সিবিএন ডেস্ক:
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তনে আমাদের দেশ সবচেয়ে বড় হুমকিতে রয়েছে। যে হারে তাপমাত্রা বাড়ছে তাতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়বে। এতে আমরা আরও ক্ষতিগ্রস্ত হবো। খাদ্য নিরাপত্তা হুমকির মধ্যে পড়বে। শুধু বাংলাদেশ নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বিশ্বের ছোট ছোট দেশও হুমকির মধ্যে আছে। এদেরকে রক্ষা করতে হবে।

বুধবার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে মিটিং অব দ্য গ্লোবাল কমিশন অন অ্যাডাপটেশন (জিসিএ) অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, খরা, বন্যা লেগেই আছে। জলবায়ু পর্র্তিনের ফলে এ সমস্যাগুলো আরও বাড়ছে। আমরা এসব সমস্যা মোকাবিলা করে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছি। নিজস্ব অর্থায়নে জলবায়ু পরিবর্তন ফান্ড করেছি। এ ফান্ডে প্রায় ৪২ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি বরাদ্দ দিয়েছি। জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য আমরা প্রত্যেকটি পরিকল্পনা মাথায় রাখছি। ইতোমধ্যে ৫০ লাখের বেশি সৌর প্যানেল দিয়েছি। জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বছরে প্রায় ১০০ কোটি মার্কিন ডলার ব্যয় করছি। এছাড়া ডেল্টা প্লান ২১০০ গ্রহণ করেছি। ২১০০ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ যেন টিকে থাকতে পারে সে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো দুর্যোগ থেকে বাচার জন্য সাইক্লোন সেল্টার বানিয়েছি। এসব স্থানে মানুষ নিজে এবং গবাদিপশু নিয়ে আশ্রয় নিতে পারে। ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে ১০ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়। এরপর সমুদ্র ও দুর্যোগপ্রবণ এলাকার মানুষ এবং গবাদিপশুকে বাঁচানোর জন্য মুজিব কেল্লা স্থাপন করা হয়। ১৯৯১ সালের ঘূর্ণিঝড়ে দেড় লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল। এবার ঘূর্ণিঝড় ফণী আঘাত হোনে। আমাদের সরকারের সতর্কতার কারণে সামান্য ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এর পরও ১০ জন মারা যায়।

শেখ হাসিনা বলেন, আগামী ৫ বছরের মধ্যে সারাদেশে ২০ ভাগ বনায়ন তৈরি করতে চাই। এ জন্য বাংলাদেশ কৃষক লীগ প্রতি বছর বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি পালন করছে। সরকারের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে গ্রীণ বেল্ট গড়ে তোলার জন্য। খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা বন্যা, খরা, লবণাক্ত সহিষ্ণু ধান আবিষ্কার করেছি।

দুর্গত এলাকার মানুষ দুর্যোগের সময় যেন খাদ্যদ্রব্য মজুদ রাখতে পারে, সে জন্য সাইলোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনি বিভিন্নভাবে মানুষকে রক্ষার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।