মোহাম্মদ তারেকুল ইসলাম

আপন প্রানের নেশায় জেগে উঠেছে তারুণ্য । এগিয়ে চলছে সামনে দীপ্ত পায়ে……হাতে আলোর মশাল জ্বেলে । ভেঙ্গে সব রুদ্ধ কপাট বেরিয়ে পড়েছে
ধুমকেতুর বেগে, এগুচ্ছে ক্রমশ ঐ দূর মন্জিল পানে” ।

বলছিলাম-বলছি স্বপ্নের কথা! আজ কাল এরকম সপ্ন আমি খুব বেশি দেখি,হাটতে হাটতে, পথ চলতে, পড়ার টেবিলে বসলে কিংবা তারা ভরা কোন রাতের খোলা আকাশের নিচে দাঁড়ালে। নগ্নতা আর বেহায়া পনা ঐন্দ্রজালিক মোহাকর্ষন ছেড়ে তারুণ্য দাঁড়িয়েছে এসে সত্যের পক্ষে । নেশার শুন্য পরিমন্ডল থেকে বেরিয়ে এসে নিজেকে মেলে ধরেছে উদ্ভাসিত আলোর মাঝে। অশ্লীলতা আর অপসংস্কৃতির বুকে এঁকে দিয়েছে পরিশীলিতা আর শুদ্ধতার যুগল শ্লোগান । মাদকের নীল নেশায় বিভোর না থেকে আজ তারা স্বপ্ন বোনে নান্দনিক আগামীর। নকলের মহোৎসবের পরিবর্তে আজ তারা প্রতিরোধ গড়ে তোলে সকল অন্যায় অপকর্মের বিরুদ্ধে । দর্শন ও নারীর শ্লীলতাহানির গড়ে তুলে বজ্র আওয়াজ। অন্যায় অপরাধসম কাজে যারা জন জীবনকে করেছিল অতিষ্ঠ, আজ কোন মাজলুমের আর্তনাদে কেঁপে ওঠে তাদের মানবিক হৃদয় । জালিমের সামনে আবির্ভূত হয় এক প্রচন্ড দ্রোহ হিসাবে । লাঞ্ছিত বঞ্চিত আর নিরন্ন মানুষের মুখে হাসি ফোটানোই যেন তাদের জীবনের ব্রত। মানুষ আজ যুবককে দেখে ভয়ে পালিয়ে বেড়ায়না। আশায় ভালোবাসায় আর স্নেহাদ্রতায় কাছে আসে, একান্ত কাছে।

#আমি_সপ্ন_দেখি…..(ছাত্র সমাজকে নিয়ে)

ছাত্র সমাজ আজ জ্বালাও, পোড়াও, ভেঙ্গে দাও এসব শ্লোগান ভোলে গেছে, তারা আজ শিক্ষাঙ্গনে বা ক্যাম্পাস থেকে শান্তির মিছিল নিয়ে নেমে পড়েছে রাজ পথে……মিশে যাচ্ছে মানুষের মাঝে……. মানুষের ভালবাসার মাঝে। রাজনৈতিক অভিভাবকরা ভাঙ্গনে আর তোলপাড়ের মিছিলে আর ডাকেনা ছাত্রদেরকে। কলম আর কাগজের পরিবর্তে হাতে তুলে দেননা অস্ত্র । সুন্দর আর যোগ্য মানুষ হওয়ার মত পরিবেশ করে দেন ক্যাম্পাসে । সন্ত্রাস নির্ভর ছাত্র রাজনীতির ভয়ংকর ছোবল থেকে সম্ভাবনাময় তরুন প্রজন্মকে রক্ষা করতে সংসদে বসে আইন প্রনয়ন করেন নষ্ট ছাত্র রাজনীতি বন্ধের!

এ বড় নষ্ট সময়, নষ্ট প্রহর। নষ্টসময়ের যাতাকলে পিষ্ট হয়ে মানবতা আজমুখ গুঁজে কুকড়ায়। যে জাতির ইতিহাসের প্রত্যেকটি গৌরব উজ্জ্বল ঘটনায়
রয়েছে যুবক আর তরুনদের খুন মেশানো রক্ত রাঙ্গা অধ্যায় । যারা দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য, জীবনের জন্য লালপথ রচনা করেছেন অকাতরে! তাদের হতাশায় আর নিরাশায় জীবন থেকে পালানো দেখে বিবেক থমকে দাঁড়ায় । আগুনঝরা’ ৭১ কিংবা রক্তরাঙ্গা’ ৫২-এ যদি তাদের বুকের রক্তে লিখা হয় বিজয়ের স্বর্ণালি ইতিহাস! দেশ গড়ার ডাকে স্বাধীনতার আহ্বানে তারা যদি জীবনের মোহাকর্ষণ ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে গ্রেনেড আর বেয়নেট হাতে , তবে সমৃদ্ধি আর উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় তাদের সীমাহীন বেকারত্ব কেন হবে প্রতিবন্ধক ???

নষ্ট দেশ, নষ্ট সমাজ, নষ্ট কবিতার কারোকাজ । যে দেশে মানুষের সামনে মানুষ নিঃশেষ হয়ে যায় তিলে তিলে । মুখে ফুটে না কারো প্রতিবাদের ভাষা। আমরা কি আমার সেই গৌরবের কথা ভুলিতে বসেছি?

