ফারুক আহমদ, উখিয়া:
উখিয়ার কোটবাজারের ঝাউতলাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাউন্ডারীতে রহস্যাবৃত্ত ওয়ালরাইটিং নিয়ে অজানা আতঙ্ক দেখা দিয়েছে সর্বত্র। দেয়ালে আঁকা এসব সাংকেতিক চিহ্ন নিয়ে এলাকায় সচেতন মহলে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

রত্নাপালংস্থ ঝাউতলা গ্রামের ছব্বির আহমদ প্রকাশ সোনা মিয়া (৫০) ও সাদৃকাটা গ্রামের আফতাফ উদ্দিন জানান, সব স্থানে একই ধরনের চিহ্নগুলো কালো রং দিয়ে আঁকা হয়েছে। স্থানীয়রা অনেক চেষ্টা করে এ চিহ্নের অর্থ খোঁজে পাচ্ছে না। হঠাৎ করে দেয়াল এ ধরনের সাংকেতিক চিহ্ন অঙ্কন নিয়ে স্থানীয়রা বিভিন্ন ধরনের মন্তব্য করছেন। অনেকের ধারণা, সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে জড়িত বা জঙ্গিরা এধরনের চিহ্ন আঁকতে পারে। নাম প্রকাশ না করা শর্তে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিওতে কর্মরত এক কর্মী বলেন, ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া এক রোহিঙ্গা সাংকেতিক চিহ্ন দেখে মন্তব্য করে জানান, এটি বার্মিজ বা মগা ভাষা এর আভিধানিক অর্থ হচ্ছে শক্তি প্রদর্শন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত সোমবার সকালে উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের কোটবাজার আলহাজ্ব হাকিম আলী চৌধুরী কে.জি স্কুল, কোটবাজার বালিকা বিদ্যালয়, রত্নাপালং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পালং মডেল হাই স্কুলের দেয়ালে একবর্ণের সাংকেতিক চিহ্ন দেখতে স্থানীয়রা। একই চিহ্নটি দেয়ালের কিছু দূরত্বে একাধিকবার লেখা হয়েছে। তবে, কালো রং দিয়ে আঁকা চিহ্নগুলো অনেকটা বার্মিজ বর্ণের আদলে লেখা।

এদিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেয়াল ছাড়াও রত্নাপালং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আসহাব উদ্দীনের রুহুল্লার ডেবাস্থ বাসভবন ও ঝাউতলাস্থ সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলমগীরের বাড়ির সামনেও এধরনের সাংকেতিক চিহ্ন আঁকা হয়েছে।

হাকিম আলী কেজি স্কুলের উপাধ্যক্ষ একরামুল হক টিটু জানান, বিদ্যালয়ের দেয়ালে যে সাংকেতিক চিহ্নটি লেখা হয়েছে, তা আমি এই ইউনিয়নের আরো অন্তত ১৭টি স্থানে দেখেছি। এধরনের চিহ্ন আঁকা নিয়ে এলাকায় আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে দেয়া আচমকা সাংকেতিক চিহ্ন দেখে এবং কোন অর্থ খোঁজে না পেয়ে স্থানীয়রা উৎকণ্ঠা প্রকাশ করছে।

তিনি আরো জানান, বিদ্যালয়ের দেয়াল ছাড়াও রত্নাপালং ইউনিয়নে অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পে কর্মরত কয়েকটি এনজিও অফিসের সামনেও এধরনের একই চিহ্ন অঙ্কন করা হয়েছে। তবে বলতে পারছেনা, কে বা কারা এ ধরনের কাজটি করেছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের দেয়া সাংকেতিক চিহ্ন আঁকার বিষয়টি অবহিত হয়েছি। এ ব্যাপারে তদন্ত করে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

উখিয়া থানার উপ-পরিদর্শক প্রভাত কুমার বড়ুয়া জানান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার দেয়ালে সাংকেতিক চিহ্ন অঙ্কনের খবর পেয়ে সেখানে পুলিশের টিম পাঠানো হয়েছে। তারা দেয়ালে আঁকা চিহ্নগুলো দেখেছে, তবে কেউ চিহ্নগুলো বুঝছে না। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

উল্লেখ থাকে যে, উখিয়া উপজেলার রতœাপালং ইউনিয়নের ৫ কিলোমিটার দূরেই অবস্থিত রোহিঙ্গা ক্যাম্প। ক্যাম্প ভিত্তিক কোন সন্ত্রাসী বা জঙ্গি গোষ্ঠী এ ধরনের কর্মকান্ডে মাধ্যমে কোন ধরনের অপ্রতিকর ঘটনার চেষ্টা করছে কি না তা কতিয়ে দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছেন অনেকে।