: মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

গণতন্ত্র উদ্ধারের উত্তাল হাওয়া যেখানে বইছে, সেখানেই সালাহউদ্দিন আহমদ। বিএনপি কিংবা গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়ের সংগ্রাম, ভোটাধিকার আদায়ের আন্দোলন যেখানেই চলছে, সেখানেই কক্সবাজারের কৃতি সন্তান সালাহউদ্দিন আহমদ বুক ফুলিয়ে সক্রিয়ভাবে আছেন। হয়ত সালাহউদ্দিন আহমদ স্বশরীরে দেশের সভা সমাবেশ, সেমিনারে উপস্থিত নেই, কিন্তু তাঁর পোস্টার, ব্যানার, ফেষ্টুন, মাথার ক্যাপ ইত্যাদি নিয়ে সালাহউদ্দিন আহমদের অজস্র ভক্তরা সক্রিয় ও স্বউদ্যোগে উপস্থিত থেকে সবখানে সালাহউদ্দিন আহমদের শূণ্যতা পূরন করছে। জানান দিচ্ছে, কক্সবাজারের মানুষের ভালবাসার মানসপুত্র সালাহউদ্দিন আহমদও এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সক্রিয় অংশীদার। উৎসাহ যোগাচ্ছে, শ্লোগান দিচ্ছে, অনুপ্রেরণা যোগাচ্ছে, মিছিল করছে সালাহউদ্দিন আহমদের অমীয় বানী ও অগ্নিঝরা বক্তব্য সমেত পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুন উচিয়ে ধরছে। মনে হচ্ছে যেন, সালাহউদ্দিন আহমদ সেখানে স্বশরীরেই উপস্থিত আছেন। সাবেক প্রতিমন্ত্রী সালাহউদ্দিন আহমদের অনুসারী-ভক্তরা সার্বক্ষণিক জানান দিচ্ছে, তিনি দেশে ফিরতে নাপারলেও তাঁর রাজনৈতিক পাঠশালায় গড়ে উঠা শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিকেরা গণতন্ত্র পূণরুদ্ধারের সংগ্রামে সর্বত্র চষে বেড়াচ্ছে। এভাবেই বরিশাল ও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হওয়া বিএনপি’র বিভাগীয় সমাবেশ, সেমিনার ও জমায়েতে সালাহউদ্দিন আহমদের অনুরাগী বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবক্তা শহীদ জিয়ার আদর্শের সৈনিকদের অবস্থান ছিল রীতিমতো চোখে পড়ার মতো। একজন রাজনৈতিক নেতা দীর্ঘ প্রায় ৪ বছরেরও বেশী সময় ধরে সুদূর ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং-এ নির্বাসিত থাকার পরও তাঁর হাতে গড়া নেতা কর্মীরা কিভাবে রাজনীতির ময়দানকে সবসময় সক্রিয় রাখছেন সেটা চোখে নাদেখলে বুঝা যাবেনা। একইভাবে সালাহউদ্দিন আহমদের নিজস্ব জেলা কক্সবাজারও সরব রাখছেন এই বিস্ময়কর প্রতিভাসম্পন্ন নেতার তিলে তিলে গড়ে তোলা তাঁর প্রিয় সংগঠন বিএনপি ও অংগসংগঠনসমুহের সক্রিয় নেতাকর্মীদের ত্যাগতিতিক্ষায়। তাদের সরব কর্মকান্ডের কারণে দূর্বৃত্তরা তাদের বিষদাঁত বের করতে চাইলেও তা সহজে পারছেনা। বিএনপি’র স্থায়ী কমিটি’র সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদের নিজস্ব সংসদীয় আসন চকরিয়া-পেকুয়া যেন গণমানুষের ভোটের অধিকার আদায়ে চলমান গণতান্ত্রিক আন্দোলন সংগ্রামের সুতিকাগার। অত্যন্ত মেধাবী ও চৌকস অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সালাহউদ্দিন আহমদের দূরদর্শীতায় তাঁর হাতে গড়া শহীদ জিয়ার আদর্শের নেতা কর্মীরা সংগঠনের জন্য ত্যাগ করে মাতিয়ে রেখেছেন রাজনীতির কন্ঠকাকৃর্ণ ময়দান।

বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তৎকালীন যুগ্মমহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমদ ২০১৫ সালের প্রথমদিকে দেশের রাজনীতির উত্তাল সময়ে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় মুখপাত্র হিসাবে সফলভাবে দায়িত্ব পালনকালীন সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পরিচয়ে অচেনা মুখোশধারী লোকজন সালাহউদ্দিন আহমদকে ঢাকাস্থ উত্তরার একটি বাসা থেকে চোখ বেঁধে গুপ্তস্থানে তুলে নিয়ে যায়। দীর্ঘদিন গুম থাকার পর সালাহউদ্দিন আহমদকে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং শহরের গলফ লিংক মাঠে ২০১৫ সালের ৩ জুলাই ভোরে বিপর্যস্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে মেঘালয় রাজ্যের পুলিশ সালাহউদ্দিন আহমদের বিরুদ্ধে ভারতে অনুপ্রবেশের অভিযোগ এনে বৈদেশিক নাগরিক আইনের ১৪ ধারায় মামলা দায়ের করে। তখন থেকে শিলং শহরে খাসিয়া খ্রিষ্টান অধ্যুষিত এলাকায় সানরাইজ গেষ্টহাউজ নামক একটি ভাড়া বাড়িতে থেকে প্রায় সাড়ে ৩ বছর মামলায় লড়ে সালাহউদ্দিন আহমদ গত ২৬ অক্টোবর সেখানকার আদালতের রায়ে মামলা থেকে বেকসুর খালাস পান। মামলার রায় অনুযায়ী সালাহউদ্দিন আহামদকে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় পরস্পর যোগাযোগ করে ভারতের সীমান্ত বাহিনী বিএসএফের মাধ্যমে বাংলাদেশে সীমান্ত বাহিনী বিজিবি’র নিকট হস্তান্তরের নির্দেশ দেয়া হয়। তুখোড় জনপ্রিয় ও জনবান্ধব সালাহউদ্দিন আহমদ’কে বুকে জড়িয়ে অভ্যর্থনা জানানোর অপেক্ষায় মামলা থেকে বেকসুর খালাস পাওয়ার পর হতে প্রহর গুনতে থাকে তাঁর অযুত-লক্ষ রাজনৈতিক কর্মী, ভক্ত ও অনুসারীরা। সালাহউদ্দিন আহমদ আদালতের রায় অনুযায়ী সে দেশের রাষ্ট্রীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে দেশে ফেরার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ঠিক তখনি গত ২৭ এপ্রিল সালাহউদ্দিন আহমদ শিলং জেলা ও দায়রা জজ আদালতের একটি নোটিশ পান। যে নোটিশে সালাহ উদ্দিন আহমদ নিম্ম আদালত থেকে বেকসুর খালাস পাওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপীল করেছে, উল্লেখ করে আপীল মামলায় জেলা ও দায়রা জজ তাঁকে আদালতে হাজির হওয়ার জন্য বলা হয়। সালাহউদ্দিন আহমদ তখন থেকে গত ১ মে ও পরে শিলং জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপীল মামলায় যথারীতি হাজিরা দিয়ে আসছেন। একটি সুত্র মতে, ম্যাজিস্ট্রেট আদালত থেকে এই মামালার নথি ও সব ডকুমেন্ট দায়রা জজ আদালতে তলব করা হয়েছে। এ আপীল মামলাকে সালাহউদ্দিন আহমদ তাঁর বিরুদ্ধে চলমান গভীর রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ বলে আখ্যায়িত করেছেন। এ আপীল মামলার কারণে সালাহউদ্দিন আহমদের সহসায় আর দেশে ফেরা হচ্ছেনা। তবে কক্সবাজারের রাজনীতির বরপুত্র মৃত্যুন্ঞ্জয়ী লড়াকু সালাহউদ্দিন আহমেদ তাঁকে প্রদত্ত বেকসুর খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের দায়েরকৃত আপীল মামলা আইনীভাবে মোকাবেলা করে স্বদেশে ফেরার ব্যাপারে সিবিএন-এর কাছে দৃঢ় আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন।
নিজ আসন কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) তে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়তার অধিকারী, উন্নয়নের ফেরিওয়ালা ও জনপ্রিয়তায় হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা নামে খ্যাতি পাওয়া সালাহউদ্দিন আহমদ পরিণত হয়েছে, একটি রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে, একটি আদর্শে, একটি অপরিহার্য রাজনৈতিক অধ্যায়ে।