উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী বৃহস্পতিবার। কিন্তু ইউনিয়নটির বিগত পাঁচটি নির্বাচনের অভিজ্ঞতায় আতঙ্কিত এবারের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা। তারা এবারের নির্বাচনকে শতভাগ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য করতে নির্বাচন কমিশন, জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে বেশ কয়েকটি দাবি লিখিতভাবে উপস্থাপন করেছে। এসব দাবি পূরণ করে এবারের নির্বাচনকে একটি মডেল নির্বাচন হিসেবে উপহার দিতে নির্বাচন কমিশনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন সিংহভাগ প্রার্থী।
আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক মাইন উদ্দিন মুহাম্মদ শাহেদ লিখিতভাবে দাবি জানিয়েছেন, নির্বাচনকে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ করতে ৯টি কেন্দ্রের প্রত্যেকটিতে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রদান, সরকার দলীয় বড় নেতার প্রভাবমুক্ত রাখা, নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনকারী প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি প্রদান করা। এছাড়া রাতের আঁধারে ভোট ডাকাতি রুখতে ভোটগ্রহণের দিন সকালেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার সরবরাহ করারও দাবি এই প্রার্থীর।
নির্বাচনকে শতভাগ কলঙ্কমুক্ত করতে একই দাবি করেছেন আরেক স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটর সাইকেল প্রতীকের ফরিদুল আলম, রজনীগন্ধা প্রতীকের হাসনাত মো. ইউসুফ, চশমা প্রতীকের রিদুয়ানুল হক, অটোরিক্সা প্রতীকের মো. ইখতেয়ার উদ্দীন, ঘোড়া প্রতীকের নাজমুল হাসান লিটন। নির্বাচনে মোট ৮ জন চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। অন্য দুই প্রার্থী হলেন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও নৌকা প্রতীকের গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, বর্তমান ইউপি সদস্য ও টেলিফোন প্রতীকের রফিক আহমদ।
নির্বাচন কমিশনে করা দাবিতে আনারস প্রতীকের শাহেদ অভিযোগ করেছেন, ভোটের দিন ঘনিয়ে আসার সাথেই অশান্ত হয়ে উঠেছে পরিবেশ। এজন্য সরকার দলীয় বড় নেতা ও নৌকার প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন, তার ভাইসহ দলীয় ক্যাডাররা দায়ী।
বিগত ২০১১ সালেও প্রার্থী হয়েছিলেন জানিয়ে শাহেদ বলেন, ‘ওইসময় আমার নিশ্চিত বিজয় ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছিল ভোট ডাকাতির মাধ্যমে। এবারও একই কায়দায় রাতের আঁধারে বা দিনের বেলায় প্রকাশ্যে ভোট কারচুপির গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এই অবস্থায় হুমকি-ধামকি ছাড়াও প্রশাসনিক কর্মকর্তা ইউএনও এবং ওসির মাধ্যমে ভোটের ফলাফল পাল্টে দেওয়ারও পূর্বাভাস পাচ্ছি আমরা। এই ধরণের কোন কিছু এখানে হলে আইন-শৃক্সক্ষলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ঘটবে। যা কোন অবস্থাতেই কাম্য নয়।’
বিএনপি সমর্থিত মোটর সাইকেল প্রতীকের ফরিদুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘অতীতের অভিজ্ঞতায় এখানে কোনসময় সুষ্ঠু নির্বাচন হয়নি। প্রিসাইডিং অফিসার হিসেবে যারা দায়িত্ব পালন করেছেন তাদেরকে হাত করে এবং পুলিশের সহায়তায় বার বার ভোট ডাকাতি হয়েছে। তাই এবারও একই ধরণের নির্বাচন হওয়ার পূর্বাভাস পাওয়ায় রাতের বদলে ভোট শুরু হওয়ার আগে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট পেপার সরবরাহের দাবি করেছি রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে। এছাড়া সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য ভোট অনুষ্ঠানের স্বার্থে প্রতি কেন্দ্রে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দেওয়ার দাবি আমার।
এ ব্যাপারে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য ইতোমধ্যে চারজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। এছাড়াও আইন-শৃক্সক্ষলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য দায়িত্ব পালন করবে কেন্দ্র ও বাইরে। তবে একাধিক প্রার্থীর দাবি অনুযায়ী রাতের বদলে ভোট শুরুর আগে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ব্যালট সরবরাহের দাবিটি নির্বাচন কমিশনের বিধিতে নেই। তাই এই বিষয়ে মন্তব্য করারও কোন প্রয়োজন নেই।’