নিজস্ব প্রতিবেদক:
উখিয়া উপজেলার পালংখালীতে ইয়াবা ব্যবসায়ীর মোটরসাইকেল ছিনতাইকে কেন্দ্র করে কতিপয় বিজিবি সদস্য কর্তৃক নিরীহ লোকজনের উপর হামলা, মিথ্যা মামলা ও বসবাড়ি ভাংচুরের গুরুতর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই ইয়াবা ব্যবসায়ীর পক্ষ হয়ে উখিয়ায় কর্মরত বিজিবির নায়েক মোঃ নুর আলমের নেতৃত্বে আরো ৬/৭জন বিজিবি সদস্যদের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় এলাকাছাড়া হয়ে পড়েছে অনেক লোকজন। গতকাল শনিবার কক্সবাজার প্রেসক্লাব ভবনের দ্বিতীয় তলায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীরা। সংবাদ সম্মেলনের নির্যাতিত লোকজন উপস্থিত ছিলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ভুক্তভোগীরা তাদের লিখিত বক্তব্যে বলেন, পালংখালী ইউনিয়নের নলবনিয়া এলাকায় স্থানীয় কয়েকজন দুষ্কৃৃতিকারী লোক জনৈক এক ইয়াবা ব্যবসায়ীর ইয়াবা পরিবাহী মোটর সাইকেল নিয়ে নেয়। ওই মাদক ব্যবসায়ীর সাথে স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পের ৩৪ ব্যাটেলিয়নের নায়েক মোহাম্মদ নুর আলমের গভীর সখ্যতা রয়েছে। ওই ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ইয়াবা পরিবাহী মোটরসাইকেল ছিনতাইয়ের ঘটনায় তার পক্ষ হয়ে নায়েক মোহাম্মদ নুর আলম ওই ইয়াবা ব্যবসায়ীর ছিনতাইকৃত মোটর সাইকেলটি উদ্ধারের জন্য নলবনিয়া এলাকায় প্রতিটি ঘরে গিয়ে হানা দেয়। এভাবে প্রতিদিন প্রতিনিয়ত নায়েক মোহাম্মদ নুর আলমসহ আরো কয়েকজন বিজিবি সদস্য সাদা পোশাকে এলাকায় গিয়ে নিরীহ লোকজনদেরকে প্রতিনিয়ত মারধর করে আসছিল।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, বিজিবি সদস্যদের এই নিষ্ঠুর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে এলাকার সচেতন লোক মোঃ লুৎফুর রহমান তার প্রতিবাদ জানান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গত ২৮ জুন সকাল ১০টার দিকে ও্ই বিজিবি নায়েক মোঃ নুর আলমের নেতৃত্বে আরো ৬/৭জন বিজিবি সদস্য সাদা পোশাকে এলাকায় গিয়ে অভিযানের নামে নির্বিচারে গুলি চালায়। এতে এলাকার এক কিশোরী ও স্থানীয় আইয়ুব নামের এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়। তবে আশ্চর্য্যজনক হলে সত্য যে, উক্ত ঘটনায় উল্টো বিজিবির নায়েক সুবেদার মোঃ মুজিবুর রহমান বাদী হয়ে উখিয়া থানায় সরকারি কাজে বাধাদানের অভিযোগ করে বিভিন্ন ধারায় ৩২ জন গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে তিনটি মিথ্যা মামলা দায়ের করে। যাহার মামলা নং- ৫৭/৩০৭, ৫৮/৩০৮, ৫৯/৩০৯। অথচ মামলায় বর্ণিতমতে কোন ঘটনাই ঘটেনি। উক্ত মামলাসমূহে সম্পূর্ণ নিরীহ লোকজনদের আসামীভূক্ত করা হয়েছে। অভিযোগ মতে, ওইসব মামলাগুলোতে মোস্তাক আহমদ ও ভিন্ন জায়গায় বিবাহ প্রদত্ত মেয়েকেও আসামী করা হয়েছে। অথচ ঘটনার দিন মোস্তাক আহমদ নিজেও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। মামলার ভয়ে এলাকার সাধারণ লোকজনও এলাকা ত্যাগ করেছে।

ভুক্তভোগীরা অভিযোগ করে বলেন, নিরীহ এলাকাবাসীর উপর গুলি চালিয়ে নৃশংসভাবে আঘাত এবং উল্টো মামলা করেও ক্ষান্ত হয়নি ওই বিজিবি সদস্যরা। বর্তমানেরও তারা প্রতিদিন আমাদের বাড়িতে এসে অমানবিকভাবে বিক্ষিপ্তভাবে ঘর-বাড়ি কাটা-ভাংচুর এবং অগ্নিসংযোগ করে যাচ্ছে। যা মায়ানমারের জাতিগত নির্যাতনকেও হার মানিয়েছে। এসব ঘটনার সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় আরো ক্ষিপ্ত হয়ে ঘরে-বাড়িতে হামলা অব্যাহত রেখেছে। বর্তমানে আমরা এলাকাবাসী এলাকাছাড়া, ভিটা ছাড়া হয়ে ছন্নহারা অবস্থায় রয়েছি।

ভুক্তভোগীররা আকুতি জানিয়ে বলেন, মোটর সাইকেল ছিনতাই যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলে এলাকাবাসীর কোন আপত্তি নেই। কিন্তু নিরীহ লোকজনদের মামলায় জড়িয়ে হয়রানি করা, বাড়িঘর ভাংচুর ও নির্যাতন চালানো মানবাধিকার লঙ্ঘনের সামিল। আমরা এই ঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে উক্ত বিপথগামী বিজিবি সদস্যদের নিষ্ঠুর অত্যাাচরের বিচার করার জন্য বিজিবির উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি।