মনছুর আলম নানক

সকাল থেকেই বাবাকে নিয়ে কিছু লিখার চেষ্টা করছি, আজ বাবা দিবস, তাই অনেকেই বাবা নিয়ে আজ অনেক কিছুই লিখছে, আমার বাবা ছিলেন এলাকার একসময়ের সফল ব্যবসায়ী, ছিলেন একজন ভালো মনের মানুষও। বাবার পরিবারটি অনেক স্বাবলম্বীও ছিলেন, কিন্তু কালের পরিক্রমায় আমাদের পরিবারের উপর অনেককিছুই বয়ে যায়! অসহায় ও দুঃচিন্তায় পড়ে যায় বাবা, পারিবারিক ব্যয় যোগান দিতে তখন ছাত্রাবস্থায় বাবার পাশে থেকে অনেক সহযোগিতা করেছি, বাবার পাশাপাশি মাও অামাকে নিয়ে অনেক খুশি ও সন্তুষ্ট। কারণ পড়ুয়া ছেলেটি নির্দ্বিধায় বাবাকে সাপোর্ট দিচ্ছে।
আজ দুইমাস যাবৎ বাবা মৃত্যুর অপেক্ষায় বিছানায় কাতরাচ্ছেন! প্যারালাইজডে আক্রান্ত! মধ্যবিত্ত পরিবারের হতভাগা এই বড়ছেলেটি এখনোই বাবাকে উন্নত চিকিৎসার ছোঁয়া দিতে পারেনি!! কেনই বা পারবে বাবা তোমার ছেলে তো এখন কট্টর ছাত্রলীগ। সংগঠন নিয়ে ব্যস্ত সবসময়! ছোটখাটো ব্যবসায় যা কিছু আয় হয় তা দিয়ে ছোট ভাইবোনদের পড়ালেখায় ও পারিবারিক ব্যয় যোগান দিতে হিমশিম খেতে হয়! পারিবারিক আর্থিক যোগানের পাশাপাশি সংগঠনও চালিয়ে নিচ্ছি! এরই মাঝে বাবার প্যারাইলাজড! আমাদের পরিবারের সবার কলিজা মোচড় দিয়ে উঠে। যতটুকু সম্ভব বাবাকে প্রাথমিক চিকিৎসা করিয়েছি, তেমন উন্নতি হয়নি! এরপরও সবার সাথে হাসিমুখে স্বাভাবিক থাকি, কাউকে বুঝতে দিই না। অনলাইন/অফলাইনেও তেমন কিছু বলা হয়না, কারণ কেউ যদি আবার অন্যভাবে নেয়?! মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা কাউকে কিছু বুঝাতেও পারেনা! সহ্য করতেও পারেনা! তারপরও মনোবল শক্ত রাখি বাবাকে সুস্থ করে তুলবো, আমাদের কাছ থেকে এত তাড়াতাড়ি বিদায় নিতে দিবোনা। জানি, বাবাকে বিদায় দিয়ে কোন এক বাবা দিবসে বাবাকে নিয়ে লম্বা কলাম লিখতে হবে!
বাবা, তোমার ছেলে সেই আগের মত তোমার জন্য কিছু করতে পারেনা বলে তুমি ভেঙে পড়োনা। মহান আল্লাহর অসীম রহমতে তোমাকে সুস্থ করে তুলবোই।
আমি সকলের কাছে আমার বাবার জন্য দোয়া প্রত্যাশী।

বাবা-মায়ের প্রতি ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা দেখাতে কোন দিবসের প্রয়োজন হয়না, বছরের ৩৬৫ দিনই বাবা-মায়ের প্রতি ও ভালোবাসা ও শ্রদ্ধা। তারপরও আজকে অনেক কিছুই না লিখার মাঝেও বাবাকে নিয়ে কিছু লিখলাম।
পৃথিবীর সকল বাবা-মা ভালো থাকুক, সুস্থ থাকুক আর সন্তানদের কলিজা ঠান্ডা থাকুক।

মনছুর আলম নানক,মগনামা, পেকুয়া, কক্সবাজার। ১৬-০৬-২০১৯ খ্রিঃ