বাংলা ট্রিবিউন:

শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, শিক্ষার্থী ভর্তিতে আগামী বছর থেকে অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গুচ্ছ পদ্ধতি চালু করা সম্ভব হবে। বুধবার (১৭ জুলাই) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘গুচ্ছ পদ্ধতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করছি। সমস্যা হচ্ছে কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় তারা নিজেরা নিজেদের পরিক্ষা নিতে চায়। তবে উপাচার্যদের একটি পরিষদ আছে, তারা আলাপ আলোচনা করছেন, আশা করছি এ বছরের মধ্যে ইতিবাচক ফল পাবো। আগামী বছর থেকে আমরা একেবারে সব বিশ্ববিদ্যালয় না হলেও অধিকাংশ বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে এই ব্যবস্থাটি চালু করতে পারবো বলে আশা করছি।’

বর্তমান ব্যবস্থায় ভর্তির প্রক্রিয়ার সমস্যার কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে নানা ধরনের সমস্যায় পড়ে। আমরা শুনেছি ছাত্ররা রাতে থাকার জায়গা না পেয়ে মসজিদে অবস্থান করে। আর মেয়েরাতো তাও পারে না। সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে একটি পরীক্ষার মাধ্যমেই সবার ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হয়। বিশ্বদ্যিালয়গুলোতে অন্তত গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা হওয়া প্রয়োজন বলে আমরা আশা করছি। এ নিয়ে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে ইতিবাচক ফল পাবো।’

গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি চালুর বিষয়ে প্রশ্নের উত্তরে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এক্ষেত্রে কোনও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের লাভ-লোকসানের বিষয় আছে সেটা আমাদের কাছে মুখ্য নয়। আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের ভর্তি প্রক্রিয়াটি সহজ করা। একজন শিক্ষার্থী পাঁচটি বা সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিতে গিয়ে সারা বাংলাদেশে ছুটে বেড়াচ্ছে। এটা কঠিন। যাদের আর্থিক সামর্থ্য নেই, তাদেরতো প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফরম তুলে সারাদেশে ঘুরে ঘুরে পরীক্ষা দেওয়া কঠিন। এসব শিক্ষার্থী সংকটের মধ্যে পড়ে যাবে সেটা কাম্য নয়।’

স্কুল মাদ্রাসায় দুটি ট্রেড চালু হবে
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বর্তমানে ১৭ ভাগ শিক্ষার্থী কারিগরি শিক্ষায় পড়ালেখা করলেও সরকার এটিকে আরও বেগবান করার লক্ষ্যে ২০৩০ সালের মধ্যে তা ৩০ ভাগে উন্নীত করার পরিকল্পনা নিয়েছে। ইতোমধ্যে স্কুল ও মাদ্রাসায় দুটি করে ট্রেড কোর্স চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালের ৬৪০টি প্রতিষ্ঠানে এবং ২০২১ সালে দেশের সব স্কুল ও মাদ্রাসায় দুটি ট্রেড কোর্চ চালু হবে।’

প্রস্তুতি ভালো, তাই ফলও ভালো
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষার্থীদের ভালো প্রস্তুতি ও নকলমুক্ত পরিবেশের কারণে পাশের হার ও জিপিএ ফাইভ বেড়েছে বলে জানান শিক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘যারা ভালো প্রস্তুতি নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছে তারা ভালো করেছে, আর যাদের প্রস্তুতি দুর্বল ছিল তারা ভালো ফল পায়নি। তবে যে সকল বোর্ড ভালো করছে তারা আরও এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে, যাতে তাদের ভালো ফলের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকে।’

শূন্য পাস প্রতিষ্ঠান না থাক
শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেছেন, আমরা অবশ্যই চাই শূন্য পাশের প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা না থাক। একটি প্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষার্থীও পাস করবে না এটা কেন হবে, এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। নিশ্চয়ই কোনও প্রতিষ্ঠানে সব শিক্ষার্থীই এমন হয় না।’ শূন্য পাসের এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও ব্যাপকভাবে নজরদারির মধ্যে আনা প্রয়োজন। এসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষকে আমরা ডাকছি, সভা করছি। তাদের নিয়ে আমরা চেষ্টা করছি কী করে তাদেরকে এই অবস্থা থেকে বের করে আনা যায়।’