এম বশির উল্লাহ, মহেশখালী:

মহেশখালীতে কমিউনিটি জনসচেতনা মুলক এক সভায় বাল্য বিবাহের বিভিন্ন ক্ষতিকারক দিক তুলে ধরা হয়েছে। তাদের মতে ‘‘শুধু যে দরিদ্র বা অল্প শিক্ষিত পরিবারে বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটে, তা নয় এমনকি শহরে অনেক শিক্ষিত পরিবারেও বাল্যবিবাহের ঘটনা ঘটে অনেক সময় দেখা যায়। বিদেশে পড়ালেখা করে এমন ছেলে পেলে মেয়ের বয়স বিবেচনা না করেই তাকে বিয়ে দিয়ে দেয় অভিভাবকেরা । দারিদ্র্য ও নিরাপত্তাহীনতা অনেক সামাজিক সমস্যার কারণ শুধু এগুলোই নয় অল্প বয়সে বিয়ে দেবার পেছনে মেয়েদের নিরাপত্তাহীনতাকে অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবেও মনে করেন বক্তারা। তাঁদের মতে, গ্রামের নারীর জন্য নিরাপত্তাহীনতা একটি বড় সমস্যা তাই, কোনো রকম ঝামেলা থেকে বাঁচতে মেয়েদেরকে অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেয় বাবা-মায়েরা ।

মহেশখালী থানা প্রশানের আয়োজনে বড় মহেশখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের হল রুমে সোমাবার (১৭জুন) সকাল ১১টায় জনসচেতনা মুলক সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন মহেশখালী থানার অফিসার ইনর্চাজ প্রভাব চন্দ্র ধর।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কমিউনিটি পুলিশের সভাপতি ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি এম আজিজুর রহমান, উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মর্কাতা উম্মে সুরাইয়া আমিন, উপজেলা ক্বাজী সমিতির পক্ষে কাজি¦ এস এম মোরতাজ আহমদ, এনজিও সংস্থা ইউএনডিপির প্রতিনিধি সুবাল চাকমা, বড় মহেশখালীর ইউপি সদস্য দলিলুর রহমান, বড় মহেশখালী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হুমায়ুন কবির আজাদ, আইল্যান্ড হাই স্কুলের শিক্ষক কবির হোসাইন, বালিকা বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী সাবিনা ইয়াছমিন ও ইপসার প্রতিনিধি আজিজ সিকদার প্রমুখ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন এএসআই জুয়েল দে, জহিরুল হক বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক প্রতিনিধি ও বড় মহেশখালী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩ শতাধিক ছাত্রী।

সভায় বক্তারা বলেন ‘‘বিয়েটা হলো একটা মেয়ের সামাজিক টিকিট কারণ অবিবাহিত মেয়ের কোনো রকম অঘটন ঘটলে তার বিয়ে হওয়া নিয়ে বিরাট ঝামেলা হয় । দেশে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন থাকলেও, আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে বাবা-মায়েরা অনেক সময় কাজিদেরকে মেয়ের বয়স বাড়িয়ে বলেন ফলে, প্রকৃত ১৮ বছর না হলেও কাগজে বাড়িয়ে লেখা হয় কনের বয়স কৈশোরে একটি মেয়ের যখন স্কুলে যাবার বয়স, তখনই তাকে বসতে হচ্ছে বিয়ের পিঁড়িতে নিজের জীবনকে চিনতে না চিনতেই, স্বপ্নগুলো সাজাতে না সাজাতেই বউ সেজে সে যাচ্ছে শ্বশুর বাড়ি শারীরিক ও মানসিকভাবে উপযুক্ত হবার আগেই বাল্যবিবাহ মেয়েটির কাঁধে সংসারের যে ভার চাপায় তা বহনে সে কতোটা সক্ষম না ফলে অনেকেই অল্প বয়সে আত্মহত্যার পথ ও বেচে নেয়। মহেশখালীতে বাল্যবিবাহের ব্যাধি থেকে মুক্তি পেতে হলে, একই সঙ্গে গণমাধ্যমে প্রচার কার্য, জনমত গঠন, শিক্ষার প্রসার এবং আইন প্রয়োগের ব্যাপারে সরকারকে কিছু বিশেষ পদক্ষেপ নিতে হবে বলে মনে করেন ।