অনলাইন ডেস্ক :   শ্বাসরুদ্ধকর ফাইনালে সুপার ওভারে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হলো ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ড । লর্ডসে নিউজিল্যান্ডের ২৪১ রান তাড়া করে ইংলিশদের ইনিংসও সমান সংখ্যক রানে শেষ হলে ম্যাচ গড়ায় সুপার ওভারে।

সুপার ওভারে ইংলিশদের হয়ে ব্যাট করতে নামেন বেন স্টোকস ও জস বাটলার। কিউইদের হয়ে বল হাতে ট্রেন্ট বোল্ট। প্রথম বলে আসে ৩ রান। দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল নেন বাটলার। তৃতীয় বলে মিড উইকেট দিয়ে চার হাঁকিয়ে দেন স্টোকস। চতুর্থ বলে আসে আরেকটি রান। বাটলার পঞ্চম বলে নেন আরও দুটি রান। বোল্টের শেষ বলে সীমানা পার হলে ১৫ রানের সংগ্রহ পায় ইংলিশরা।

১৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নামেন মার্টিন গাপটিল ও জিমি নিশাম। বল হাতে জফরা আর্চার। প্রথম বলই ওয়াইড। পরের বলে দুই রান। দ্বিতীয় বলে ছক্কা হাঁকিয়ে বসেন নিশাম। পরের বলে দুই রান। পরের বলে আবার দুই রান। সমীকরণ দাঁড়ায় ২ বলে ৩ রান। পরের বলে ১ রান। শেষ বলে জয়ের জন্য দরকার ছিলো ২ রান। কিন্তু গাপটিল মাত্র ১ রানই নিতে পারেন। শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডও সমান সংখ্যক ১৫ রান করলেও সুপার ওভারের নিয়ম অনুসারে বেশি বাউন্ডারি হাঁকানোয় জয়ী হয় ইংল্যান্ড। ৯৮ বলে ৮৪ রান করে ম্যাচ সেরা হয়েছেন বেন স্টোকস।

এর আগে নিউজিল্যান্ডের করা ২৪২ রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই হোঁচট খায় স্বাগতিকরা। দলীয় ২৮ রানের মাথায় ম্যাট হেনরির বলে কট বিহাইন্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ইনফর্ম জেসন রয়। ইংলিশ ব্যাটিংয়ের মূল স্তম্ভ জো রুটও সচল করতে পারেননি রানের চাকা। ধৈর্য্য হারিয়ে গ্র্যান্ডহোমকে মারতে গিয়ে তিনিও কট বিহাইন্ড হয়ে ফেরেন।

জনি বেয়ারস্টো লড়াই চালিয়ে গেলেও তার ইনিংস থামে মাত্র ৩৫ রানে। লোকি ফারগুসনের বলে প্লেড অন হয়ে যান। এর কিছুক্ষণ পর সেই ফার্গুসনই দুর্দান্ত এক ক্যাচ নিয়ে ফিরিয়ে দেন ইংলিশ অধিনায়ক ওয়েন মরগ্যানকে।

৮৬ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ইংলিশদের বিশ্বকাপ স্বপ্ন মিলিয়ে যেতে বসেছে তখনই পাল্টা লড়াই শুরু করেন বেন স্টোকস আর জস বাটলার। স্টোকস সাবধানি হয়ে খেললেও বাটলার ছিলেন স্বভাবসুলভ মারমুখি মেজাজে। তাদের ১১০ রানের জুটি দারুনভাবে ম্যাচে ফিরিয়ে আনে ইংল্যান্ডকে।

কিন্তু ফার্গুসনকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাটলার ডিপ পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে পেন্ডুলামের মতো আবার দুলতে থাকে ম্যাচের ভাগ্য। এরপর ক্রিস ওকসও ২ রানে ফিরে গেলে ক্রমেই কঠিন হয়ে ওঠে ইংল্যান্ডের সমীকরণ। তবে ক্রিজে তখন আছেন বেন স্টোকস। প্লাঙ্কেটকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে গেছেন শেষ ওভার পর্যন্ত।

শেষ দু ওভারে প্রয়োজন ২৪ রান। কিন্তু নিশামের বলে লং অফে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান প্লাঙ্কেট। হাতে তখন ৯ বল। প্রয়োজন ২৩ রান। তখনই ছক্কা হাঁকিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন স্টোকস। ৪৯তম ওভারের শেষ বলে বোল্ড হয়ে যান জফরা আর্চার।

বিশ্বকাপ জিততে শেষ ওভারে নিতে হবে ১৫ রান। কিন্তু ওভারের প্রথম দুটি বলে কোন রান আসে না। কিন্তু তৃতীয় বলেই আবার ছক্কা হাঁকিয়ে দেন স্টোকস। এরপরের বলে দুই রান নেয়ার পর ওভার থ্রোর সুবাদে ৬ রান পায় ইংলিশরা। সমীকরণ দাড়ায় ২ বলে ৩ রান। পরের বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট আদিল রশিদ। শেষ বলে জিততে লাগবে ২ রান। কিন্তু সেই ২ রান নিতে গিয়ে মার্ক উডও রান আউট। খেলা গড়ায় সুপার ওভারে।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৪১ রানের সংগ্রহ গড়ে নিউজিল্যান্ড। হেনরি নিকোলস ৫৫ ও টম লাথাম ৪৭ রানের ইনিংস খেলেন। ৩টি করে উইকেট নেন ক্রিস ওকস ও লিয়াম প্লাংকেট।