ছন্দময় এ পৃথিবীতে মানুষের ক্ষনিক এক জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান যে সময় তারুণ্য-যৌবন। জীবনকে রমনীয়,কামনীয়, মোহনীয় করার সর্বোত্তম সময় এ তারুণ্য । উচ্ছ্বলতা আর উদ্যমতার যুগল মিশ্রণ এ সময় ।এ সময় যদি কেও হেলায় কাটায় ভ্রান্তির উপত্যকায় তবে জীবনের ষোল আনাই হবে মিছে । জাতির সম্ভাবনাময় এই প্রজন্মের সামনে যখন নগ্নতা আর বেহায়াপনার নির্লজ্জ হাতছানি এবং অশ্লীলতা আর অনৈতিকতার লোভনীয় জিভ বের করা বিচরণ দেখি, মনে হয় তখন, উদিয়মান এ জাতিকে যোগ্য আর সুন্দর নেতৃত্ব শুন্য করার জন্য চলছে এক নীরব আয়োজন । আগামী দিনের কর্ণধার অংকুরেই নিঃশেষ করার জন্য শুরু হয়েছে এক অদ্ভুত মহড়া।

#আবেদন_করতে_চাই

দেশের রাজনৈতিক অভিভাবক, পেশাজীবী, শ্রমজীবী, সমাজ সেবী,সাহিত্য সেবী, সংস্কৃতি সেবী, সমাজপতি, শিক্ষিত সমাজ, কবি, সাহিত্যিক,সাংবাদিক এবং দেশের সম্মানিত কর্ণধার, প্রশাসনের সর্বোচ্চ ব্যক্তিবর্গের প্রতি -আপনারা যারা আপনাদের মেধা মনন, চিন্তা-চেতনা, বিবেক- বুদ্ধি, কায়িক শারীরিক- মানসিক, আর্থিক সহ সকল প্রকার শ্রম দিয়ে পরামর্শ দিয়ে অহর্নিশ কাজ করে যাচ্ছেন এ দেশের জন্য, তাদের সকলের প্রতি আমার করজোর মিনতি….রক্ষা করুন আপনারা! জাতির সম্ভাবনাময়ী এই প্রজন্ম কে, ধ্বংসের উপত্যকায় ঘুরে বেড়ানো আপনাদের সন্তানদেরকে, আপনাদের উত্তরসূরীদেরকে। নতুবা ভেস্তে যাবে আপনাদের স্বপ্ন-স্বাধ, আহলাদ, আকাংখা, অভিলাস। ওরা যদি
এভাবে নিঃশেষ হয়ে যায় কে দেবে আন্জাম? আপনাদের আসমাপ্ত কাজ।
কে ধরবে এ জাতির হাল?
কে নিবে এ জাতির নেতৃত্বের জীয়নকাঠি?
কে রক্ষা করতে আসবে এ জাতির সাগরসম রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা
স্বকীয়তা, সাহিত্য, সাংস্কৃতি, শত বছরের লালিত ইতিহাস ঐতিহ্য
তাহজীব-তমদ্দুন?

#আহ্বান_রাখতে_চাই

দেশ দরদী জনদরদী হে-! আপনারা রক্ষা করুন আগামীদিনের জাতিকে। আপনাদের প্রত্যেকের সম্মিলিত প্রচেষ্টা!!! হ্যাঁ আপনাদের আন্তরিক
প্রচেষ্টায় পারবে বাচাতে জাতির আগামী দিনের কান্ডারীদেরকে । আপনার আমার প্রত্যেকের ছোট ছোট প্রয়াস বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে আক্রান্ত এ প্রজন্মকেরক্ষা করতে । নেশার ছলনাময়ী রঙ্গিন ভূবনের মরণফাঁদ থেকে টেনে বের করুন ওদেরকে। দর্শন-খুনের মত ঘৃণ্য এ সকল কাজের সকল ধরনের পথ রুদ্ধ করুন। বিষাদ মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর আইন করুন । ছাত্র রাজনীতির নেপন্য অস্ত্রের মহড়া কিংবা রক্তের হোলি খেলা নয়, সুস্থ-সুন্দর জীবন গঠনের মত পরিবেশ করে দেন ক্যাম্পাসে । মানুষ গড়ার কারখানায় মানুষ হওয়ার মত অবস্থা সৃষ্টি করুন। অশ্লীলতা আর অনৈতিকতার সকল দ্বার বন্ধ করুন। নৈতিকতা-মানবিকতা আর ধর্মীয় অনুভূতির মিশ্রণে গঠন করুন সর্বাধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা । ভালবাসা আর স্নেহার্দ্রতার যুগল অনুভূতিতে কাছে ডাকুন তাদেরকে । হাত ধরে পথ দেখান সত্যের, সুন্দরের, শুদ্ধতার,সুস্থতার আর সপ্নীল এক নান্দনিক জীবনের, অনিন্দ্য সুন্দর আগামীর।

লেখক; ছাত্র: সারজাহ্ বিশ্ববিদ্যালয়,UAE ।