ইমাম খাইর, সিবিএনঃ

ভারত থেকে আমদানি করার অভিযোগে কক্সবাজার সদরের ইসলামপুরে ৫ ট্রাক লবণ জব্দ করা হয়েছে।
শনিবার (২০ জুলাই) বিকেল পাঁচটার দিকে ইসলামপুর বাজার থেকে লবণবাহী ট্রাকগুলো জব্দ করে ঈদগাঁও পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র। জব্দকৃত ট্রাকের মধ্যে দুটি পুলিশ হেফাজতে এবং তিনটি লবণ মিল মালিক সমিতি হেফাজতে রাখা হয়েছে। সেখানে অনুমান ৩ হাজার মণ লবণ হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ইসলামপুর লবণ মিল মালিক সমিতির দাবি, লবণগুলো অবৈধভাবে ইন্ডিয়া থেকে আমদানি করা হয়েছে, যা দেশীয় শিল্পের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হীরা ভ্যাকুয়াম ইভাপোরেশন সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান শিমুল মোস্তফা তুহিনের বক্তব্য ভিন্ন।
তার দাবি, এগুলো লবণ নয়, কাঁচামাল। বিনিয়োগবোর্ড নিবন্ধিত তার প্রতিষ্ঠান বিগত এক দশক ধরেই গার্মেন্টস ও ডায়িং শিল্পে ব্যবহারোপযোগী ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যাল তৈরী ও সরবরাহ করে আসছে।
গত ১৫ জুলাই পণ্যবাহী মাদার ভ্যাসেল চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছলে যথারীতি রাজস্ব আদায় করে নিয়োগকৃত শিপিং এজেন্ট এসব পন্য খালাস করে। এরপর প্রথম চালানের ৬০ টন পণ্য নিয়ে তিনটি ট্রাক চট্টগ্রাম বন্দর থেকে রওয়ানা হয়ে শনিবার বিকালে ইসলামপুরে প্রবেশ করে।
এ প্রসঙ্গে ইসলামপুর লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি শামসুল আলম আজাদ জানান, কাঁচামালের আড়ালে মূলতঃ অবৈধভাবে ইন্ডিয়ান লবণ আমদানি করেছে হীরা ভ্যাকুয়াম ইভাপোরেশন সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ। যা দেশীয় লবণ শিল্পের জন্য মারাত্মক হুমকি স্বরূপ। মাঠে লক্ষ লক্ষ মন লবণ পড়ে থাকতে এভাবে অবৈধভাবে বাইরের লবণ আমদানি করা হলে দেশীয় লবণশিল্প ধ্বংস হবে।
তিনি জানান, এই অসাধু চক্রটি প্রতিবছর অবৈধভাবে ইন্ডিয়ান লবণ আমদানির মাধ্যমে দেশীয় শিল্পের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে থাকে। তাদের কারণে লবণ মিল মালিক, লবণ চাষি ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
ইসলামপুর লবণ মিল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মনজুর আলম (দাদা) অতি সুকৌশলে ইন্ডিয়ান লবণ আমদানির সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
এ প্রসঙ্গে কক্সবাজার সদর মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ খাইরুজ্জামান জানান, লবণ মিল মালিক সমিতির নেতাদের অভিযোগের ভিত্তিতে লবণভর্তি পাঁচটি ট্রাক জব্দ করা হয়। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে, আমদানিকারক পক্ষ তাদের স্বপক্ষে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টপত্র রয়েছে বলেও জানিয়েছেন।
এদিকে একটি সূত্রে জানা গেছে, জব্দকৃত ট্রাকগুলো ছাড়িয়ে নিতে আমদানিকারক পক্ষ প্রভাবশালী কয়েকজন ব্যক্তি নিয়ে শনিবার রাতভর সদর মডেল থানায় তদবির চালিয়েছে।
রাত ১২ টায় সর্বশেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত তাদের চেষ্টা-তদবির ব্যর্থ হয়েছে।
জব্দ করা লবণবাহি ট্রাকগুলো যেখানে যেই অবস্থায় আছে, সেখানে সেই অবস্থায় রাখার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।