জহির খন্দকার ,ঈদগড়:

রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নে আলোচিত মাস্টার নুরুচ্ছফা হত্যা মামলার প্রধান আসামী স্বঘোষিত খুনী ইয়াবা ব্যবসায়ী ডাকাত কাশেমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল ১৯ জুলাই সন্ধ্যায় রামুর নবাগত ওসি আবুল খাইয়ের নির্দেশে এএসআই মোরশেদ আলমের নেতৃত্বে পুলিশ অভিযান চালিয়ে ডাকাত কাশেমকে গ্রেপ্তার করা হয়।
জানা যায় , ঈদগড় ইউনিয়নের ৫ নং ওয়ার্ডের কাটাজঙ্গল গ্রামের মৃত আব্দুল করিমেরর মেয়ে গোলজার বেগমের স্বামী বার্মাইয়া নবি হোছনের পুত্র আবুল কাশেম প্রকাশ শাহিন ডাকাত প্রকাশ কাশেম ডাকাত সে বিগত ২০১৩ সালে ঈদগড়-ঈদগাঁও-বাইশারী সড়কে হিল লাইন সার্ভিসে হেলপার হিসাবে  চাকুরি করত।হেলপারের চাকুরি করার সুযোগে ডাকাতদলের সোর্স হিসাবে ও গোপনে দায়িত্ব পালন করত ডাকাত কাশেম । তার তথ্যের ভিত্তিতে ডাকাতদল সড়কে ব্যরিকেট দিয়ে ডাকাতি করত এবং যাত্রীদের অপহরন করে পাহাড়ের ভিতর নিয়ে মুক্তিপন আদায় করত। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হয়ে গেলে ডাকাত কাশেম হেলপারের চাকুরি ছেড়ে পালিয়ে পাহাড়ের ভিতর গিয়ে সরাসরি ডাকাতদলে যোগ দেয়।তার পর হতে ঈদগড়ে শুরু হয় প্রতিদিন কোন না কোন বসতবাড়ী/সড়কে ডাকাতি ও অপহরন। ডাকাত কাশেমের নেতৃত্বে অপহরন করে মুক্তিপন আদায় করা হয় ঈদগড় উত্তর মোহাম্মদ শরিফ পাড়ার আব্দুল মাবুদের পুত্র আব্দুল মজিদ সহ কয়েক জনকে। মুক্তিপন আদায় তাদের মুক্তি দেওয়া হয়েছিল ।এই ব্যাপারে ডাকাত কাশেমের বিরুদ্ধে রামু থানায় মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং-রামু থানার মামলা নং-০৭ তাং-০ ২/০৯/২০১৪ ইং।
এই ঘটনার পর ডাকাত কাশেমের নেতৃত্বে ডাকাতদল ভাড়াটিয়া খুনি হিসাবে ঈদগড় বড়বিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক নুরুচ্ছফাকে তার নিজ বাড়ীতে শয়ন কক্ষে নববিবাহিত স্ত্রীর সামনে গুলি করে হত্যা করে।এই ঘটনায় ডাকাত কাশেমের বিরুদ্ধে রামু থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়।মামলা নং-০৭ তাং-০৭/০১/২০১৬ ইং।
মাস্টার নুরুচ্ছফার মত একজন নীরিহ ব্যক্তি জনপ্রিয় শিক্ষক কে হত্যা করার পর এলাকার উত্তেজিত ছাত্র জনতা পাহাড়ে অভিযান চালিয়ে ডাকাত কাশেম কে আটক করে পুলিশ সোর্পদ করেছিল।মাত্র ৬/৭ মাস জেল কাটার পর হাইকোট থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসে ডাকাত কাশেম।জামিনে মুক্ত হয়ে ডাকাত কাশেম ঈদগড়ে না গিয়ে চলে যায় ইয়াবা নগরী খ্যাত টেকনাফে শহরে।সেখানে গিয়ে ইয়াবা ডনদের দলে যোগ দেয় ডাকাত কাশেম। ডাকাত কাশেম শুরু করে নতুন ভাবে ইয়াবা ব্যবসা।ইয়াবার বিশাল চালান পাচার করার সময় চট্টগ্রাম চাঁদগাঁও থানা পুলিশের হাতে নতুনব্রিজ এলাকায় ধরা পড়ে ডাকাত কাশেম।এই ব্যাপারে থানায় মামলা রুজু হয় যার নং-০৯ তারিখ ০৫/১০/২০১৭ জি আর-৩৬২/১৭ । আরো একটি মামলায় তার ২ বছরের সাজার আদেশ হয়েছে মামলা নং-জি আর -১৭৬/০৮ নাইক্ষ্যংছড়ি থানা।
এই মামলায় ও ৬ মাস পর হাইকোট থেকে জামিন নিয়ে জেল থেকে বেরিয়ে আসে ডাকাত কাশেম। জামিনে মুক্ত হয়ে আবারো চলে যায় টেকনাফে। শুরু করে পুরোদমে ইয়বা ব্যবসা। ডাকাত কাশেম টেকনাফে এক বছর ইয়াবা ব্যবসা করে বনে যায় কয়েক শত কোটি টাকার মালিক। এ দিকে সরকার ইয়াবা ব্যবসায়ীদে বিরুদ্ধে ক্রস ফায়ার দেওয়া শুরু করলে ডাকাত কাশেম টেকনাফ থেকে পালিয়ে ঈদগড়ে চলে আসে। মাস্টার নুরুচ্ছফাকে হত্যা করার পর ঈদগড়ের সচেতন মহল যারা ডাকাত কাশেমের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল তারাও রহস্যজনক কারনে মুখ বন্ধ করে রাখে।
রামু থানার এ এস আই মোরশেদ আলম জানান, ডাকাত কাশেমের বিরুদ্ধে হত্যা অপহরন সহ কয়েকটি মামলার ওয়ারেন্ট আছে।তিনি জানান ডাকাত কাশেমকে গ্রেপ্তার করা ঈদগড়বাসীর জন্য নবাগত ওসি স্যারে বিশেষ উপহার। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ডাকাত কাশেম রামু থানা হাজতে আছে। তাকে আদালতে সোর্পদ করা হবে বলে তিনি জানান।