ছানাউল করিমঃ

অল্প বৃষ্টিতেই শহরের রাস্তা পানিতে ডুবে যায়। আলীর জাহাল থেকে লালদিঘীর পাড় এ দীর্ঘ সড়কের দু’পাশেই পানি নিস্কাশনে আছে ড্রেইন। কিন্তু পরিকল্পিত না থাকায় যথাসময়ে পানি নিস্কাশন হয় না।

কী অদ্ভুত!  সমস্ত ড্রেইন কনক্রিট স্ল্যাব দিয়ে ঢাকা। কোথাও কোথাও সড়ক থেকে ড্রেইনের উচ্চতা বেশী। আবার কোথাও ড্রেইন প্রশস্ত নয়, খুব ছোট। শেষমেষ সড়কের উপর পানি জমে থাকা ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।

ফলে, এক পসলা বৃষ্টিতেই সপ্তাহজুড়ে রাস্তার উপর জমে থাকে পানি। এই পানিতেই রাস্তার প্রলেপ উঠে যায়, খানা-খন্দকে ভরে যায়, তৈরী হয় সড়কে মরণ ফাঁদ।

এই ফাঁদেই আছে যানবাহন উল্টে প্রাণহানী ঘটার সম্ভাবনা। সড়কের এই বেহাল অবস্থায় যান চলাচলেও ধীরগতি, এতে করে শহরে যানজটও বাড়ছে।

প্রতিবছর বর্ষা মৌসুম এলেই পৌরবাসীর চোখে এই দৃশ্য ফুটে উঠে। এছাড়াও রাস্তার দু পাশে আছে আবর্জনার স্তুপ। সব মিলিয়ে মানুষের দূর্ভোগ সীমা ছাড়িয়েছে।

যখন বৃষ্টির পানিতে রাস্তা ডুবে যায়, তখন দেখি, একদল লোক স্ল্যাব তোলে ড্রেন পরিস্কারের চেষ্টা চালায়।

আমাদের চাঁটগাইয়া কথায়  একটা প্রবাদ আছে- “যেঁত্তে ফুনর গুরাত গু আইস্স্যে এঁত্তে লুড়া লই টানাটানি”। অর্থাৎ  যখন বিপদ আসন্ন  তখনই বদনা নিয়ে টানাটানি।

এসব আর আমাদের গেল না। সঠিক সময়ে সঠিক কাজটা আমরা করতে পারি না। যখন করি তখন আর কিছুই করার থাকে না।

ক’দিন আগে টার্মিনাল থেকে টমটমের যাত্রী হয়ে কক্সবাজার শহরে ঢুকছিলাম। একই টমটমে দু’জন এনজিও কর্মীও ছিল। একজন ছেলে, একজন মেয়ে। ছেলেটির বয়স অানুমানিক ২৫ কিংবা ২৬ বছর হতে পারে।

এদিকে, আলীর জাহাল ফেলে রুমালিয়ারছড়া প্রবেশ করতেই রাস্তার বাম পাশে চোখে পড়ল আবর্জনার বিশাল স্তুপ।

মেয়েটি ছেলে বন্ধুকে বলে, দেখ কতগুলো আবর্জনা, দুর্গন্ধে থাকা যায় না।
ছেলেটি আক্ষেপ করে বলে, এগুলো সেই ছোটকাল থেকেই দেখে আসছি, কোন পরিবর্তন নেই।

আমার কাছে ভাবতে অবাক লাগে, ছেলেটি তার শৈশবে, রাস্তার পাশে যে আবর্জনা দেখে এসেছে, তা তার দীর্ঘ ২৬ বছরের জীবনেও সমাধান পায়নি।

একটু ভাবুন, নাগরিক হিসেবে আমরা কোন স্তরে আছি? কারা আমাদের শাসন করে? কাদের কাছে দিয়েছি আমাদের নেতৃত্ব?

জলাবদ্ধতা নিরসনে ৩টা  উপায় এ মূহুর্তে আমার মাথায় কাজ করছে…
১. শহরের সড়ক ও ড্রেন সমউচ্চতায় নিয়ে আসতে হবে।
২. ড্রেনের উপর বসাতে হবে লোহার নেট স্ল্যাব ।
৩. ছোট ড্রেনগুলো প্রশস্ত করতে হবে।
এ  তিন উপায় কার্যকর হলেই, বৃষ্টির পানি সড়কের দু’পাশ দিয়ে খুব সহজেই ড্রেইনে নেমে যাবে। এতেই শহর হবে জলাবদ্ধতামুক্ত।

-ছানাউল করিম, গণমাধ্যম কর্মী