হাফিজুল ইসলাম চৌধুরী :
প্রায় দুই বছর আগে থেকে দুই চোখে ঝাপসা দেখা শুরু করেন কক্সবাজারের রামুর ফতেখাঁরকুল ইউনিয়নের বণিকপাড়ার অতি দরিদ্র পরিবারের সন্তান শয়ন মল্লিক (১০)। গত তিন মাস ধরে আলোকোজ্জ্বল এ পৃথিবীর পুরোটাই তাঁর কাছে অন্ধকার।

এ কারণে শয়ন কক্সবাজারের সাহিত্যিকা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আর যেতে পারছেন না। বঞ্চিত হচ্ছেন বন্ধুদের আদর ভালোবাসা থেকে। শয়ন ওই বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র। তার এই দূর অবস্থা জানতে পেরে সর্বপ্রথম আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়ান রামু উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ কমলের একান্ত সচিব আবু বক্কর ছিদ্দিক।

এ নিয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে গত শুক্রবার দুপুরে শয়নের বাড়িতে যান কক্সবাজার ৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল। সাংসদ উত্তর ফতেখাঁরকুলস্থ অন্ধ শয়নের নানার বাড়িতে পৌঁছলে এক হৃদয় বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। অন্ধ ও অসহায় শয়ন মল্লিক এমপি কমলকে কাছে পেয়ে জড়িয়ে কাঁদতে কাঁদতে বলেন- ‘কমল ভাই আমি পড়তে চাই, স্কুলে যেতে চাই, আমার বন্ধুদের সাথে খেলতে চাই। আমি কি কোনদিন দেখতে পাবো না?’ এমপি কমল শয়নকে পরম মমতায় জানালেন, ‘তোমার চিকিৎসার দায়িত্ব আমি নিলাম। তোমাকে ভারতে নিয়ে চিকিৎসা করানো হবে। তুমি আবার দেখতে পাবে, পড়তে পারবে, খেলতে পারবে।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- চট্টগ্রামস্থ পাহাড়তলী চক্ষু হাসপাতালের চিকিৎসক চোখ পরীক্ষা করে জানালেন শয়নের রোগের নাম ‘অ্যাডভান্সড রেটিনাল ডিটাচমেন্ট’ বলে জানান। চিকিৎসার জন্য লাগবে ৪ লাখ টাকা। শয়নের বাবা তপন মল্লিক ও মা অর্চনা মল্লিক থেকে ছোটবেলা থেকেই বিচ্ছিন্ন শয়ন নানী সুখেদা ধরের সাথে বেড়ে উঠছেন।

নানী সুখেদা ধরের পক্ষে তার ভরণ-পোষণ করাই কষ্টসাধ্য। তাঁর পক্ষে এত টাকা জোগাড় করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। নিরুপায় শয়ন মল্লিক তাই দুই চোখের আলো ফিরে পেতে সমাজের হূদয়বান ও বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন।